আইপিএলের নতুন অশ্বিন। রবিবার টিম হোটেলে মুরুগন অশ্বিনের ছবি তুলেছেন গৌতম ভট্টাচার্য।
প্রশ্ন: আপনি নিশ্চয়ই জানেন দুই অশ্বিনে ক্রমাগত গুলিয়ে যাচ্ছে। এমনও হয়েছে সিনিয়র অশ্বিনকে টুইটারে আপনার বোলিং হিসেব তুলে এনে বিদ্রুপ করছে জনৈক ফলোয়ার।
মুরুগন: জানি গুলোচ্ছে। কিন্তু তামিলনাড়ুতে কোনও সমস্যা হয় না। ওরা আলাদা করেই আমাদের চেনে।
প্র: আপনি চেন্নাইয়ে কোথায় থাকেন?
মুরুগন: টি নগরে। জায়গাটার নাম মামব্লাম।
প্র: আর রবি অশ্বিন?
মুরুগন: ওয়েস্ট মামব্লাম।
প্র: বাবা, থাকার জায়গাতেও মিল!
মুরুগন: হ্যাঁ (হাসি)।
প্র: বাট আসল জায়গাটা আলাদা। সিনিয়র অশ্বিন অফ স্পিনার। আপনি লেগ স্পিনার।
মুরুগন: ইয়েস।
প্র: আচ্ছা অশ্বিনের ক্যারম বলটা কোনও দিন অনুকরণের চেষ্টা করেছেন?
মুরুগন: ওটা আমার দ্বারা হবে না। চেষ্টা যে করিনি নয়। কিন্তু ওই ডেলিভারিটার জন্য শক্ত লম্বা আঙুল দরকার হয়। কারণ, বলটাকে পুশ করতে হয় জোরে। ওই লম্বা, শক্ত আঙুল আমার নেই।
প্র: আইপিএল নিলামের আগে আপনাকে কেউ চিনত না। নিলামে আপনার বেস প্রাইসও ছিল মাত্র ৪৫ লাখ টাকা। অথচ আপনি কি না বিক্রি হলেন সাড়ে চার কোটি টাকায়। সে দিন অকশনটা টিভিতে দেখছিলেন?
মুরুগন: হ্যাঁ বাড়িতে বসে আমি আর বাবা দেখছিলাম। চোখের সামনে দর এতটা বেড়ে যেতে দেখে হা হয়ে গেছিলাম। তার পরই মনে হল আমার দায়িত্ব বেড়ে গেল। আমাকে আরও ভাল বোলিং করতে হবে। আরও অস্ত্র যোগ করতে হবে আমার প্যাকেজে।
প্র: কেমন অস্ত্র?
মুরুগন: এমন কোনও ডেলিভারি যা ব্যাটসম্যানের মনে একটা জাদুর ইমপ্যাক্ট নিয়ে আসবে যে, প্রস্তুতিতেও এই ডেলিভারি রোখা যাবে না।
প্র: লেগ স্পিনার হিসেবে আদর্শ কে?
মুরুগন: অবশ্যই শেন ওয়ার্ন।
প্র: ভারতীয় দলে যে কোনও ফর্ম্যাটে দ্রুত ঢুকে পড়া অবশ্যই পরের লক্ষ্য?
মুরুগন: নিশ্চয়ই, ইন্ডিয়ার জার্সিটা সব কিছু।
প্র: কখনও মনে হয় যে, ইন্ডিয়ার হয়ে আমি সেই ডেলিভারিটা করছি যা গ্যাটিংকে খেলতে হয়েছিল ওয়ার্নের বিরুদ্ধে। লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ পড়া বল এমন জায়গা থেকে স্পিন করে ঢুকেছিল যা ডান হাতি ব্যাটসম্যানের ব্লাইন্ড জোন।
মুরুগন: আরে ওটা তো স্বপ্নের ডেলিভারি। রিস্টের কি অসম্ভব মোচড় আর গায়ের জোর দরকার ওটা করতে। ট্যালেন্টটা বাদই দিচ্ছি। ওর অর্ধেক রাস্তাও যদি যেতে পারি দারুণ লাগবে। ওই যে বললাম চেষ্টা করছি আমার মতো করে একটা ম্যাজিক বল যদি তৈরি করতে পারি।
প্র: আজ কেকেআর। কী মনে হচ্ছে?
মুরুগন: ভিডিওতে ভাল করে দেখেছি ওদের ব্যাটসম্যানদের। অবশ্যই ব্যাটসম্যানভিত্তিক নির্দিষ্ট প্ল্যানিং আছে। কিন্তু সেগুলো তো আর শেয়ার করা সম্ভব নয়।
প্র: ধোনি দেখা যাচ্ছে আপনাকে খুব ব্যাক করছেন। কী বলেন উনি মাঠের মধ্যে?
মুরুগন: বোঝান কী ভাবে নিজেকে অ্যাডজাস্ট করব। কোন লাইনে ঠিক এই মুহূর্তে আমার বল করা উচিত। কী কী ভেরিয়েশন আনা উচিত।
প্র: এই চারটে ম্যাচ ধোনির অধীনে খেলে কী শিখলেন?
মুরুগন: শিখলাম ওর সবচেয়ে বড় দিক হল ভেতরের ঠান্ডা ভাবটা রেখে দিতে পারা। ক্যাপ্টেনের ঠান্ডা থাকাটা বোলারদেরও হেল্প করে।
প্র: কিন্তু এবি ডে’ভিলিয়ার্স আর বিরাট যখন আপনাকে মারছিলেন তখন তো আপনাকে পুণে মাঠে বিভ্রান্তই দেখাচ্ছিল। ঠান্ডা মোটেও নয়।
মুরুগন: আগের ওই ম্যাচটা থেকে অনেক শিখেছি যে, বড় ব্যাটসম্যান কী ভাবে ক্রিজ ব্যবহারের অদলবদলে আপনাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তবে ক’টা কথা আমি বলতে চাই, ডে’ভিলিয়ার্স আমার বিরুদ্ধে যে ফার্স্ট সুইপটা মেরেছিল সেটা কিন্তু ফিল্ডারের হাতে সোজা যাওয়ার কথা ছিল। ঠিক সেই সময় বইতে থাকা একটা ক্রশউইন্ড বলটাকে ঘুরিয়ে দেয়। আমি কোনও অজুহাত দিচ্ছি না কিন্তু ক্রিকেট কখনও নির্মম ভাগ্যেরও খেলা। ওই স্ট্রোকটায় এবি আউট হয়ে গেলে ম্যাচ কখন ঘুরে যায়।
প্র: আর একটা কথা আগেই জিজ্ঞেস করা উচিত ছিল। আপনি নাকি সিএসকে-র নেট বোলার ছিলেন। সেখান থেকেই প্রথম ধোনির নজরে পড়েন।
মুরুগন: কিছুটা সত্যি, পুরোটা নয়। ধোনিদের নেটে আমি দু’বছর বল করেছিলাম এটা ঠিক। ওর কাছে গিয়ে নিজের দুর্বলতা কী সেটা জানতে চেয়েছিলাম এটাও ঠিক। কিন্তু আমি তো দু’বছর তামিলনাড়ুর হয়ে রঞ্জিও খেলেছি। বলতে পারেন আমার ব্রেকটা আসার জন্য আমায় এই বছর বিজয় হাজারে ট্রফি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। ওটাতে ভাল পারফরম্যান্সের পরেই বলতে পারেন আমি সবার নজরে পড়ি।
প্র: আইপিএলে টপ উইকেট শিকারির মধ্যে আপনি। এই যে উড়ে এসে একেবারে খবরের শিরোনামে। কখনও কি মনে হয়েছে স্বপ্ন দেখছি না সত্যি, নিজেকে চিমটি কেটে দেখি?
মুরুগন: ইয়েস মাঝেমাঝে অনুভবটা ঠিক তাই যে স্বপ্ন দেখছি না তো?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy