Advertisement
E-Paper

গন্ডার রক্ষায় সেনার দাওয়াই বিশেষজ্ঞদের

গন্ডার হনন রুখতে, উত্তরবঙ্গের অরণ্যে সেনা প্রহরার প্রস্তাব দিলেন বিশেষজ্ঞরা। চোরাশিকার ঠেকাতে প্রতিবেশী নেপাল কিংবা পড়শি রাজ্য অসম বেশ কিছু দিন ধরেই জঙ্গলে কেন্দ্রীয় বাহিনী কিংবা সেনা মোতায়েন করেছে। বুধবার, জলদাপাড়ার মাদারিহাটে শুরু হয়েছে ‘এশিয়ান রাইনো মিট’। বন দফতরের সঙ্গে তিন দিনের ওই কর্মশালার আয়োজক ‘আরণ্যক’ নামে গুয়াহাটির একটি বেসরকারি সংস্থা। বনকর্তাদের সঙ্গে মাদারিহাটে ওই কর্মশালায় যোগ দিয়েছেন অসম এবং নেপালের গন্ডার বিশেষজ্ঞরা।

নিলয় দাস

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৩
মাদারিহাটে এশিয়ান রাইনো মিট

মাদারিহাটে এশিয়ান রাইনো মিট

গন্ডার হনন রুখতে, উত্তরবঙ্গের অরণ্যে সেনা প্রহরার প্রস্তাব দিলেন বিশেষজ্ঞরা। চোরাশিকার ঠেকাতে প্রতিবেশী নেপাল কিংবা পড়শি রাজ্য অসম বেশ কিছু দিন ধরেই জঙ্গলে কেন্দ্রীয় বাহিনী কিংবা সেনা মোতায়েন করেছে। বুধবার, জলদাপাড়ার মাদারিহাটে শুরু হয়েছে ‘এশিয়ান রাইনো মিট’। বন দফতরের সঙ্গে তিন দিনের ওই কর্মশালার আয়োজক ‘আরণ্যক’ নামে গুয়াহাটির একটি বেসরকারি সংস্থা। বনকর্তাদের সঙ্গে মাদারিহাটে ওই কর্মশালায় যোগ দিয়েছেন অসম এবং নেপালের গন্ডার বিশেষজ্ঞরা।

গত কয়েক বছরে জলদাপাড়া এবং গরুমারা জাতীয় উদ্যানে ক্রমান্বয়ে গন্ডার হননের পরে, এক শৃঙ্গ এশীয় গন্ডার বাঁচাতে ‘অসম লাইন’-এ হাঁটার প্রস্তাব দিচ্ছেন দেশের গন্ডার বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে, নেপাল ও অসমের সঙ্গে গন্ডার আদান-প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ‘ইন ব্রিডিং’ বা স্বগোত্রীয়দের মধ্যে ক্রমাগত মিলনের ফলে আগামী দিনে জিন ঘটিত সমস্যা দেখা দেবার সম্ভাবনা রয়েছে জলদাপাড়া বা গরুমারার গন্ডারদের।

গত দেড় বছরে গরুমারা ও জলদাপাড়ায় চোরাশিকারের বলি অন্তত ১১টি গন্ডার। নেপাল ও অসমে চোরাশিকারের দৌরাত্ম্যে থিতিয়ে এলেও এ বার চোরাশিকার বেড়েছে এ রাজ্যে। গত এক দশক ধরে চোরাশিকার বন্ধ থাকলেও পালাবাদলের পরে জঙ্গলের নিরাপত্তা ক্রমেই ঢিলেঢালা হয়ে পড়ায় শিকার বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উল্টো দিকে, অসম ও নেপালে চোরাশিকার মোকাবিলায় সেনা নামানোয় দুষ্কৃতীরা এখন তাদের ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে উত্তরের জঙ্গলগুলিকেই বেছে নিয়েছে।

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের এখানে সেনা নামানোর পরিস্থিতি হয়নি। কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র দেওয়া হবে সে জন্য প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।’’ কিন্তু তা যে নিছকই খাতায় কলমে তা বনকর্তাদের একাংশই মেনে নিয়েছেন।

১৯৮৪ সালে জলদাপাড়ার গন্ডারের সংখ্যা ছিল সাকুল্যে ১৪টি। বিপন্ন গন্ডার বাঁচাতে বনবস্তির বাসিন্দাদের কাজে লাগিয়ে এ ব্যাপারে অবশেষে সাফল্য মেলে। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেন বনকর্তারা। চোরাশিকার রুখতে তারাই বিপদের সময়ে পাশে দাঁড়াতে থাকেন বনকর্তাদের। যার ফলে গত কয়েক বছরে গন্ডারের সংখ্যা জলদাপাড়াতেই দুশো ছাড়িয়ে যায়। গরুমারাতেও সংখ্যাটি দাড়ায় পঞ্চাশ। তবে কিছু দিন ধরে বনবস্তির বাসিন্দারা ক্রমেই থেকে সে সম্পর্কের চিড় ধরেছে। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য়ে ট্রেজারি বিধি চালু হওয়ায় বনবস্তির বাসিন্দাদের আর বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যাচ্ছে না।

নেপালের প্রতিনিধিরা জানান, মাওবাদী কার্যকলাপের ফলে সে দেশে ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছিল গন্ডার শিকার। তবে শিকার রোধে সে দেশের সরকার কড়া আইন লাগু করে। সেনাবাহিনীকেও শিকার রোধে কাজে লাগানো হয়। অসমের বিশেষঞ্জরাও গন্ডার হনন রুখতে নেপালের মত সেনাবাহিনী-সহ টাস্ক-ফোর্স গড়ে নিরাপত্তা বাড়ায়। ২০২০ সালের মধ্যে কাজিরঙ্গা জাতীয় উদ্যানে গন্ডারের সংখ্যা তিন হাজারের লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়াই তাদের চ্যালেঞ্জ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy