Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুরন্ত টার্নারের শক্তির কাছে হেরে গেল ভারত

অ্যাশটন টার্নারকে আমি বিগ ব্যাশে খেলতে দেখেছি। একেবারে আদর্শ টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার। বিগ ব্যাশের দল হচ্ছে পার্‌থ স্করচার্স। 

হাতছাড়া: উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন হ্যান্ডসকম্ব। সেই বল তালুবন্দি করতে পারলেন না উইকেটকিপার ঋষভ পন্থ। এ ভাবেই বারবার সুযোগ নষ্ট করে ম্যাচেও হারল ভারত। পিটিআই

হাতছাড়া: উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন হ্যান্ডসকম্ব। সেই বল তালুবন্দি করতে পারলেন না উইকেটকিপার ঋষভ পন্থ। এ ভাবেই বারবার সুযোগ নষ্ট করে ম্যাচেও হারল ভারত। পিটিআই

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪০
Share: Save:

অ্যাশটন টার্নারকে আমি বিগ ব্যাশে খেলতে দেখেছি। একেবারে আদর্শ টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার। বিগ ব্যাশের দল হচ্ছে পার্‌থ স্করচার্স। হারা ম্যাচ জিতিয়ে দেওয়ার ক্ষমতার জন্যই টার্নারকে দলে রাখা হয়। যে ক্ষমতার চাক্ষুষ প্রমাণ পেলাম রবিবারের মোহালিতে।

একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দিই। শেষ দু’বছরের বিগ ব্যাশে ১৫ থেকে ২০ ওভারের মধ্যে টার্নারের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৯৪.৬৯। আর শেষের দু’ওভারে সেই স্ট্রাইক রেট গিয়ে দাঁড়ায় ২৬৮.৭৫। যা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি!

টার্নারের ব্যাটিংয়ের তিনটে ব্যাপার খুব ভাল লেগেছে আমার। ফুটওয়ার্ক, শক্তি এবং বল বাছার ক্ষমতা। এতেই বাজিমাত করে চলে গেল ছেলেটা। ফ্রন্টফুট এবং ব্যাকফুট, দু’টোতেই সাবলীল ছিল। ওর শক্তিটাও মারাত্মক। অবলীলায় বল ফেলে দিচ্ছিল গ্যালারিতে। কোন বলে কোন শটটা খেলতে হবে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেখলাম টার্নারের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ৮৪ রানে অপরাজিত থেকে গেল। মারল পাঁচটি চার, ছ’টি ছয়। ভারতের ৩৫৮ রান ১৩ বল বাকি থাকতে, ছয় উইকেট হারিয়ে তুলে দিল অস্ট্রেলিয়া।

বিশ্বকাপের আগে এই হারটা কিন্তু ভারতের কাছে একটা ধাক্কা হয়ে থাকল। মোহালির উইকেট অবশ্যই ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ ছিল, সাতশোর বেশি রান উঠেছে। পরের দিকে শিশিরও সমস্যা করেছে বোলারদের। কিন্তু তাও চাপের মুখে শেষ দিকে একটু খেই হারিয়ে ফেলল ভারতীয় বোলাররা। ৪৫তম ওভারে ভুবনেশ্বর কুমার দেয় ২০। ৪৬তম ওভারে যশপ্রীত বুমরা ১৬। আর ৪৭তম ওভারে ভুবি দেয় ১৮। মানে তিন ওভারে ৫৪। ৪২ থেকে ৪৮ ওভারের মধ্যে ৩৫ বলে ৮৬ রান তুলল টার্নার এবং অ্যালেক্স ক্যারে।

ইনিংসের মাঝপথে উসমান খোয়াজা আর পিটার হ্যান্ডসকম্বের উপরেও কিন্তু দাগ কাটতে পারেনি আমাদের স্পিনাররা। এই ম্যাচে দুই রিস্ট স্পিনারকেই খেলিয়েছিল ভারত। কুলদীপ যাদব এবং যুজবেন্দ্র চহাল। কুলদীপ তাও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে। চহাল এই ম্যাচটা ভুলে যেতে চাইবে। ১০ ওভারে ৮০ রান দিল ও।

ভারতীয় বোলারদের মতো ভারতীয় ফিল্ডারদের জন্যও খুব খারাপ দিন গেল একটা। ভুবনেশ্বরের করা ৪৭ নম্বর ওভারে দুটো ক্যাচ পড়ল। দু’নম্বর বলে কেদার যাদব, ডিপ মিড উইকেটে। চার নম্বর বলে মিড অফে, ধওয়ন। দু’টোই টার্নারের ক্যাচ। যদিও ওই সময় অস্ট্রেলিয়া জয়ের খুব কাছে চলে এসেছিল, কিন্তু ক্রিকেটে তো কত অঘটনই ঘটে। তবে চহালের বলে ঋষভ পন্থ যে স্টাম্পিংটা ফস্কেছে, সেটা কিন্তু ম্যাচের রং বদলে দিতে পারত। টার্নার ওই সময় ছিল ৩৮ রানে। অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ছিল ৪২ বলে ৭২। ঋষভ ওই ভাবে স্টাম্পিংটা ফস্কানোর পরে টিভি-তে শোনা গেল, দর্শকরা ধোনি, ধোনি রব তুলছেন।

শুরু থেকে রাঁচীর সঙ্গে একটা মিল দেখা যাচ্ছিল মোহালির। ওখানে ওপেনিং জুটিতে ১৯৩ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া, এখানে একই রান তুলল ভারত। রাঁচীতে অস্ট্রেলিয়ার বাঁ হাতি ওপেনার খোয়াজা সেঞ্চুরি করেছিল, এখানে ভারতের বাঁ হাতি ধওয়ন। ওখানে ওদের ডান হাতি ওপেনার ফিঞ্চ নব্বইয়ের ঘরে আউট হয়, এখানে আমাদের ডান হাতি ওপেনার রোহিতও তাই। রাঁচীতে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতেছিল।

মোহালিতেও অস্ট্রেলিয়া জিতে চলতি ওয়ান ডে সিরিজ ২-২ করে দিল। সিরিজ ফয়সালার লড়াই এ বার রাজধানীতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE