Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

‘ফেলুদা’র পর ‘রে’, ১ ঘণ্টায় করোনার নতুন রূপ চেনাবে এই উদ্ভাবন

ফের জয়জয়কার ভারতীয় বিজ্ঞানীদের। সিএসআইআর-এর এই পদ্ধতি ভবিষ্যতেও কার্যকর হবে বলে দাবি।

ফাইল ছবি।

ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:২৫
Share: Save:

প্রথমে চরিত্র। তার পর সেই চরিত্রের স্রষ্টা।

‘ফেলুদা’-র পর এ বার ‘রে’। আবার জয়জয়কার ভারতীয় বিজ্ঞানীদের। করোনা মোকাবিলায়।

ভারতের ‘কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)’-এর বিজ্ঞানীরা এমন একটি পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছেন যার মাধ্যমে করোনা রোগী ও সন্দেহভাজনদের রক্তের নমুনায় থাকা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই পরীক্ষা করে বলে দেওয়া যাবে করোনাভাইরাস ‘সার্স-কভ-২’-এর নতুন রূপটিতে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কি না। বাজারে টিকা আসার খবরে কিছুটা স্বস্তির মধ্যেই করোনার এই নতুন রূপটির আক্রমণাত্মক ক্ষমতা আমাদের উদ্বেগ বাড়াতে শুরু করে দিয়েছিল। গবেষণাপত্রটি সবে অনলাইন হয়েছে। এখনও তা সংশ্লিষ্ট মহলের বিশেষজ্ঞরা যাচাই (পিয়ার রিভিউ) করে দেখেননি।

ভারতীয় বিজ্ঞানীদের এই সদ্য উদ্ভাবিত পদ্ধতিটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘রে’। যার পুরো নাম- ‘র‌্যাপিড ভেরিয়্যান্ট অ্যাসে’। করোনাভাইরাসের নতুন রূপে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কি না জানতে এর আগে ব্রিটেনে যে পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছিল তাতে ফলাফল জানতে সময় লাগত কম করে ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা। ফলে, দেড় থেকে দু’দিনের কাজটা এক ঘণ্টার মধ্যেই এ বার করা যাবে নিখুঁত ভাবে।

এর আগে অতিমারির ‘পিক পিরিয়ড’-এ, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে এ দেশে করোনা রোগীদের শনাক্ত করতে ‘অস্কার’ বিজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের সেই বিখ্যাত গোয়েন্দা কাহিনীর মুখ্য চরিত্রের জন্ম দিয়েছিলেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। ‘ফেলুদা’। যার মাধ্যমে অনেক সহজে জানা সম্ভব হচ্ছিল কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন কি না বা হলেও তাঁরা উপসর্গহীন কি না।

এ বার এল ‘রে’। বিখ্যাত গোয়েন্দা কাহিনীর মুখ্য চরিত্রের স্রষ্টা। সত্যজিৎ রায় বিদেশে ‘রে’ নামেই বিখ্যাত ছিলেন।

সিএসআইআর-এর যে গবেষকদল ‘ফেলুদা’-র জন্ম দিয়েছিলেন তাঁদেরই উদ্ভাবন এই ‘রে’।

সিএসআইআর-এর তরফে জানানো হয়েছে ফেলুদার মতোই রে-ও কাগজের স্ট্রিপের উপর পরীক্ষা। যেটা করতে লাগে বিশেষ একটি প্রোটিন। ‘সিএএস-৯’। অথবা, ‘ক্যাস-৯’। করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি যদি করোনা রোগী বা সন্দেহভাজনদের রক্তের নমুনায় থাকা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সে থাকে তা হলেই এই ক্যাস-৯ প্রোটিনটি তা বুঝতে পারে। আর সেই জিনোমের সেই অংশে গিয়ে সেই নতুন রূপটিকে বেঁধে ফেলে। তাকে আর নড়াচড়া করতে দেয় না। ফলে, কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে করোনাভাইরাসের নতুন রূপটি। এই রূপটি না থাকলে ভাইরাসের জিনোমের সেই অংশে আর আটকে যাবে না প্রোটিনটি। ফলে বুঝতে হবে করোনা রোগী বা সন্দেহভাজনরা অন্তত এই নতুন রূপে আক্রান্ত হননি।

‘ফেলুদা’র চেয়েও এই ‘রে’ আরও ধুরন্ধর গোয়েন্দা, জানাচ্ছেন গবেষকরা। তাঁদের দাবি, আগামী দিনে করোনাভাইরাসের ফের মিউটেশন হতে পারে। তাতে তাদের নতুন নতুন রূপ বেরিয়ে আসতেই পারে। তারা আরও বেশি আক্রমণাত্মক হতে পারে। ‘রে’ সেই ভবিষ্যতের আরও ভয়ঙ্কর হানাদারদেরও চিনতে, বুঝতে আর তাঁদের বেঁধে ফেলে অবশ করে দিতে পারবে, এমনটাই দাবি সিএসআইআর-এর গবেষকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

feluda COVID-19 Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE