Advertisement
E-Paper

গবেষণাপত্র ছাপবেন? সতর্ক হোন! হাজারেরও বেশি ভুয়ো ‘সায়েন্স জার্নাল’ ধরে ফেলল এআই

সম্প্রতি আমেরিকার কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক ‘চ্যাটজিপিটি’র মতো একটি এআই মডেল বানিয়েছেন। সেই মডেলই ধরে ফেলেছে অন্তত ১,৪০০টি ভুয়ো ‘সায়েন্স জার্নাল’।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৫ ২০:৪৬

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

দুর্নীতি-প্রতারণাচক্র ঢুকে পড়ল বিজ্ঞান জগতেও!

ইন্টারনেট জুড়ে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে হাজার হাজার ভুয়ো ‘সায়েন্স জার্নাল’। তারই ফাঁদে পড়ছেন তরুণ গবেষকেরা। তাঁদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে গবেষণাপত্র ছাপা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু বিজ্ঞানী মহলে তা আদৌ গ্রহণযোগ্য হল কি না, সেই পর্যালোচনা (পিয়ার রিভিউ) হচ্ছে না। এমন হাজারেরও বেশি ভুয়ো ‘সায়েন্স জার্নাল’ ধরে ফেলল এআই।

সম্প্রতি আমেরিকার কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক ‘চ্যাটজিপিটি’র মতো একটি এআই মডেল বানিয়েছেন। সেই মডেলই ধরে ফেলেছে অন্তত ১,৪০০টি ভুয়ো ‘সায়েন্স জার্নাল’।

এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড্যানিয়েল অ্যাকুনা। তিনি বলেন, ‘‘তরুণ গবেষকেরা সব সময়ে চান তাঁদের গবেষণাপত্রও ছাপুক কোনও জার্নালে। এরই সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকেরা। একটা ভুয়ো জার্নাল ধরা পড়লে আবার একটি গজিয়ে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে নাম বদলে যায়। বদলে যায় ওয়েবসাইটও।’’

বিভিন্ন জার্নালে নিজেদের গবেষণাপত্র প্রথমে ছাপান তরুণ গবেষকেরা। ওই গবেষণা বিজ্ঞানী মহলে আলোড়ন ফেললে তাঁদের নামযশও হয়। কিন্তু তা তখনই সম্ভব, যখন সেই গবেষণাপত্রের ‘পিয়ার রিভিউ’ হবে। অর্থাৎ, অন্য গবেষকেরা সেই গবেষণাপত্র পড়ে জানাবেন, তা আদৌ গ্রহণযোগ্য কি না। এবং বেশ কিছু জার্নালে এই কাজের জন্য গবেষকের তরফ থেকে টাকা দিতে হয়।

এই ব্যবস্থাকে কেন্দ্র দুনিয়া জুড়ে রমরমিয়ে ব্যবসা চলে। ছোটখাটো সংস্থার হাত ধরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে বহু জার্নাল ওয়েবসাইট। সেই সব জার্নালের কোনওটি ভুয়ো কি না, তা নিয়ে এতকাল কাজ করে এসেছে ‘ডায়রেক্টরি অফ ওপেন অ্যাকসেস জার্নালস’ (ডিওএজি) নামে একটি সংস্থা। কোন জার্নালে পিয়ার রিভিউ ব্যবস্থা কেমন, তা যাচাই করেই ভুয়ো জার্নাল ধরে ডিওএজি। নতুন এআই মডেলটি তৈরি করতেও ডিওএজি-র তথ্যভান্ডার ব্যবহার করা হয়েছিল।

ড্যানিয়েলরা এআই মডেলটিকে ১৫,২০০টি জার্নাল পরীক্ষা করতে বলেছিল। সেইমতো পরীক্ষা করে ১,৪০০টিরও বেশি জার্নালকে ভুয়ো বলে চিহ্নিত করেছে ওই এআই। এই গবেষণার ফল ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ নামক জার্নালে প্রকাশ করেছেন কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা।

কিন্তু কী ভাবে ভুয়ো জার্নাল ধরল এআই? গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এআই মডেল জার্নাল ওয়েবসাইটের কয়েকটি বিষয় দেখে। এক, সেখানে অস্বাভাবিক হারে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় কি না। দুই, জার্নালের সম্পাদকমণ্ডলীতে বড় কোনও গবেষক রয়েছেন কি না। তিন, গবেষণাপত্রে কোথায় কী রকম ভুলভ্রান্তি রয়েছে।

যদিও এই এআই মডেল সাধারণের ব্যবহারের জন্য নয়। তবে এটি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে গবেষকদের। ড্যানিয়েল বলেন, ‘‘ভুয়ো জার্নাল ধরার জন্য এটিই শ্রেষ্ঠ উপায় নয়। এই কাজ কখনওই রোবটের ভরসায় ছাড়া যায় না। মানুষের সাহায্য লাগেই। তবে গোটা কাজটা অনেক সহজ করে দেবে এই এআই।’’

AI Journals
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy