Advertisement
E-Paper

সমকামিতা জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত? দ্বন্দ্বে বিজ্ঞানীরা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থশোর ইউনিভার্সিটির একদল গবেষকের দাবি, মানব শরীরে এমন জিনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যা সমকামিতার জন্য দায়ী। এই গবেষণাটি বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ প্রকাশিত হয়েছে গতকাল, অর্থাত্ ৭ ডিসেম্বর ২০১৭-তে ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৩:২০
সমকামিতা জিন নিয়ন্ত্রিত—দাবি করলেন নর্থশোর ইউনিভার্সিটির জিনতাত্ত্বিকেরা।

সমকামিতা জিন নিয়ন্ত্রিত—দাবি করলেন নর্থশোর ইউনিভার্সিটির জিনতাত্ত্বিকেরা।

সমকামিতা কি জিনের সঙ্গে কোনও ভাবে সম্পর্কিত? সমলিঙ্গে যৌন আকর্ষণ কি জিনের তারতম্যের কারণেই প্রকট হয়? নতুন একটি গবেষণার পর, আরও জোরালো ভাবে এই সব প্রশ্নের মুখোমুখি সারা বিশ্বের জিনতাত্ত্বিকেরা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থশোর ইউনিভার্সিটির একদল গবেষকের দাবি, মানব শরীরে এমন জিনের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে যা সমকামিতার জন্য দায়ী। এই গবেষণাটি বিজ্ঞান পত্রিকা ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ প্রকাশিত হয়েছে গতকাল, অর্থাত্ ৭ ডিসেম্বর ২০১৭-তে ।

নর্থশোর ইউনিভার্সিটির জিনতাত্ত্বিকেরা দু’হাজারেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক সমকামী পুরুষের ডিএনএ (জিন)-এর বৈশিষ্ট পরীক্ষা করে দেখেন। সমকামীদের ডিএনএ কোডের সঙ্গে, সমকামী নয় এমন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ডিএনএ কোডের তুল্যমুল্য বিচার করে এই বিজ্ঞানীরা বলছেন— সমকামীদের ক্ষেত্রে জিনের এমন কিছু তারতম্য বা বিন্যাস দেখা গিয়েছে যা সমকামী নয় এমন পুরুষদের মধ্যে নেই।

আরও পড়ুন:

৩৭ লক্ষ বছর আগের মানব-কঙ্কাল মিলল, এই প্রথম

পিৎজা বানিয়ে পার্টি হল মহাকাশে! এই প্রথম

আমাদের শারীরবৃত্তীয় সব বৈশিষ্টই এক বা একাধিক জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এর মধ্যে কিছু জিনের মুখ্য ভূমিকা থাকে যাদের বলে মার্কার (নির্দেশক)। এই গবেষকদের দাবি, সমকামী পুরুষদের ১৩ এবং ১৪ নম্বর ক্রোমোজোমের মধ্যে ওই মার্কার জিনের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে। ওই জিনই সমকামিতার জন্য দায়ী বলেই মত এই গবেষকদের। তবে গবেষণাটি প্রকাশ্যে আসার পরই নানা তর্কবিতর্ক শুরু হয়েছে বিশ্বের বিজ্ঞানী মহলে। অনেক গবেষকেরই স্পষ্ট মত— সমকামিতা কখনওই জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এবং আরও নানান কারণ এর জন্য দায়ী হতে পারে। এক দল ব্রিটিশ জিনতাত্ত্বিকদের মত— আরও অনেক, আরও বিশদে পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই কোনও জিনকে ‘গে জিন’ বলে চিহ্নিত করা সম্ভব। তাঁদের মতে, এই পরীক্ষা শুধু পুরুষদের উপরেই করা হয়েছে। মহিলাদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার ফল পৃথক হলেও হতে পারে।

গ্রাফিক্স: সৌভিক দেবনাথ।

সমকামিতা এবং জিনের সম্পর্ক নিয়ে পরীক্ষা এই প্রথম নয়। ১৯৯০ সালে প্রথম এই বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেন জিনতাত্ত্বিকেরা। ১৯৯৩ সালে আমেরিকার জিনতাত্ত্বিক ডিন হ্যামার কয়েকটি পরিবারের সমকামী পুরুষদের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দাবি করেন, সমকামিতা ‘এক্স ক্রোমোজোমের’ তারতম্যের কারণে হয়।

ফ্রান্সিস ক্রিক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং জিনতাত্ত্বিক রবিন লোভেল আবার এই বিষয়ে ভিন্ন মত দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপে জিনের ভূমিকা বোঝাতে এই পরীক্ষাটির গুরুত্ব রয়েছে। তবে যদি যৌন অনুভূতির প্রসঙ্গ আসে, সে ক্ষেত্রে আরও বিশদে পরীক্ষার প্রয়োজন আছে।’’ তাঁর মতে, জিনের তারতম্য মানেই কোনও মানুষ সমকামী হবেন কি না সেটা বোঝায় না। সমকামিতার জন্য কখনওই কোনও জিন দায়বদ্ধ হতে পারে না বলেই মত তাঁর। একই মত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির স্ট্যাটিস্টিকাল জেনেটিক্সের অধ্যাপক গিল ম্যাকভানের। তিনি বলেছেন, ‘‘যৌনতা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। পরিবেশ, অভিজ্ঞতা, সহজাত প্রবৃত্তি এবং কোনও ক্ষেত্রে শারীরিক গঠনের তারতম্যের কারণেও এর পরিবর্তন হওয়া সম্ভব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই পরীক্ষাটি ভবিষ্যতে তেমন ভাবে কার্যকরী হবে বলে আমি মনে করি না।’’

Gay Gene DNA Homosexuality Genetic Study Genomes ডিএনএ জিন সমকামী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy