অস্ত্রোপচারের আগে এবং পরে (বাঁ দিক থেকে)
মারণ রোগের চিহ্ন স্পষ্ট শরীরে। কিন্তু, তা থাবা বসাতে পারেনি চূড়ান্ত জীবনী শক্তিতে। আকর্ষণীয়, সুঠাম মডেল থেকে রুগ্নকায়, দুর্বল নারীতে পরিণত হয়েও তিনি মনেপ্রাণে ঠিক আগের মতোই মডেল। মডেলই তো! সমস্ত ক্যানসার আক্রান্তদের কাছে বেঁচে থাকার মডেল।
ফ্লোরিডার বাসিন্দা মাত্র ২৩ বছরের চেয়ান ক্লার্ক একজন ফিটনেস মডেল ছিলেন। সম্প্রতি ডিম্বাশয়ে ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। খবরটা জানার পর থেকে আচমকাই যেন চার পাশটা অনেকটা বদলে যায়। তাঁকে ঘিরে থাকা লোকেদের মুখগুলো কেমন যেন ম্লান হয়ে পড়ে। চিকিৎসা শুরু হয়। অস্ত্রোপচারে বাদ যায় তাঁর দু’টি ডিম্বাশয়ই। কেমোথেরাপির প্রভাবে আস্তে আস্তে উঠে যায় তাঁর সমস্ত চুল। ১০ কিলোগ্রাম ওজন কমে গিয়ে চেহারা শীর্ণকায় হয়ে পড়ে। চোখ কোঠরাগত হয়ে পড়ে। হারিয়ে ফেলেন সমস্ত শারীরিক আকর্ষণ। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, আর কোনও দিন মা হতে পারবেন না তিনি। নিজের পেশাতেও হয়তো আর ফিরতে
সেলাইয়ের দাগগুলো এখনও স্পষ্ট তাঁর শরীরে
পারবেন না। চার বছর বয়স থেকে জড়িয়ে থাকা এই পেশাকে মুহূর্তে ছেড়ে বেরিয়ে আসা তাঁর কাছে সহজ ছিল না। সহজ ছিল না চিরকালের জন্য মাতৃত্ব হারানোর বিষয়টিও মেনে নেওয়া। পরিবারের সকলে ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু ভেঙে পড়েননি চেয়ান। উল্টে তাঁর চোয়াল যেন আরও খানিকটা শক্ত হয়ে পড়ে। এখন আর লড়াইটা যে তাঁর একার নয়। পরিবারের পাশাপাশি তাঁর মতোই অসংখ্য ক্যানসার আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে তাঁকে। লড়াই শুরু হয় আবার শেষ থেকে শুরু করার। আগের মতো আর অতটা শরীরে জোর নেই তা-ও রোজ সময় করে জিমে গিয়ে কসরত করছেন চেয়ান। তাঁর বিশ্বাস, খুব তাড়াতাড়ি তিনি আবার আগের মতোই সমস্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন। মা হতে প্রয়োজনে সন্তান দত্তক নেবেন। সমস্ত ক্যানসার আক্রান্তদের কাছে তাঁর একটাই অনুরোধ, ‘‘মনের জোর থাকলে সব অসম্ভব সম্ভব। মনের জোর কখনও হারাবেন না।’’
ক্যানসার ধরা পরার আগে
এখনও শরীর পুরোপুরি ক্যানসার মুক্ত হয়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, এখনও বেশ কিছু সময় লাগবে। তাতে অবশ্য কিছু এসে যায় না চেয়ানের। ফিটনেস প্রতিযোগিতায় জয়ী হোন বা না হোন, মনের যুদ্ধে ইতিমধ্যেই তিনি জয়ী।
আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে টাকা চুরি করে স্কুলশিক্ষিকার সঙ্গে পালাল কিশোর!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy