Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ধারের বুটে খেলেই সুযোগ 

বিকির বাবা ব্রিসলাল শৈব আলাদা থাকেন। দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন মা ধলি শৈব।

বিকি শৈব। নিজস্ব চিত্র

বিকি শৈব। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৪:০৮
Share: Save:

কখনও ম্যাচের আগে ধার করে বুট জোগাড় করতে হয়েছে। কখনও আবার কারও কাছ থেকে জার্সি চেয়ে নামতে হয়েছে মাঠে। খেলোয়াড়দের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারও জোটে না। এমনকি কোথাও খেলতে গেলে গাড়ি ভাড়াটাও পরিচিতদের কাছ থেকে জোগাড় করতে হয়। এত সমস্যা সত্ত্বেও থেমে থাকেনি বিকি। চালিয়ে গিয়েছে খেলা। পরিচিতরা বলছেন সেই জেদেরই ফল পেল সে। অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় স্কুল ফুটবল দলে ডাক পেল শিলিগুড়ি কৃষ্ণমায়া হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র বিকি শৈব।

বিকির বাবা ব্রিসলাল শৈব আলাদা থাকেন। দুই ছেলে এবং এক মেয়েকে নিয়ে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন মা ধলি শৈব। মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। বিকির চেয়ে চার বছরের বড় দাদা রকি এখন দিনমজুরি করে মাকে সাহায্য করেন। চরম দারিদ্র্য সত্ত্বেও বিকি আঁকড়ে ধরেছে ফুটবলকে। পঞ্চম শ্রেণিতে কৃষ্ণমায়া হাইস্কুলে ভর্তি হয় বিকি। সপ্তম শ্রেণিতে স্কুলের দু’টি দলের খেলার সময় বিকি নজরে পড়ে ক্রীড়া শিক্ষক অজয় তামাংয়ের। তিনি সেই বছর সুব্রত কাপের দলে বিকিকে সুযোগ দেন। গত বছর পুজোর পরে স্কুলের শিক্ষকই অনূর্ধ্ব ১৯ বাংলা দলের ট্রায়ালে তাকে পাঠায় কামাখ্যাগুড়িতে। সেখান থেকে মেলে বাংলা দলের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ। তার সুবাদে গত বছর রাজস্থান পাড়ি বিকির। জাতীয় স্কুল ফুটবলে বাংলা দলের হয়ে খেলে নজর কাড়ায় এ বার সুযোগ মিলেছে অনূর্ধ্ব ১৯ ভারতীয় স্কুল দলে। গত সোমবারই শিলিগুড়ি স্কুল ক্রীড়া পর্ষদের সচিব অনুপ সরকার বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলের শিক্ষক অজয়কে জানান।

আজ, বুধবার কলকাতা হয়ে ভূপালে শিবিরের উদ্দেশে রওনা হবে বিকি। এ দিন তাকে এক জোড়া বুট কিনে দেন স্কুল শিক্ষক অজয়। শেঠশ্রীলাল মার্কেটের এক ক্রীড়া সরঞ্জাম দোকান থেকে আর এক জোড়া বুট দেওয়া হয়েছে। বিকি বলে, ‘‘ভাল কিছু করে দেখাতে চেষ্টা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Football Under 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE