Advertisement
E-Paper

জাতীয় সেরা খুদে মনোজ

তায়কোয়ন্দোতে অনূর্ধ্ব ১৮ কেজির বিভাগে জঙ্গলমহল এলাকার সাত বছরের এক বালক জাতীয় সেরা নির্বাচিত হল। ২১  থেকে ২৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ওপেন ন্যাশনাল তায়কোয়ন্দো প্রতিযোগিতা ছিল। আসানসোলের একটি বেসরকারি স্কুলে প্রতিযোগিতাটি হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা  

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১৫
কসরত: অনুশীলনে মনোজ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

কসরত: অনুশীলনে মনোজ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

তায়কোয়ন্দোতে অনূর্ধ্ব ১৮ কেজির বিভাগে জঙ্গলমহল এলাকার সাত বছরের এক বালক জাতীয় সেরা নির্বাচিত হল। ২১ থেকে ২৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ওপেন ন্যাশনাল তায়কোয়ন্দো প্রতিযোগিতা ছিল। আসানসোলের একটি বেসরকারি স্কুলে প্রতিযোগিতাটি হয়। উদ্যোক্তা কোরিয়ান তায়কোয়ন্দো অ্যাকাডেমি এবং বেঙ্গল মার্শাল আর্ট তায়কোয়ন্দো অ্যাকাডেমি। আসানসোল ইস্টার্ন মার্শাল আর্ট অ্যাকাডেমি প্রতিযোগিতার পরিচালনার দায়িত্বে ছিল।

পুরুলিয়ার মানভূম তায়কোয়ন্দো অ্যাকাডেমির সম্পাদক সৌমেন রক্ষিত বলেন, ‘‘তিন দিনের দ্বিতীয় ওপেন ন্যাশনাল তায়কোয়ন্দো প্রতিযোগিতায় আমাদের জেলা থেকে ৯ জন প্রতিযোগী গিয়েছিল। তার মধ্যে মনোজ প্রামাণিক-সহ বিভিন্ন বিভাগে ৬ জন সোনা এবং তিন জন রুপো পেয়েছে।’’ তিনি জানান, মনোজ প্রামাণিক অনূর্ধ্ব ১৮ কেজির বিভাগে জাতীয় সেরার শিরোপা পেয়েছে। ‘বেস্ট ফাইটার’ও নির্বাচিত হয়েছে সে।

মানবাজার ২ ব্লকের কুটনি গ্রামের বাসিন্দা, মনোজের কোচ সুফল প্রামাণিক জানান, পড়া শেষ করে গ্রামে ফিরে মেয়েদের আত্মরক্ষার প্রাথমিক পাঠ দেওয়ার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শিবির শুরু করেছিলেন। প্রথম দিকে তেমন সাড়া না মিললেও পরে গ্রামবাসী তায়কোয়ন্দোর গুরুত্ব বুঝতে পারেন। এখন তাঁরাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের টুকিটাকি খরচের ধাক্কা সামাল দেন। জয়েন্ট বিডিও (মানবাজার ২) সন্দীপ প্রামাণিক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেকে সহযোগিতা করা হবে। ওঁরা আমাদের ব্লকের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি হংসেশ্বর মাহাতো, যুব সভাপতি শান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উন্নতির জন্য কী করা সম্ভব, দেখছি।’’

আসানসোল থেকে তায়কোয়ন্দো দলের সদস্যদের গ্রামে ফিরতে সোমবার বিকেল গড়িয়ে গিয়েছিল। তার আগে অবশ্য গ্রামের বালকের কীর্তির কথা সবাই জেনে গিয়েছেন। গ্রামের হাটতলায় তখন অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন। সবার অনুরোধে মনোজ খেলাও দেখায় এ দিন।

মনোজের বাবা সুকুমার প্রামাণিক বলেন, ‘‘প্রথম দিকে একটু ভয়ে ছিলাম। এ সব করতে গিয়ে না ছেলেটা আবার হাত-পা ভেঙে বসে।’’ তিনি জানান, কয়েক মাস ধরে গ্রামের কমিউনিটি হলের পাশের জমিতে নিয়মিত অনুশীলন চলছিল। বিকেলে মনোজ গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সে সব দেখত। তার পরে বাড়িতে ফিরে নিজের মনেই একা একা মহড়া দিত।

সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘সুফলবাবুকে বলার পরে এক দিন তিনি ওর পরীক্ষা নিলেন। আমার ছেলে যে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে সেরা হবে, সেটা ভাবতেই পারিনি।’’ কোচ মনে করেন , নিয়মিত অনুশীলন করলে মনোজ আরও ভাল ফল করবে।

সৌমেনবাবু জানান, এই প্রতিযোগিতায় জেলা থেকে সোনা পেয়েছে সঞ্জিত সহিস, শুভজিৎ মোদক, ছোটন রক্ষিত, সৌরজিৎ বল, গৌতম প্রামাণিক ও মনোজ প্রামাণিক। রুপো পেয়েছে নিমাই গোপ, যীশু মুখোপাধ্যায় ও সুরজ বিশ্বকর্মা।

মনোজের সাফল্যের খবর শুনে এসডিপিও (মানবাজার) আফজল আবরার বলেন, ‘‘ওইটুকু ছেলে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় ভাল করেছে। দক্ষ খেলোয়াড় হিসাবে গড়ে তুলতে ওকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।’’ আর যাকে ঘিরে এত কিছু সেই মনোজ বলছে, ‘‘রিং-এ দাঁড়ালে মনে হয়, যা বাধা আসুক উড়িয়ে দেব।’’

Manbazar Taekwondo Taekwondo championship
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy