কলকাতার কী হবে?
চিন্তা বাড়িয়েছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। গত বছর ২৭ ডিসেম্বর সেখানকার বিজ্ঞানীদের চোখে পড়েছিল নতুন একটি গ্রহাণু। নাম রাখা হয় ‘২০২৪ওয়াইআর৪’। আবিষ্কার হওয়ার পর থেকেই গ্রহাণুটির গতিপথে নজর রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা। জানা যাচ্ছে, ক্রমশ পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে সে এবং ২০৩২ সালে এই গ্রহে আছড়ে পড়তে পারে। এই বিপদের আশঙ্কা অবশ্য খুব কম, ৩.১ শতাংশ। তবে পুরোপুরি উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গ্রহাণুটি যদি পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে, তা হলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে গোটা একটা শহর। আর এই বিপদ-তালিকায় রয়েছে কলকাতা, মুম্বই, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাও।
নাসা জনিয়েছে, বিপদের গতিপথ বিস্তৃত রয়েছে পূর্ব প্রশান্তমহাসাগরীয় এলাকা, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর অংশ, অতলান্তিক মহাসাগর, আফ্রিকা, আরব সাগর ও দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে। বিশ্বের জনবহুল কতগুলি শহর নিয়ে বিশেষ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এগুলি হল— মুম্বই, কলকাতা, ঢাকা, বাগোটা, আবিদজান, লাগোস ও খার্তুম।
নাসা জানিয়েছে, পৃথিবীতে বসানো ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্টেরয়েড ওয়ার্নিং নেটওয়ার্ক’-এর দূরবীক্ষণ যন্ত্র থেকে গ্রহাণুটিকে দেখতে পাওয়া যাবে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। তার পর ধীরে ধীরে দৃষ্টির বাইরে চলে যাবে সে। আবার দেখতে পাওয়া যাবে ২০২৮ সালের জুন মাসে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের আনুমানিক হিসেব অনুযায়ী, গ্রহাণুটির আকার ১৩০ ফুট থেকে ৩০০ ফুট চওড়া। তার ঔজ্জ্বল্য থেকে এই হিসেব করা হয়েছে। আরও কিছু বিষয় অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। যেমন, এটিতে কোনও বিরল ধাতু নেই। গঠন সাধারণত যেমন হয়, তেমনই। বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের ধারণা, পৃথিবীর কাছাকাছি আসার আগেই মাঝপথে ফেটে যাবে এটি। যা ৮ মেগাটন টিএনটি বিস্ফোরণ ঘটার সমান। জাপানের হিরোশিমায় যে পরমাণু বোমা পড়েছিল, তার চেয়ে ৫০০ গুণ শক্তিশালী। এর এই বিপুল শক্তিই চিন্তা বাড়িয়েছে। প্রায় ৬ কোটি ৬০ লক্ষ বছর আগে একটি গ্রহাণু পৃথিবীতে এসে আছড়ে পড়ায় নির্বংশ হয়েছিল ডাইনোসরেরা। এটি তার মতো শক্তিধর নয়। তবে একটা শহরকে নিশ্চিহ্ন করতে পারে এ। বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন, ‘সিটি-কিলার’।
নাসা অবশ্য আশাবাদী। তাদের বক্তব্য, আগেও এমন অনেক মহাজাগতিক বস্তু ভয় দেখিয়েছিল। তার পর বিপদ-তালিকা থেকে নাম কাটা পড়ে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)