Advertisement
E-Paper

মঙ্গলের চাঁদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকে বাঁচল নাসার স্যাটেলাইট!

আরেকটা ‘গাইসাল’ হয়ে যেতে পারতো ‘লাল গ্রহে’র অচেনা মুলুকে! বড়সড় অ্যাক্সিডেন্ট ঘটতে যাচ্ছিল মঙ্গলে! হতে পারত বড়সড় ‘রক্তপাত’! থরথর করে কেঁপে উঠতে চলেছিল গোটা মঙ্গল-মুলুক! ঘোর অমঙ্গল ঘটতে চলেছিল এই ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের পড়শি গ্রহ মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’-এর!

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ১৭:০১
‘ফোবস ও মাভেন।

‘ফোবস ও মাভেন।

আরেকটা ‘গাইসাল’ হয়ে যেতে পারতো লাল গ্রহের অচেনা মুলুকে! বড়সড় অ্যাক্সিডেন্ট ঘটতে যাচ্ছিল মঙ্গলে! হতে পারত বড়সড় ‘রক্তপাত’!

থরথর করে কেঁপে উঠতে চলেছিল গোটা মঙ্গল-মুলুক! ঘোর অমঙ্গল ঘটতে চলেছিল এই ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের পড়শি গ্রহ মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’-এর! চুরচুরিয়ে ভেঙে যেতে পারতো নাসার মহাকাশযান ‘মাভেন’!

অল্পের জন্য বেঁচে গেল পৃথিবীও, হঠাৎ করে তার চত্বরে ঢুকে পড়া এক অজানা, অচেনা ‘হানাদার’ গ্রহাণুর (অ্যাস্টারয়েড) আচমকা আঘাত থেকে! ১০ ফুট লম্বা ওই গ্রহাণুটির ঘরবাড়ি সম্পর্কে এখনও তেমন কিছুই জানা নেই বিজ্ঞানীদের।

শুক্রবার গভীর রাতের ঘটনা, মহাকাশে। মঙ্গল-মুলুকে। জানানো হয়েছে নাসার তরফে।

যেন সেই কথাটাই সত্যি হল, রাখে হরি তো মারে কে?

সাত সেকেন্ডের এ দিক ও দিক হলেই মঙ্গলের কক্ষপথে পাক মারা নাসার মহাকাশযান (অরবিটার স্যাটেলাইট) মাভেন (মার্স অ্যাটমস্ফিয়ার অ্যান্ড ভোলাটাইল এভোলিউশন)-এর সঙ্গে একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা লাগত মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’-এর। তাতে নাসার মহাকাশযানটি চুরচুর করে ভেঙে যেত। আর তার টুকরোটাকরাগুলি মহাকাশে ভেসে বেড়াত লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি বছর ধরে। আর যে কারণে পাখির ধাক্কায় বিমানের ক্ষতি হয় বেশি, সেই একই কারণে অনেক অনেক বেশি ক্ষতি হত মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’-এর।


মাঝখানে মঙ্গল। বাঁ দিকে তার চাঁদ ‘ফোবস’

মঙ্গলের দিকে চোখ রেখে লাল গ্রহকে পাক মারার সময় আগে থেকে কেউ কাউকে দেখতে পায়নি। মঙ্গলকে পাক মারতে মারতে যে-রুটে আসার কথা তার চাঁদের, সেই রুটেই আসছিল ‘ফোবস’। তার আবর্তনের গতিতেও ঘটেনি কোনও রদবদল। কিন্তু লাল গ্রহকে পাক মারতে মারতে অঙ্কের হিসাবে একটু ভুলচুক হয়ে গিয়েছিল নাসার মহাকাশযান ‘মাভেন’-এর কম্পিউটার আর পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির (জেপিএল) গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের অভ্যন্তরীণ ও রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেমে।

ভাগ্যিস, মহাকাশে সময় আমাদের থেকে এগিয়ে থাকে অনেক! তাই ৬ মার্চ, আগামী সোমবার যে সবচেয়ে বড় মহাকাশ-দুর্ঘটনাটি ঘটতে চলেছিল মঙ্গলের রাজ্যে, তার হাত থেকে যাকে বলে চুলের দূরত্বে রেহাই পেয়ে গেল নাসার মহাকাশযান ‘মাভেন’ আর মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’।

আরও পড়ুন- এই ভারতীয় না থাকলে নতুন ৭ ‘পৃথিবী’র হদিশ মিলত কি?

গতকাল, শুক্রবার ৩ মার্চ পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসান ল্যাবরেটরির গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুমের বিজ্ঞানীরা হিসেব কষে দেখেন, ‘মঙ্গলে গন্ডগোল’। ভয়ঙ্কর মহাকাশ-দুর্ঘটনার মুখে পড়তে চলেছে ‘মাভেন’ আর ‘ফোবস’। একেবারে মুখোমুখি ধাক্কা (হেড-অন কলিশন) লাগতে চলেছে ‘পার্থিব প্রতিনিধি’র সঙ্গে মহাজাগতিক বস্তুর। তাতে ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়ে যেত ৬৭ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি খরচে বানানো নাসার মহাকাশযানটির। নাসার গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুম সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়, রুট বদলাতে হবে। গতি বাড়িয়ে দিতে হবে মাভেন’-এর। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। মহাকাশের যে তর সয় না! তাই সঙ্গে সঙ্গে মাভেন-এর গতিবেগ বাড়িয়ে দেওয়া হয় সেকেন্ডে প্রায় আধ মিটার। ওই গতিবেগ বাড়ানোর ফলে সোমবার মঙ্গলের চাঁদ ‘ফোবস’-এর থেকে মাত্র আড়াই মিনিটের (মহাকাশ দূরত্ব) দূরত্বে থাকবে নাসার মহাকাশযান ‘মাভেন’। মহাকাশযানের গতিবেগ না বাড়ানো হলে দু’টির মধ্যে দূরত্ব থাকতো সাকুল্যে সাত সেকেন্ডের। ফলে ‘ফোবস’-এর জোরালো অভিকর্য বলের টান হুশ করে তার দিকে টেনে নিতে পারত মাভেন-কে। আর তাকে আছড়ে ফেলতে পারতো মঙ্গলের চাঁদের মাটিতে। এই মুহূর্তে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার মিলিয়ে নাসা, ইসরো ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ বা ‘এসা) মোট ৬টি মহাকাশযান রয়েছে ‘মঙ্গলের পাড়া’য়।

ছবি সৌজন্যে: নাসা

MAVEN Mars NASA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy