শুভমন গিল এবং হার্দিক পাণ্ড্য। চোট সারিয়ে কটকে প্রত্যাবর্তন দুই ক্রিকেটারের। ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশের উৎসাহ ছিল শুভমনকে নিয়ে। টেস্ট এবং এক দিনের দলের অধিনায়ক শুভমন। হতাশ করলেন শুভমন টি-টোয়েন্টি দলের সহ-অধিনায়ক। তবে নেতৃত্বের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া হার্দিক ঝড় তুললেন ব্যাট হাতে। তাঁর ২৮ বলে ৫৯ রানের অপরাজিত ইনিংসের সুবাদেই এডেন মার্করামের দলের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছোন সূর্যকুমার যাদবেরা। ভারতের ১৭৫ রানের জবাবে ৭৪ রানে শেষ হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ১৮ বলে শেষ ৫ উইকেট হারাল প্রোটিয়ারা। ১০১ রানে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে সিরিজ়ে এগিয়ে গেল ভারত। একই সঙ্গে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সূর্যকুমারেরা। যদিও অধিনায়কের ফর্ম নিয়ে উদ্বেগ থাকলই।
ভারতের ৬ উইকেটে ১৭৫ রানের ইনিংসে বলার মতো খেললেন কেবল হার্দিকই। চাপের মুখে ২২ গজের এক প্রান্ত আগলে রাখলেন। ৬টি চার এবং ৪টি ছক্কা মারলেন। অক্ষর পটেল (২১ বলে ২৩), শিবম দুবেরা (৯ বলে ১১) তাঁকে আর একটু সাহায্য করতে পারলে ২০০-র কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারত ভারত। পারল না ব্যাটারদের ব্যর্থতায়। শুভমন কটকের ২২ গজে টিকলেন ২ বল। করলেন ৪ রান। অন্য ওপেনার অভিষেক শর্মা (১২ বলে ১৭), সূর্যকুমার (১১ বলে ১২) ভাল শুরু করেও আউট হয়ে গেলেন। অভিষেক নিজের উইকেট ছুড়ে দিলেন ছক্কা মারার ফাঁদে পা দিয়ে। সূর্যকুমারকে এ বছর চেনা ফর্মে দেখা যাচ্ছে না। ম্যাচের পর ম্যাচ হতাশ করছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। তিলক বর্মাও এশিয়া কাপ ফাইনালের মতো ব্যাট করতে পারলেন না। ৩২ বলে ২৬ রান করলেন। তবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১০০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের মধ্যে সফলতম লুঙ্গি এনগিডি ৩১ রানে ৩ উইকেট নিলেন। ৩৮ রানে ২ উইকেট লুথো সিপামলার। ১৩ রানে ১ উইকেট ডোনোভান ফেরেইরার।
ধারাবাহিক ব্যবধানে উইকেট হারাল ভারত। প্রয়োজনীয় জুটি তৈরি হল না। প্রায় একাই লড়াই করলেন হার্দিক। ম্যাচ ফিট হতে না পারায় কয়েক দিন আগে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতেও বডোদরার হয়ে সব ম্যাচ খেলতে পারেননি হার্দিক। সোমবার ভারতীয় দলের অনুশীলনে কয়েকটি বল করার পরই উঠে যান। তাঁর চোট নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়। মঙ্গলবারের ম্যাচে সব জল্পনার অবসান ঘটালেন ৩২ বছরের অলরাউন্ডার। বল করতে এসেও প্রথম বলেই তুলে নিলেন ডেভিড মিলারের (১) মতো বিপজ্জনক ব্যাটারের উইকেট।
ভারতের ইনিংস শেষ হওয়ার পর মনে হচ্ছিল, ১৫-২০ রান কম করলেন সূর্যকুমারেরা। রাতের শিশিরে সমস্যা হতে পারে অর্শদীপ সিংহ, জশপ্রীত বুমরাহদের। তেমন কিছু তো হলই না। বরং বল হাতে রাতের বারবাটি শাসন করলেন ভারতীয় বোলারেরা। ১৭৬ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই আউট হন কুইন্টন ডি কক (০)। অর্শদীপের এই ধাক্কা সামলানোর আগেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। নিজের দ্বিতীয় ওভারে অর্শদীপ আউট করেন ট্রিস্টান স্টাবসকে (১৪)। অক্ষর নিজের প্রথম ওভার করতে এসে তুলে নেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক এডেন মার্করামের (১৪) উইকেট। ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যান সফরকারীরা। সেই চাপের মুখে পর পর ফিরে যান মিলার এবং ফেরেইরা (৫)।
দক্ষিণ আফ্রিকা ৫০ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ম্যাচের ফলাফল এক রকম ঠিক হয়ে যায়। ভারতীয় বোলারদের দাপটে কেউই আর লড়াই করতে পারলেন না। ধস নামল দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে। পর পর আউট হলেন জানসেন (১২), ডেওয়াল্ড ব্রেভিস (২২), কেশব মহারাজ (০), অনরিখ নোখিয়া (১), লুথো সিমপালারা (২)। ১২.৩ ওভারেই শেষ হয়ে গেল তাঁদের ইনিংস।
আরও পড়ুন:
ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সফলতম অক্ষর ৭ রানে ২ উইকেট নিলেন। ১৪ রানে ২ উইকেট অর্শদীপের। এ দিন ১৭ রানে ২ উইকেট নিলেন বুমরাহ। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেট পূর্ণ করলেন তিনি। ১৯ রানে ২ উইকেট বরুণ চক্রবর্তীর। ১৬ রানে ১ উইকেট নিলেন হার্দিক। ১ রানে ১ উইকেট শিবমের। ভারতের ছ’জন বোলারই উইকেট পেলেন।