রোহিতকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন কোহালি।
প্রথম ইনিংসে ১৭৬ রান করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসেও রোহিত শর্মা সেঞ্চুরি করলেন। রোহিত তো এরকমই! সেঞ্চুরি হাঁকাতে দক্ষ। বিশ্বকাপে পাঁচ-পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। তার পরেও টেস্ট দলে তাঁর জায়গা হত না। নিজের টেস্ট কেরিয়ার বাঁচানোর জন্য বিশাখাপত্তনমে ওপেন করতে নেমেছিলেন মুম্বইকর। এটাই তাঁর জীবনের স্মরণীয় টেস্ট ম্যাচ হয়ে গেল।
শনিবার ১৩৩ বলে ১০০ রান পূর্ণ করেন রোহিত। বুঝিয়ে দিলেন যে কোনও ফরম্যাটেই ব্যাট করতে তিনি দক্ষ। শেষ পর্যন্ত ১২৭ রানে আউট হন রোহিত। সুনীল গাওস্কর, রাহুল দ্রাবিড়, বিরাট কোহালি, অজিঙ্কা রাহানে ও বিজয় হাজারের সঙ্গে একই বন্ধনীতে এ দিন জায়গা করে নিলেন মুম্বইকর। গাওস্কর তিন বার একই টেস্টের দু’ ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন। বিশাখাপত্তনমে আরও একটা পালক যোগ হল রোহিতের মুকুটে। ওপেনার হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম টেস্ট ম্যাচ ছিল। সেই টেস্টেই দু’ ইনিংসে জোড়া শতরান মুম্বইকরের। এমন নজির নেই কারোওরই।
রোহিত সেঞ্চুরি পেলেও মাঠেই সেঞ্চুরি ফেলে এলেন চেতেশ্বর পূজারা। এ দিন দারুণ খেলছিলেন তিনি। ফিল্যান্ডারের বলে ৮১ রানে এলবিডব্লিউ হন পূজারা। ১৩টি চার ও ২টি ছক্কায় সাজানো ছিল তাঁর ইনিংস। রবীন্দ্র জাডেজা চটজলদি ৪০ রান করেন। কোহালি ও রাহানে ২৭ রান করেন। ভারত ৪ উইকেটে ৩১৯ রানে দ্বিতীয় ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে দেয়। ফলে প্রথম টেস্ট জিততে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে করতে হবে ৩৯৫ রান। সেই রানের জবাব দিতে নেমে চতুর্থ দিনের শেষে প্রোটিয়া-ব্রিগেড করেছে এক উইকেটে ১১ রান। প্রথম ইনিংসে ডিন এলগার ১৬০ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেছিলেন। এ দিন জাডেজার বলে মাত্র ২ রানে ফেরেন বাঁ হাতি ওপেনার। ক্রিজে রয়েছেন মার্করাম (৩) ও ব্রুইন (৫)।
তৃতীয় দিনের শেষে প্রোটিয়াদের রান ছিল ৮ উইকেটে ৩৮৫। চতুর্থ দিনের সকালে কেশব মহারাজকে ফেরান রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মহারাজ ফেরেন ৯ রানে। শেষ উইকেটে ৩৫ রান জোড়েন মুথুস্যামি ও রাবাডা। এর ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস শেষ হয় ৪৩১ রানে। ৭১ রানের লিড পায় ভারত।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ময়াঙ্ক আগরওয়ালের উইকেট দ্রুত হারায় ভারত। প্রথম ইনিংসে ময়াঙ্ক ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। এ দিন মাত্র ৭ রানে ফেরেন ময়াঙ্ক। রোহিত যখন ৫০ রানে, তখন তাঁর ক্যাচ নিয়ে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। লং অনে মুম্বইকরের ক্যাচ ধরেন মুথুস্যামি। কিন্তু, তাঁর পা বাউন্ডারি লাইন ছোঁয়ায় থার্ড আম্পায়ার ওভার বাউন্ডারির সিদ্ধান্ত দেন। সব মিলিয়ে ভারত লিড বাড়ানোর চেষ্টা করছে। উদ্দেশ্য একটাই দ্বিতীয় ইনিংসে বড় রান করে প্রোটিয়াদের উপরে চাপ সৃষ্টি করা।
ভারতের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর আগে অশ্বিনের ভেল্কিতে শেষ হয় প্রোটিয়া। প্রথম ইনিংসে তিনি ৭টি উইকেট নেন। গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ টেস্ট ম্যাচ অশ্বিন খেলেছিলেন দেশের জার্সিতে। তার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রত্যাবর্তন বিশাখাপত্তনমে। গত মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে থাকলেও প্রথম এগারোয় জায়গা হয়নি তাঁর।
আরও পড়ুন: ক্রিকেট থেকে দূরত্ব অসহনীয় লাগত অশ্বিনের
মাঝের এই দশ মাস দেশের জার্সিতে খেলতে না পারার যন্ত্রণা এতটাই তাঁকে গ্রাস করেছিল যে, খেলা দেখাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন অশ্বিন। সেই অফ স্পিনার ফিরে এসেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেন। চতুর্থ ইনিংসে অশ্বিনই ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির মুখে হাসি ফোটাতে পারেন। তৃতীয় দিনের শেষেই বল ঘোরাচ্ছিলেন অশ্বিন। তার সঙ্গে বল পড়ে নিচু হয়ে যাচ্ছিল। ফলে শেষ দিনে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের অশ্বিন ধাঁধার সমাধান করতে হবে। তা করতে না পারলে ভুগতে হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy