Advertisement
E-Paper

হনুমানের তাণ্ডব চলছেই, রাস্তা অবরোধ বাসিন্দাদের

দু’মাস ধরে হনুমানের তাণ্ডব চলছে গোপালনগরের বারাকপুর ও কানপুর এলাকায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বন দফতর ধরতে পারেনি হনুমানটিকে। এ দিকে হনুমানের আক্রমণে জখমের সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে প্রায় একশো ত্রিশ ছুঁয়েছে। তার জেরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাই সোমবার সকাল দশটা থেকে আড়াই ঘণ্টা বনগাঁ-চাকদা সড়কের বারাকপুর মোড়টি অবরোধ করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০৩:০০
বনগাঁ-চাকদহ সড়কে বিক্ষোভ বারাকপুরের বাসিন্দাদের। —নিজস্ব চিত্র।

বনগাঁ-চাকদহ সড়কে বিক্ষোভ বারাকপুরের বাসিন্দাদের। —নিজস্ব চিত্র।

দু’মাস ধরে হনুমানের তাণ্ডব চলছে গোপালনগরের বারাকপুর ও কানপুর এলাকায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বন দফতর ধরতে পারেনি হনুমানটিকে। এ দিকে হনুমানের আক্রমণে জখমের সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে প্রায় একশো ত্রিশ ছুঁয়েছে। তার জেরে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাই সোমবার সকাল দশটা থেকে আড়াই ঘণ্টা বনগাঁ-চাকদা সড়কের বারাকপুর মোড়টি অবরোধ করেন। যতক্ষণ না হনুমানটি ধরা পড়ছে, ততক্ষণ অবরোধ তুলবেন না বলে দাবি করতে থাকেন তাঁরা। গোপালনগর থানার পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলতে ব্যর্থ হয়। তারপরে দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ঘটনাস্থলে যান বনগাঁর এসডিপিও মীর সহিদুল আলি ও মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁরা হনুমানটিকে ধরার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলা বন দফতরের ডিএফও ও জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। সমস্যা মেটাতে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে।”

বনগাঁ হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর জানান, জুন ও জুলাই মাসে গোপালনগর এলাকা থেকে হনুমানের কামড়ে জখম হয়ে হাসপাতালে এসেছেন ১২৮ জন। পর্যাপ্ত ভ্যাক্সিনও মজুত রাখা হয়েছে।

তবে এই মাসেও হনুমানের হামলায় জখম হয়েছেন বেশ ক’জন। কলকাতার পাটুলি থেকে গাড়ি নিয়ে রবিবার একটি বিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন জগন্নাথ হালদার। বারাকপুর মোড়ে গাড়ি থেকে মালপত্র নামানোর সময় হঠাৎই একটি হনুমান পিছন থেকে এসে তাঁর ডান হাতে কামড়ে দেয়। বনগাঁ হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন। শুক্রবার বিকেলে পটলে কীটনাশক ছড়াতে মাঠে গিয়েছিলেন কানাপুকুরের বাসিন্দা আনন্দ সুমা। হনুমান এসে পায়ে কামড়ে দেয় তাঁকে। তিনিও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ওই সময় একটি হনুমান এসে তার পায়ে কামড়ে দেয়। তিনি হাসপাতালে ভর্তি।

অথচ হনুমানের হাত থেকে রক্ষা পেতে কি না করেছেন বাসিন্দারা! লাঠি হাতে এলাকা পাহারা দিয়েছেন তাঁরা। কেউ লাঠি ছাড়া বেরনোর সাহস পাচ্ছেন না। ভয়ে ঘরের গ্রিলে তালা দিয়ে রাখছেন বাসিন্দারা। বন্ধ থাকছে বাড়ির দরজা-জানলাও। বন দফতরের পক্ষ থেকে হনুমান ধরতে এলাকায় কয়েকটি খাঁচাও পাতা হয়েছে। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এলাকার মানুষ পথে বা খেতে চাষ করতে যেতে চাইছেন না। কেনাকাটা থেকে স্কুলের পঠন পাঠনও ব্যাহত হচ্ছে।

শনিবারও এলাকায় গিয়েছিলেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি। কিন্তু সেই আশ্বাসই সার। হনুমান ধরা পড়েনি। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “জেলা শাসক ও ডিএফওকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”

ডিএফও অরুণাংশু পণ্ডা বলেন, ‘‘আমাদের হিসেবে জখমের সংখ্যা একশো পেরিয়েছে। ১২-১৩ বার ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়ে হনুমান ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এলাকায় তিনটি হনুমান তাণ্ডব করছে বলে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” বন দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যস্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

এ দিন প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয় রাস্তায়। বাসিন্দাদের বক্তব্য, “অবরোধে সাধারণ মানুষের সমস্যা হয়েছে, এটা ঠিকই। কিন্তু আমরা যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে বাস করছি, তা সকলের জানা উচিত।’’

gopalnagar disturbance by monkeys bangaon-chakdaha highway
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy