Advertisement
E-Paper

মাথার বাইরে মগজ! দিব্যি রয়েছে এই ৭ মাসের শিশু

ডাক্তার বলেছিলেন, মাতৃজঠর থেকে বেরনোর পর পরই তার মৃত্যু হবে। কিন্তু মাথার বাইরে মগজ (ব্রেন) নিয়েই শিশুটি ডাক্তারদের অবাক করে দিয়ে ৭/৮ ঘণ্টা কাটিয়ে দিল। এমনকী, পার করে দিল ৭/৮ দিনও। এখন তার বয়স ঠিক ৮ মাস।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ১৮:০৯

ডাক্তার বলেছিলেন, মাতৃজঠর থেকে বেরনোর পর পরই তার মৃত্যু হবে।

আর মৃত্যু যদি না-ও হয়, তা হলে বেঁচে থাকবে স্থবির হয়ে, একটা ‘জড় পদার্থে’র মতো! যাকে আদতে বেঁচে থাকা বলে না।

তাই মাতৃগর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পর সদ্যোজাতের জন্য যা যা করা হয় হাসপাতাল, নার্সিংহোমে, এই শিশুটির ক্ষেত্রে তার কিছুই করা হয়নি।

কিন্তু মাথার বাইরে মগজ (ব্রেন) নিয়েই শিশুটি ডাক্তারদের অবাক করে দিয়ে ৭/৮ ঘণ্টা কাটিয়ে দিল। এমনকী, পার করে দিল ৭/৮ দিনও। এখন তার বয়স ঠিক ৮ মাস।

ওই ‘অবাক শিশু’টির জন্মের বেশ কিছু দিন আগেই তার বাবা, মা আলট্রাসোনোগ্রাফি করাতে গিয়ে জানতে পেরেছিলেন, যে আসছে, তার মাথাটা ঠিকঠাক ভাবে গড়ে ওঠেনি মাতৃজঠরে। আর তাই তার পক্ষে বেশি দিন বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

সে কথা শুনে খুবই মুষড়ে পড়েছিলেন শিশুটির মা সিয়েরা ইয়োডের আর বাবা ডাস্টিন। মা সিয়েরা ঠিক করেই ফেলেছিলেন, গর্ভপাত করিয়ে নেবেন। কিন্তু গর্ভপাতের আগের রাতে হঠাৎই মত বদলে ফেলেন সিয়েরা। ঠিক করেন, যে আসছে, সে যে ভাবেই আসুক, তার জন্ম দেবেন। তাকে পৃথিবীর আলো দেখাবেন। তার পর যা হয়, হোক!

গত বছরের ৩১ অক্টোবর ওহায়োর সুগারক্রিকে একটি হাসপাতালে জন্ম হয় ব্রেন্টলির। নাড়ি কাটার পর একটা সদ্যোজাতের জন্য যা যা করা হয় হাসপাতাল-নার্সিংহোমে, ব্রেন্টলির জন্য তার কিছুই করেননি সে দিন হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সরা। কারণ, তাঁরা সকলেই জানতেন, খুব বেশি হলে ৭/৮ ঘণ্টা। তার বেশি ক্ষণ তো আর বাঁচবে না ব্রেন্টলি। বরং ডাক্তার, নার্সরা মা, বাবা সিয়েরা আর ডাস্টিনকে বললেন, ‘‘বাড়ি নিয়ে যান। যত ক্ষণ বেঁচে থাকে, তত ক্ষণ বাড়িতেই থাকুক।’’ তাঁরা আরও একটা কাজ করে দিলেন। ব্রেন্টলির বাবা, মায়ের হাতে গুঁজে দিলেন ছোট্ট একটা চিরকূট। তাতে লেখা সমাধিক্ষেত্রের নামধাম। শিশুটির আয়ু ফুরিয়ে গেলে, কোথায় তাকে সমাধিস্থ করতে হবে, তার ঠিকানা। সদ্যোজাত শিশুদের সমাধিক্ষেত্র হিসেবে খুবই পরিচিত সেই জায়গাটা।

আরও পড়ুন- বছরের পর বছর ‘খাঁচায় আটক’ ১২ জন মেয়ে উদ্ধার

কিন্ত ৭/৮ ঘণ্টা কেটে গেল। তার পরেও মাথার বাইরে মগজ নিয়ে দিব্যি হাত-পা ছুঁড়ছিল ব্রেন্টলি। ওই ভাবে কেটে গেল সাত-আটটা দিনও। এমনকী, গড়িয়ে গেল কয়েকটা মাসও। তখন ডাস্টিন, সিয়েরার মনে আশার একটু ক্ষীণ আলো দেখা দিল। তা হলে কি বেঁচেই গেল তাঁদের ছোট্ট সোনা ব্রেন্টলি? ওই আশাতেই তখন তাঁরা ছোটাছুটি শুরু করলেন বড় বড় ডাক্তারদের কাছে। যাতে কোনও ভাবে বেরিয়ে থাকা মগজটা আবার ব্রেন্টলির মাথার ভেতর ঢুকিয়ে দেওয়া যায়।

কিন্তু সত্যি-সত্যিই তা যায় কি?


সার্জারির পর। হাসপাতালে ব্রেন্টলি।

শেষমেশ বস্টন চিলড্রেন্স হসপিটালের চিফ নিউরোসার্জেন মার্ক প্রোক্টর বললেন, ‘‘একটা উপায় রয়েছে। চেষ্টা করে দেখতে পারি। এই ব্যাপারটাকে বলে ‘এনসেফালোসেলি’। এর ফলে শিশু বেঁচে তাকলেও মানসিক বা শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে থাকতে পারে আজীবন। তার খিঁচুনি হতে পারে। পেশীগুলো তার ঠিক মতো না-ও গড়ে উঠতে পারে।’’

ওই নিউরোসার্জেন প্রোক্টরই শেষ পর্যন্ত সার্জারিটা করেছেন ব্রেন্টলির মাথায়। তার বাইরে বেরিয়ে থাকা মগজের অংশটাকে মাথার খুলি কেটে তার মধ্যে পুরে দিলেন। একেবারে ঠিক ভাবে, যেখানে সেটা থাকার কথা, তাকে বসিয়ে দিলেন সেই ভাবেই।

এখন দিব্যি রয়েছে ব্রেন্টলি। খেলাধুলো করছে। হাসছে, কাঁদছে। তার ছোট্ট ভাইকে চিমটি কাটছে। আর মা, বাবাকে আদর করছে।

The Amazing Story Of The Baby Born With His Brain Outside His Skull baby born with his brain outside his skull in us
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy