Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চাঁদে রাত, বিক্রমের ছবি নিয়ে ধোঁয়াশা

নাসা জানিয়েছিল, ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের অরবিটার বিক্রমের অবতরণস্থলের উপরে আসবে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১৪
Share: Save:

আক্ষরিক অর্থেই যেন আঁধার ঘনাল!

এক পক্ষকাল পেরিয়ে বৃহস্পতিবার রাত নেমেছে চাঁদে। তার সঙ্গে সঙ্গেই আপাতত শেষ ভারতের চন্দ্রদূত ‘বিক্রম’-কে খুঁজে পাওয়ার আশা। গত মঙ্গলবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’ তার ‘লুনার রিকনিস্যান্স অরবিটার’ দিয়ে বিক্রমের ছবি তোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই চেষ্টা সফল হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি। টানা ১৪ দিন ধরে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র বিজ্ঞানীরাও। কিন্তু সাড়া মেলেনি।

নাসা জানিয়েছিল, ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের অরবিটার বিক্রমের অবতরণস্থলের উপরে আসবে। সে সময় ছবি তোলা হবে। বৃহস্পতিবার একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যম নাসার এক কর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, কিছু ছবি তোলা হয়েছে। কিন্তু তাতে বিক্রমের ছবি এসেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তা ছাড়া অন্য একটি সূত্রের দাবি, মার্কিন অরবিটার যত ক্ষণে বিক্রমের অবতরণস্থলের উপরে পৌঁছেছিল, তত ক্ষণে আলো কমে এসেছিল। তাতে স্পষ্ট ছবি আসবে কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। ফলে বিক্রমের ছবি পাওয়ার আশাও ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

মহাকাশবিজ্ঞানীদের অনেকের মতে, বিক্রমের শরীরে শক্তি জোগাত সূর্যের আলো। রাত নামলে সেই শক্তির উৎস থাকবে না। রাতে চাঁদের তাপমাত্রা শূন্যের ১৮০ ডিগ্রি নীচে নামে। ওই ঠান্ডায় বিক্রমের শরীরে সৌরপ্যানেল কাজ করবে কি না, সেটাও প্রশ্ন। ইসরো আগে জানিয়েছিল, বিক্রম এবং তার শরীরের ভিতরে থাকা রোভার ‘প্রজ্ঞান’-কে ১৪ দিন কাজ করার জন্য পাঠানো হয়েছিল। অর্থাৎ দু’জনেরই কর্মজীবন শেষ।

গত ২২ জুলাই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযান-২ উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। তার তিনটি অংশ ছিল—অরবিটার, ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান। ২ সেপ্টেম্বর অরবিটার থেকে বিক্রম বিচ্ছিন্ন হয়। তার শরীরের ভিতরে ছিল প্রজ্ঞান। ৬ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে বিক্রমের পালকের মতো অবতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু অবতরণের শেষ ধাপে বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

তার পর থেকে আর বিক্রমের খোঁজ মেলেনি। অরবিটার বিক্রমের একটি তাপচিত্রের ছবি পাঠিয়েছিল। কিন্তু তা থেকে চন্দ্রপৃষ্ঠে আছড়ে পড়া বিক্রমের অবস্থা বোঝা যায়নি। বিজ্ঞানীদের অনেকের ধারণা, অবতরণের শেষ ধাপে গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না-পেরে মুখ থুবড়ে পড়েছেবিক্রম। মুখ থুবড়ে পড়ার ইঙ্গিত মিলেছে ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবনের কথাতেও। তিনিও বলেছিলেন, ‘‘গতি সামলাতে না-পেরে বিক্রম সম্ভবত আছড়ে পড়েছে।’’

তবে ইসরো সূত্রের দাবি, এই অভিযানের মূল অংশ চন্দ্রযানের অরবিটারটি। সেটি ঠিকঠাক কাজ করছে। আগামী সময়ে দিনের বেলা বিক্রমের দেখা পেলে সে ফের হারানো ‘সঙ্গীর’ ছবি তুলতেও পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandrayaan 2 Vikram Lander Moon NASA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE