Advertisement
E-Paper

নিখুঁত অঙ্কেই সনির দলকে টেক্কা রোকার

ফেড কাপ ফাইনালে মোহনবাগানের হারের পর আমার মনে হচ্ছে, ডার্বি জেতাটাই কাল হল সনি নর্দেদের। কেন জানি না ফুটবলার বা কোচিং জীবনে বারবার দেখেছি, বড় ম্যাচ জেতার পরের ম্যাচটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জয়ী টিমের কাছে অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়।

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০৫:০৯

ফেড কাপ ফাইনালে মোহনবাগানের হারের পর আমার মনে হচ্ছে, ডার্বি জেতাটাই কাল হল সনি নর্দেদের।

কেন জানি না ফুটবলার বা কোচিং জীবনে বারবার দেখেছি, বড় ম্যাচ জেতার পরের ম্যাচটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জয়ী টিমের কাছে অভিশাপ হয়ে দেখা দেয়। সেটা কেন হয়? আসলে অদ্ভুত একটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে যায় টিমটা। যা হল রবিবার সঞ্জয় সেনের টিমের। যে ফুটবলটা ওরা এই মাঠেই খেলেছিল ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে, তার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারল না ড্যারেল ডাফিরা।

ম্যাচটা দেখার আগে আমার মাথায় দু’টো প্রশ্ন ছিল। এক) বেঙ্গালুরুর কোচ আলবের্তো রোকা কীভাবে সনি নর্দে এবং ইউসা কাতসুমিকে সামলান? কারণ ওরাই ছিল মোহনবাগানের সেরা অস্ত্র। দুই) মোহনবাগান রক্ষণ কতক্ষণ জমাট থাকবে? কেরলের ছেলে সি কে বিনীতের জোড়া গোলে বেঙ্গালুরু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর লিখতেই হচ্ছে, দু’টো ক্ষেত্রেই মোহনবাগানের স্ট্র্যাটেজিকে টেক্কা দিয়ে গেল বেঙ্গালুরুর স্প্যানিশ কোচ।

৪-৫-১ ফর্মেশনে টিম নামিয়ে এ দিন মোহনবাগানে উইং প্লে যেমন বন্ধ করে দিয়েছে বেঙ্গালুরু, তেমনই শুরু থেকে মাঝমাঠটা জমাট রেখে গিয়েছে তারা। যার ফলে সনি বা কাতসুমির উইং প্লে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। দুই বিদেশির কাছে বল গেলেই ঘিরে ধরেছে কখনও হরমনজ্যোত খাবরা, কখনও সন্দেশ ঝিঙ্গালরা। নিখুঁত অঙ্ক সন্দেহ নেই। হোসে ব্যারেটোর মতো সনি গেম মেকার নয়। কিন্তু উইথ দ্য বল ও খুব ভাল। সেটা জানতো বেঙ্গালুরু কোচ। সনির গায়ে তাই পালা করে মার্কার লাগিয়ে দিয়েছিল। কাতসুমিকেও ওরা দৌড়তেই দেয়নি। ফলে মোহনবাগান মাঝমাঠের সঙ্গে ফরোয়ার্ডদের সাপ্লাই লাইন কেটে গিয়েছে। ডাফিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। একই অবস্থা হয়েছিল বলবন্ত সিংহের। বল না পেলে ওরা করবে কী?

আরও পড়ুন: সুনীল না থাকার ফাইনালে বেঙ্গালুরুর নায়ক বিনীত

আর মরসুমের শুরু থেকেই সঞ্জয়ের রক্ষণ যেভাবে মাঝেমধ্যেই গোল খাচ্ছিল তাতে শঙ্কা একটা ছিলই। ভেবেছিলাম এদুয়ার্দো-আনাসরা পারবে তো? না শেষ পর্যন্ত পারেনি। পুরো ম্যাচটায় বেঙ্গালুরু চারটে গোল করল। তাদের দুটো গোল অফসাইডে বাতিল হল। তবে উদান্ত সিংহের প্রথম গোলটা অফসাইড ছিল না কী না তা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। বিনীত ছেলেটা গোল চেনে। এই মরসুমে অনেকগুলো গোল করেছে। আইএসএলে গোল করেতে দেখেছি কেরল ব্লাস্টার্সের হয়ে। এরকম ফাইনালে জোড়া গোল করা সত্যিই বড় ব্যাপার। বিনীতের খেলার একটা বড় গুণ ছেলেটা হঠাৎ হঠাৎ ফিরে আসে ম্যাচে। উইং দিয়ে ভাল অপারেট করে। সেটা ও করেই বাজিমাত করে গেল। পরিবর্ত হিসাবে কর্নেল গ্লেন এবং বিনীত আসার পর রোকার টিম যেন প্রাণ পেয়েছিল। পঞ্চাশ-পঞ্চাশ ম্যাচটা ঢলে পড়ল বেঙ্গালুরুর দিকে। গ্লেনের শটটা যেভাবে পোস্টের ভিতরে লেগে বেরিয়ে এল সেটা আশ্চর্যের। মনে হচ্ছিল, ফুটবল দেবতা মনে হয় বেঙ্গালুরুর সঙ্গে নেই। ভুল ভেবেছিলাম। অতিরিক্ত সময়ে সনিদের ক্লান্ত দেখাচ্ছিল বেশি। স্টপারে মোহনবাগানের এদুয়ার্দো পেরেইরার চোট পেয়ে বাইরে চলে যাওটাও ফ্যাক্টর হয়ে গেল শেষ পর্যন্ত।

জেজে লালপেখলুয়া বা প্রবীর দাশকে নামিয়ে মোহনবাগান কোচ তাঁর রিজার্ভ বেঞ্চের অস্ত্রগুলো ঠিক ঠাক প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু যেটা সঞ্জয় পারেনি তা হল, ড্রেসিংরুমে ছেলেদের বোঝাতে পারেনি, ‘‘ডার্বি জেতাটা ভুলে যাও। এটা ফাইনাল। অন্য ম্যাচ। মরিয়া মনোভাব নিয়ে ঝাঁপাও।’’ এখানেই সঞ্জয় ব্যর্থ। আবার বলছি, আমার অন্তত মনে হয়েছে, এদিনের টিমটা কুখ্যাত আত্মবিশ্বাসের স্বীকার। আই লিগে রানার্স, ফেড কাপে রানার্স, এ এফ সি কাপ থেকে ছিটকে যাওয়া। মরসুমে একটা ট্রফি এল না মোহনবাগান তাঁবুতে। সদস্য সমর্থকদের কাছে ট্রফি জয়ই আসল। ভাল খেলা বা রানার্স হওয়াকে কেউ গুরুত্ব দেয় না।

Mohun Bagan BFC Albert Roca Strategy Fed Cup Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy