Advertisement
E-Paper

উষ্ণতার নিরিখে ষষ্ঠ স্থানে ২০১৮

উষ্ণায়নের ফলে সারা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কথা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা। সেই গড় বৃদ্ধি দু’ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছলেই চরমে উঠবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দাপট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পৌষ শেষ হতে না-হতেই পালাই পালাই করছে শীত। এমন সময়েই বার্তাটি রটে গেল ক্রমে! বছরশেষে ঠান্ডা যতই কাঁপুনি ধরাক, উষ্ণতার নিরিখে রেকর্ড গড়েছে ২০১৮ সাল। কেন্দ্রীয় ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের সচিব মাধবন রাজীবন বুধবার সকালেই টুইটারে লিখেছেন, ১৯০১ সাল থেকে হিসেব শুরু করলে উষ্ণতার নিরিখে ২০১৮ সাল থাকবে ষষ্ঠ স্থানে। এবং সেই সঙ্গে দেশে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগও।

এ দিন রাজীবনের দেওয়া একটি তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত এক বছরে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়েছে। এবং প্রাণহানিও হয়েছে তার প্রায় প্রতিটিতেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং প্রাণহানি, দু’টিই সব থেকে বেশি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ধুলোঝড়, বন্যা, শৈত্যপ্রবাহ, বজ্রপাত-সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ৫৯০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অতিবৃষ্টি ও বন্যায় মারা গিয়েছেন ১১৬ জন।

উষ্ণায়নের ফলে সারা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির কথা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা। সেই গড় বৃদ্ধি দু’ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছলেই চরমে উঠবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের দাপট। গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা ‘ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ’ (আইপিসিসি)-এর রিপোর্ট জানায়, গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি ছুঁয়ে ফেলেছে।

আরও পড়ুন: ইচ্ছেমতো ‘বিচার’ সোশ্যাল মিডিয়ায়

পরিবেশবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে প্রাক়ৃতিক দুর্যোগ বেড়েছে। ভারতের মতো ভৌগোলিক দিক থেকে বৈচিত্রময় দেশে তার নানান রূপ দেখা যাচ্ছে ও যাবে। এ দেশে কাশ্মীরে তুষারপাত দেখা গিয়েছে। রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশে দেখা গিয়েছে প্রাণঘাতী ধুলোর ঝড়। কেরল, তামিলনাড়ু, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গের মতো উপকূলীয় রাজ্যে অতিবৃষ্টি ও বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। রাজীবনও বলেন, ‘‘এই লাগাতার উষ্ণতম বছরের রেকর্ড এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সরাসরি বিশ্ব উষ্ণায়নকেই প্রমাণ করছে।’’ উষ্ণায়নের প্রভাব দেখা গিয়েছে সাগরেও। পরিবেশ সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধে গবেষকেরা লিখেছেন, এ বছর সমুদ্রের জলের উষ্ণতাও রেকর্ড গড়েছে। বছরের শেষে প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বেড়েছে অর্থাৎ ‘এল নিনো’ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এ বার ভারত মহাসাগর এলাকাতেও ঘূর্ণিঝড় হয়েছে নাগাড়ে। ভূবিজ্ঞান মন্ত্রকের বিজ্ঞানীরা বলছেন, বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের জলের তাপমাত্রা বেশি থাকাই এর অন্যতম কারণ।

শীতের খামখেয়ালি মেজাজের জন্য পশ্চিমি ঝঞ্ঝার চরিত্র বদলকেই মূলত দায়ী করছেন আবহবিজ্ঞানীরা। মৌসম ভবনের এক শীর্ষ কর্তার মতে, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলেই ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা বায়ু বা পশ্চিমি ঝঞ্ঝার চরিত্র বদলে যাচ্ছে। ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে শীতের ছন্দ। জাঁকিয়ে ঠান্ডা প়ড়ছে, তুষারপাত হচ্ছে। আবার অল্প কিছু দিন স্থায়ী হয়েই পাততাড়ি গোটাচ্ছে শীত। এ বারেও দেখা গিয়েছে সেই প্রবণতা।

নতুন প্রশ্ন তুলছে এল নিনো। যে-ভাবে সাগরজলের তাপমাত্রা ও দুর্যোগ বাড়ছে, তাতে চলতি বছরের গ্রীষ্ম কেমন চেহারা নেবে, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে আবহবিদ মহলে।

Global Warming Heatwave Weather Atmosphere
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy