রাতভর নিজের সন্তাককে বাঁচানোর চেষ্টার কসুর কম করেনি মা। মায়ের শুঁড় আঁকড়ে অবিরাম বাঁচার চেষ্টা সেও করে গিয়েছে সারা রাত। কিন্তু সিমেন্টের বাঁধানো গভীর চৌবাচ্চা থেকে তাকে তোলা যায়নি। দলের অন্যরাও এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু শেষতক মাথা নিচু করেই ফিরে যেতে হয়েছিল তাদের।
ভোর রাতে সার্চ লাইট ফেলে পটকা ফাটিয়ে হস্তিযূথকে ফিরিয়ে দিয়ে শাবক উদ্ধারে নেমেছিলেন বন কর্মীরা। বিন্নাগুড়ি এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার দিলীপ দাস চৌধুরী জানান, বনকর্মীরা জাল ফেলে শাবকটিকে টেনে আনেন পাড়ে। তারপর জঙ্গলের কিনারে তখনও দাঁড়িয়ে থাকা মায়ের দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন শাবকটিকে। মাস দুয়েক বয়সের শাবকটিও মায়ের দিকে ছুটে গিয়েছিল নিমেষে। দিলীপবাবু বলছেন, ‘‘মা-ও অপেক্ষায় ছিল। শাবকও মরিয়া হয়ে ছুটে গিয়েছিল। কিন্তু য়া আশঙ্কা করছিলাম তাই হল। লম্বা শুঁড় বাড়িয়ে সন্তানকে বার কয়েক শুঁকে মুখ ফেরাল মা।’’ বনকর্মীরা জানান, শাবকটি কাছে যেতেই মা বুঝে গিয়েছিল তার গায়ে ‘মানুষের গন্ধ’ লেগে গিয়েছে। আর চেনা নিয়মে তাই শাবককে ফিরিয়ে দিয়েছে মা। মা-হারা শাবকটি খিদের জ্বালায় ঘুরতে ঘুরতে এক সময়ে পৌঁছে গিয়েছিল রেতি জঙ্গলের লাগোয়া কারবালা বাগানে। সেখানে কয়েকজন শাবকটিকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ফের শাবকটিকে উদ্ধার করে তাড়িয়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যান বনকর্মীরা। তবে মা আর তাকে কাছে টেনে নেয়নি।
জলপাইগুড়ির ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, ‘‘আপাতত আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। মা শাবকটিকে পিরিয়ে নিলে বাল। না হলে অন্য ভাবে ভাবতে হবে।’’