—ছবি রয়টার্স।
প্রথম যখন আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে যশপ্রীত বুমরাকে দেখি, তখন অনেক ক্রিকেট পণ্ডিতই বলেছিলেন, এই বোলিং অ্যাকশনে টেস্ট ক্রিকেটে সফল হওয়া যাবে না। বলতে লজ্জা নেই, সেই দলে আমিও ছিলাম। সেই বুমরা আমাকে ভুল প্রমাণিত করে দিয়েছেন এই বছরে।
বুমরা কিন্তু ওঁর অ্যাকশন বদলাননি। বরং বলে এনেছেন এক্সপ্রেস গতি। আর সেই বিধ্বংসী গতির সঙ্গে ওঁর আউটসুইং ও ইনসুইং সামলাতে গিয়েই শুক্রবার মেলবোর্নে মুখ থুবড়ে পড়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। সঙ্গে দুরন্ত রিভার্স সুইং। যা লাঞ্চের পরে দেখা গেল।
মেলবোর্ন টেস্টের তৃতীয় দিনটা দুই পেসারের। ভারতের যশপ্রীত বুমরা এবং অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্সের। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে বুমরা ১৫.৫ ওভার বল করে ৩৩ রানে তুলে নিয়েছেন ছয় উইকেট। অন্য দিকে, ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ ওভার বল করে ১০ রানে চার উইকেট কামিন্সের। তফাত এটাই, বুমরার দুরন্ত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা খেলার দিশা পাননি। আর কামিন্সকে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা উইকেট
উপহার দিয়েছেন।
এ বার আসা যাক, যশপ্রীত বুমরার আজকের বোলিং প্রসঙ্গে। লক্ষ করলে দেখবেন এ দিন বুমরার ছয় উইকেটের মধ্যে তিনজনই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান— মার্কাস হ্যারিস, শন মার্শ ও ট্র্যাভিস হেড। এদের মধ্যে হ্যারিস আউট হয়েছেন বুমরা-ভীতি ঘাড়ে চেপে বসায়। কারণ আগের দিনে বুমরার বল ওর মাথায় লেগেছিল। এ দিন সেই ভয়ে ভয়ে পুল মারতে গিয়ে ডিপফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক টিম পেনও দুর্দান্ত আউটসুইংয়ে কট বিহাইন্ড হন বুমরার বলে। ট্র্যাভিস হেড আউট ‘ডিপার ইনসুইংয়ে’। নেথান লায়ন আবার আউট সুইং বুঝতে না পেরে এলবিডব্লিউ। এ ভাবেই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের কাছে এ দিন ত্রাস হয়ে ওঠেন বুমরা।
অন্য দিকে কামিন্সকে ভারতীয়রা কী ভাবে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন, তা এক বার দেখা যাক। হনুমা বিহারী একদম প্রথম ইনিংসের অ্যাকশন রিপ্লে দেখিয়ে আউট। চেতেশ্বর পূজারা এবং বিরাট কোহালিও একই ভাবে লেগ সাইডে আউট হয়েছে। কামিন্সের বোলিংয়ে এমন কিছু বিষ ছিল না। বিরাট ও পূজারা আক্রমণ করতে গিয়েই উইকেট দিয়েছেন। রোহিত শর্মাকে দেখে এ দিন হতাশই হলাম। রোহিত যে কাটটা মারতে গিয়ে আউট হলেন, সেটা সাদা বলের শট। লাল বলের শট নয়। আমার মনে হয়, দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতীয় দল অস্ট্রেলিয়াকে কিছুটা হাল্কা ভাবে নিয়েছে। তাই কামিন্স উইকেটগুলো নিয়ে গেলেন।
ক্রিজে রয়েছেন মায়াঙ্ক আগরওয়াল। এই সিরিজে নেথান লায়নকে সবচেয়ে ভাল খেলছেন মায়াঙ্কই। ফ্রন্টফুটে যখন ফরোয়ার্ড খেলছেন তখন বলের উপরে গিয়ে বটমহ্যান্ডটা ‘লুজ’ রাখছেন, ফলে পার্শ্ববর্তী ফিল্ডারদের কাছে ক্যাচ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না। তৃতীয় দিনের শেষে ৩৪৬ রানে এগিয়ে ভারত। আমার মতে, অস্ট্রেলিয়াকে ফলো অন না করিয়ে এ দিন ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন বিরাট। উদ্দেশ্যটা হয়তো চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট না করতে চাওয়া আর বুমরাকে বিশ্রাম দিয়ে তাজা অবস্থায় পাওয়া। স্কোরবোর্ডে দরকার আর ৫০-৬০ রান। তা হলেই জয় চলে আসবে। এই ভারতীয় বোলিংকে সামলানোর ক্ষমতা নেই অস্ট্রেলিয়ার। আমি নিশ্চিত সিরিজে ২-১ এগিয়ে সিডনিতে নামবে বিরাটের ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy