বাংলাদেশের জয়ে দেশ জুড়ে চলছে উৎসব। ছবি: এএফপি।
প্রতিপক্ষ যখন পাকিস্তান, তখন খেলার মাঠ হয়ে ওঠে কার্যত যুদ্ধক্ষেত্র। আবুধাবিতেও তাই হল। মাঠে যখন মাশরাফি বাহিনী পাকিস্তানের উইকেটগুলো তুলে নিয়েছে, তখন রাজধানী ঢাকা থেকে দূর গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে রয়্যাল বেঙ্গলের গর্জন।
পাকিস্তানকে হারানো বাংলাদেশের জন্য বরাবরই গৌরবের। তাই যুদ্ধজয়ের আনন্দে ভাসছে বাংলাদেশ। গোটা বাংলাদেশে চলছে ক্রিকেট উৎসব। পাকিস্তানকে হারিয়ে এই নিয়ে তৃতীয় বার এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ।
জয়ের উদ্যাপন চলছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। সেখানে চলছে গোটা টিমের জন্য ভালবাসা, শুভকামনা আর স্তুতির ফুলঝুরি। আছে খানিকটা গর্বও। আছে প্রবাসীদের ভালবাসাও।জয়ের উল্লাসে মেতেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিতের সঙ্গে সঙ্গে মুহুর্মুহু উল্লাসে মেতে উঠল টিএসসি চত্বর। বার হয় বিজয় মিছিল।মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “নিশ্চিতভাবে বাংলাদেশের যে কোনও জয়েই থাকে গৌরবের আনন্দ। আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোনও জয়ভিন্নমাত্রাপায়। মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজি বীরপ্রতীক বর্তমানে সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, “আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ তুলে দিয়েছিলাম যে প্রজন্মের হাতে, আজ এই জয়ই বলে দেয় তারা পরাজিত হবে না।”শুধু ঢাকা নয়, পাকিস্তানকে হারানোর আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামে-গঞ্জেও। চলছে আনন্দ মিছিল আর মিষ্টি বিতরণ। তরুণরা পোড়াচ্ছে আতশবাজি।
আরও পড়ুন: মাশরফির এই ক্যাচ গড়ে দিল তফাত, দেখুন ভিডিয়ো
আরও পড়ুন: পরিসংখ্যান বিপক্ষে, তবু ফাইনালে সব বাধা জয় করতে মরিয়া বাংলার বাঘেরা
আবুধাবির শেখ জাইদ স্টেডিয়ামে জয়ের এ কাব্য অবশ্য এত সহজে রচিত হয়নি। শুরুতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই হোঁচট খাওয়া ১২ রানে হারায় সৌম্য, মমিনুল আর লিটন ড্রেসিংরুমে ফেরেন দলীয় ১২ রানে।এমন সময়ে ১৪৪ রানের প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মহম্মদ মিথুন আর মুশফিকুর রহিম জুটি। ব্যক্তিগত ৬০ রানে মিথুন আউট হলেও দলীয় রান ততক্ষণে পেরিয়েছে দেড়শোর কোটা।
এরপর অবশ্য মুশফিক একাই লড়েছেন পাঁজরের চোট নিয়ে। চাপের মুখে কেমন যেন চওড়া হয়ে ওঠে মুশির ব্যাট। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি সে কথাই মনে করিয়ে দেয়। এ ম্যাচে অবশ্য পাঁজর পোড়ানোর আগে নারভাস নাইনটিনাইনের জোর কামড় বসিয়েছে মুশফিকের মনে। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এ ক্লাবে নাম লিখিয়েছেন মুশি। শেষ পর্যন্ত সব উইকেট খুইয়ে ২৩৯ রানে থামে টাইগাররা।
আরও পড়ুন: এই রেকর্ডটি মঙ্গলবার ছুঁতে পারলেন না ধোনি
আরও পড়ুন: লম্বা সিরিজ খেলতে ভারতে পৌঁছল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
জয়ের জন্য বাংলাদেশের রানের খাতাটা খুব একটা ভারী নয়। তাই বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়েই মাঠে নামে পাকিরা। তবে শুরুতেই লাগাম টেনে ধরেন মিরাজ আর মুস্তাফিজ। স্কোরবোর্ডে তখন ১৮ রানে ৩ উইকেট নেই পাকিস্তানের।পাকিস্তান শিবিরে তখন ম্যাচে ফেরার লড়াই। কিন্তু ক্যাপ্টেন মাশরাফির অনবদ্য এক ক্যাচ তা আর হতে দেয়নি। ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশ।এরপর আর টাইগারদের রুখতে পারনি পাকিরা। একপ্রান্ত আগলিয়ে ইমাম দেখেন একে একে শোয়েব, শাহদাব আর আসিফের চলা যাওয়া। পাকিরা গুটিয়ে যায় ২০২ রানে।
অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক ফেভারিট হিসেবে এবার পাকিদের নাম নিয়েছিলেন। আর সেসব সমীকরণ উল্টে ফাইনালে বাংলাদেশ।বরাবরের মতোই জয়ের আনন্দ আর কৃতিত্ব সবার মাঝে ছড়িয়ে দিলেন মাশরাফি-বিন-মর্তুজা। বাংলাদেশ গর্ব করার মতো ফিল্ডিং করেছে বলে মত তাঁর। এ জয়ের আনন্দে তখন চকচক করছিল টাইগারদের মুখ।
(আইসিসি বিশ্বকাপ হোক বা আইপিএল , টেস্ট ক্রিকেট, ওয়ান ডে কিংবা টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেট খেলার সব আপডেট আমাদের খেলা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy