Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মেসি-দি’মারিয়ার দাপটে শেষ আটে আর্জেন্তিনা

অনবদ্য। অসাধারণ। আর্জেম্তিনার সাত ও দশ নম্বরের জন্য এই দুটো শব্দই বোধহয় প্রযোজ্য। সাত মানে অ্যাঞ্জেল দি’মারিয়া। দশ মানে লিওনেল মেসি। যে জুটি বর্তমানে উপহার দিচ্ছে অনবদ্য আক্রমণাত্মক ফুটবল। যে জুটি কঠি‌ন জিনিসগুলোকেও সহজ করে তুলছে। শ‌নিবার রাতে জামাইকার বিরুদ্ধেও সেই নির্দশন পাওয়া গেল। জামাইকাকে ১-০ হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল আর্জেন্তিনা। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ জামাইকার দুর্বল ডিফেন্স নাস্তানাবুদ করে ছাড়‌‌ল মেসি-দি’মারিয়া জুটি।

গোলের পর ইগুয়াইনের উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।

গোলের পর ইগুয়াইনের উচ্ছ্বাস। ছবি: রয়টার্স।

সোহম দে
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৫ ০৯:৫১
Share: Save:

অনবদ্য। অসাধারণ। আর্জেম্তিনার সাত ও দশ নম্বরের জন্য এই দুটো শব্দই বোধহয় প্রযোজ্য। সাত মানে অ্যাঞ্জেল দি’মারিয়া। দশ মানে লিওনেল মেসি। যে জুটি বর্তমানে উপহার দিচ্ছে অনবদ্য আক্রমণাত্মক ফুটবল। যে জুটি কঠি‌ন জিনিসগুলোকেও সহজ করে তুলছে। শ‌নিবার রাতে জামাইকার বিরুদ্ধেও সেই নির্দশন পাওয়া গেল। জামাইকাকে ১-০ হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল আর্জেন্তিনা। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ জামাইকার দুর্বল ডিফেন্স নাস্তানাবুদ করে ছাড়‌‌ল মেসি-দি’মারিয়া জুটি।

খাতায়কলমে সবাই জানত কোন দল ‘ফেভারিট।’ জামাইকার মতো দুর্বল দলের বিরুদ্ধে খেলতে নামলেও, ইগুয়াইন-মেসি-দি’মারিয়া-পাস্তোরেকে নিয়ে শক্তিশালী ফরোয়ার্ড ‌‌লাইন সাজান মার্টিনো। প্রথমার্ধের শুরুর থেকেই আক্রমণের ঝড় তোলে আর্জেন্তিনা। মেসির পাসে বল ঠিক করে কন্ট্রোল না করতে পারায় গোলের সু্যোগ নষ্ট করেন ইগুয়াইন। যদিও তার কিছু ক্ষণ পরেই মেসি-দি’মারিয়ার কম্বিনেশনে আর্জেন্তিনাকে ১-০ এগিয়ে দেন ইগুয়াইন। মুভটা শুরু করেন মেসি। যার পাস পেয়ে দি’মারিয়া সাজিয়ে দেন ইগুয়াইনকে। আর এ বার নাপোলি ফরোয়ার্ড কো‌নও ভুল করেননি। বিশ্বমানের কোনও স্ট্রাইকারের মতোই ইগুয়াইন জালে বলটা জড়িয়ে দেন। ৮২ শতাংশ পজেশন রেখে আর্জেন্তিনা সাত-আট গোলেও জিততে পারত। জামাইকা তো ‘পার্ক দ্য বাস’ করে দিয়েছিল। দশ জনকেই নীচে নামিয়ে এনেছিল। আর্জেন্তিনার কাজ ছিল দশ জনের মধ্যেও ফাঁকা জায়গা খোঁজা। আর মেসি-দি’মারিয়ার মতো ফুটবলার থাকা মানে সুঁচের মধ্যেও বল গলিয়ে দিতে পারবেন। আর সেটাই হল। সু্যোগের পর সু্যোগ তৈরি করলেন। মেসি যেমন সুইচ প্লে করে ফুলব্যাকদের আক্রমণে নিয়ে আসলেন। দি’মারিয়া আবার গতি দিয়ে প্রতি আক্রমণ সাজাতে শুরু করলেন। জামাইকার কর্নার কিক থেকে বল পেয়ে একক দৌড়েই প্রায় গোল করে দিচ্ছিলেন দি’মারিয়া। দুর্ভাগ্যবশত তাঁর লব ক্লিয়ার করে জামাইকা ডিফেন্স। আবার ইনসাইড কাট করে মেসির শট একটুর জন্য গোলের বাইরে চলে যায়।

বিরতির পরেও ছবি পাল্টায়নি। দি’মারিয়ার একটা শট গিয়ে লাগে বারপোস্টে। দেশের হয়ে নিজের একশোতম ম্যাচে আবার মেসির নেওয়া একটা ফ্রি-কিক জামাইকা গোলকিপার সেভ করেন। তবে আক্রমণের পর আক্রমণ তৈরি করেও স্কোর ১-০ থাকে। যদিও পুরো খেলাটাই হয় জামাইকার হাফে। আর্জেন্তিনা গোলরক্ষক সের্জিও রোমেরোকে খুব বেশি কিছু করতে হয়নি। ম্যাচের শেষের দিকে দু’একবার জামাইকা সাহস করে একটু আক্রমণ করলেও গোটা ম্যাচ আরাম করেই কাটায় আর্জেন্তিনা রক্ষণ।

জামাইকার বিরুদ্ধে মেসি-দি’মারিয়া জুটির দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের রহস্য কী?

প্রথমত, দু’জনেই বলের উপর খুব দক্ষ। দ্বিতীয়ত, দু’জনেই স্কিল আর গতির মিশেল। একে অপরের সঙ্গে ওয়াল পাস করতে ওস্তাদ। তৃতীয়ত, একে অপরের পজিশন সম্বন্ধেও সচেতন। মেসি যখন উইংয়ে যাচ্ছেন, দি’মারিয়া নামছেন মিডফিল্ডে। আবার দি’মারিয়া উইংয়ে গেলে মেসি ডিপে চলে আসছেন।

আর্জেন্তিনা কোয়ার্টারে উঠে গেলেও প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে এতগুলো সু্যোগ তৈরি করেও মাত্র একটা গোল হল কেন? সেট পিস থেকেই বা একটাও ভাল সু্যোগ কেন তৈরি করতে পারল না মার্টিনোর দল? তবে এতগুলো প্রশ্নের মধ্যে একটা উত্তর আর্জেন্তিনা সমর্থকরা ঠিকই পেয়ে গেলে‌ন – ১৯৯৩-র পরে কোপা আমেরিকা খরা কাটাতে হলে দলের সাত ও দশ নম্বরকে সেরা ফর্মে থাকতেই হবে।

অন্য ম্যাচে আবার উরুগুয়ের সঙ্গে ১-১ ড্র করে শেষ আটে উঠল প্যারাগুয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE