Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আই লিগের ক্লাবদের উপেক্ষা নয়, বার্তা পটেলের

ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেল।—ফাইল চিত্র।

ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেল।—ফাইল চিত্র।

শুভজিৎ মজুমদার
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৪:৫৭
Share: Save:

আই লিগ বনাম আইএসএল। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন বনাম আই লিগের ক্লাব জোট। কখনও আই লিগের ক্লাব জোটের কর্তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিচ্ছেন। কখনও আবার রাজনৈতিক নেতাদের শরণাপন্ন হচ্ছেন। গত কয়েক সপ্তাহে যে-ভাবে নাটকীয় ভাবে পরিস্থিতি বদলেছে, তাতে ফেডারেশন সভাপতি প্রফুল্ল পটেল এক দিকে যেমন হতাশ, তেমনই চিন্তিত ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে।

রবিবার সকালে আনন্দবাজারকে ফোনে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও ফেডারেশন সভাপতি বললেন, ‘‘খেলাধুলোর মধ্যে রাজনীতিকে টেনে আনা একেবারেই কাম্য নয়। ব্যাপারটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’ তিনি যোগ করলেন, ‘‘ফিফা ও এএফসির নিয়ম নির্দেশিকা মেনেই এআইএফএফ চলে। ফিফা কখনওই মেনে নেয় না, তৃতীয় কোনও ব্যক্তি বা পক্ষের হস্তক্ষেপ। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে স্বীকৃতি বাতিল করে দেয়। অনেক দেশেই তা হয়েছে।’’

কিন্তু ফিফা কখনওই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিয়ে উৎসাহী নয়। তা সত্ত্বেও কেন অবনমনহীন আইএসএলকে দেশের সর্বোচ্চ লিগ করতে উদ্যোগী ফেডারেশন? দেশের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার প্রধানের ব্যাখ্যা, ‘‘আইএমজিআর-এর সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, তাকে সম্মান জানাতে আমরা দায়বদ্ধ। তবে তার মানে এই নয় যে, আই লিগের ক্লাবগুলোকে ধ্বংস করা আমাদের লক্ষ্য। ভারতীয় ফুটবলে ক্লাব সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে মরিয়া এআইএফএফ। কারণ, আই লিগের ক্লাবগুলোকে ছাড়া ভারতীয় ফুটবলের কোনও ভবিষ্যৎ নেই।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘এই কারণেই এএফসি ও আইএমজিআর-কে বিস্তারিত ভাবে সব বুঝিয়েছি। ওদের বলেছি, আমাদের একটু সময় লাগবে। তাই আগামী তিন বছর আইএসএলের পাশাপাশি আই লিগও চলবে।’’তিন বছর পরে কী হবে? ফেডারেশন সভাপতির কথায়, ‘‘এই তিন বছরেই বোঝা যাবে আই লিগের স্থায়িত্ব কী। স্পনসর, ফুটবলার, ক্লাবগুলো থেকে সাধারণ দর্শক— সবার কাছেই পরিষ্কার হয়ে যাবে পুরো ব্যাপারটা। দ্বিতীয়ত, এই তিন বছরে ফেডারেশনের সাহায্যে নিজেদের উন্নতি করার ও আর্থিক ভাবে শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ রয়েছে আই লিগের ক্লাবগুলোর। এই তিন বছরের মধ্যে আমাদের সমাধানসূত্র খুঁজে বার করতে হবে।’’

অতীতে আইএসএল খেলে আই লিগে যোগ দিতেন ফুটবলারেরা। তাতে আর্থিক ভাবে লাভবানও হতে তাঁরা। দু’টো লিগের মধ্যে কোনও সংঘাত হত না। ফেডারেশন সভাপতি অবশ্য পুরনো নিয়ম ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন। বললেন, ‘‘আইএমজিআর-র সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আমরা তা পারি না। আইএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো মাত্র এক মাসের প্রতিযোগিতার জন্য কেন এত খরচ করবে?’’

ফেডারেশন সভাপতি হতাশ কলকাতার দুই প্রধানের ভূমিকায়। তাঁর কথায়, ‘‘গত কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গ এবং কলকাতা অনেক বদলে গিয়েছে। ক্লাবগুলোর উচিত উদার হওয়া।’’ ক্ষুব্ধ প্রফুল্ল পটেল যোগ করেন, ‘‘কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতেই ব্যস্ত। তাঁরা ভারতীয় ফুটবলের কথা ভাবতে চান না।’’ আই লিগের ক্লাব জোট কোর্টে যাওয়ার হুমকি দেওয়ায় কি অস্বস্তিতে ভারতের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার প্রধান? ফেডারেশন সভাপতির জবাব, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে যে কেউ কোর্টে যেতে পারেন। কিন্তু কোর্টে গিয়ে কখনও সমস্যার সমাধান হয়? উল্টে কোর্টে গেলে ফিফা-এএফসি আমাদের নির্বাসিত করতে পারে।’’ তা হলে তো ভারতীয় ফুটবলই ধ্বংস হয়ে যাবে? ক্ষুব্ধ প্রফুল্ল পটেলের হুঙ্কার, ‘‘ভারতীয় ফুটবলকে রক্ষা করার দায়িত্ব একা আমার নয়। প্রত্যেককেই ব্যক্তিগত স্বার্থ ভুলে এগিয়ে আসতে হবে। না-হলে ভারতীয় ফুটবলকে বাঁচানো সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE