E-Paper

বিলি জিন-ববি দ্বৈরথের স্মৃতি ফেরালেন সাবালেঙ্কা ও কিরিয়স 

ঝলমলে পোশাকে সাবালেঙ্কা গ্যালারিতে আবির্ভূত হতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন দর্শকরা। নৃত্যের তালে তালে সাবালেঙ্কা ধীরে ধীরে নেমে যান কোর্টে।

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৬
আকর্ষণ: অভিনব ম্যাচের পরে ট্রফি হাতে জয়ী নিক কিরিয়স (ডান দিকে) ও আরিনা সাবালেঙ্কা।

আকর্ষণ: অভিনব ম্যাচের পরে ট্রফি হাতে জয়ী নিক কিরিয়স (ডান দিকে) ও আরিনা সাবালেঙ্কা। ছবি: রয়টার্স।

বিলি জিন কিং হতে পারলেন না বিশ্বের এক নম্বর আরিনা সাবালেঙ্কা! ১৯৭৩ সালে ববি রিগসকে অভিনব ১ লক্ষ মার্কিন ডলারের প্রদর্শনী (ব্যাটল অব সেক্সেস) ম্যাচে ৬-৪, ৬-৩, ৬-২ গেমে হারিয়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন বিলি জিন কিং। কিন্তু ৫২ বছর পরে ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি রোনাল্ডো নাজ়ারিয়োর সামনে সাবালেঙ্কা ৩-৬, ৩-৬ হারলেন ২০২২ সালে উইম্বলডনের ফাইনাল খেলা নিক কিরিয়সের বিরুদ্ধে।

সাবালেঙ্কা-কিরিয়স দ্বৈরথকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরেই উন্মাদনা তুঙ্গে ছিল টেনিসপ্রেমীদের মধ্যে। কিরিয়সের উদ্দেশে সাবালেঙ্কা হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ওকে নাজেহাল করে ছাড়ব।’’ কিরিয়সের জবাব ছিল, ‘‘সাবালেঙ্কা আমাকে হারাতে পারবে না। আমাকে নিজের ১০০ শতাংশ দিতে হবে এই ম্যাচ জেতার জন্য, কেউ কি বিশ্বাস করবে?’’

ঝলমলে পোশাকে সাবালেঙ্কা গ্যালারিতে আবির্ভূত হতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন দর্শকরা। নৃত্যের তালে তালে সাবালেঙ্কা ধীরে ধীরে নেমে যান কোর্টে। ম্যাচের প্রথম পয়েন্ট নেন কিরিয়স। দ্রুত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে সাবালেঙ্কা ৩০-১৫ এগিয়েও গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। ৩-৬ হারলেন তিনি। দ্বিতীয় সেটেও ৩-৬ হারেন সাবালেঙ্কা। ম্যাচের পরে যদিও জানালেন, ফের কিরিয়সের বিরুদ্ধে খেলতে চান। তিনি বলেছেন, ‘‘দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। আমার মনে হয় দারুণ লড়াই করেছি। কিরিয়স সমস্যায় পড়েছিল। প্রচণ্ড ক্লান্তও হয়ে গিয়েছিল।’’ আরও বলেছেন, ‘‘খেলার মান খুব ভাল ছিল। আমি একাধিক দুর্দান্ত শট খেলেছি, নেটের কাছে পৌঁছেছি, ড্রপ শটও খেলেছি।’’ এর পরেই হাসতে হাসতে যোগ করেছেন, ‘‘পরের বার যখন কিরিয়সের বিরুদ্ধে আমি খেলব, ওর কৌশল, শক্তি এবং দুর্বলতা সম্পর্কে আগেই জেনে যাব। আমি সব সময় নিজেকে পরীক্ষার সামনে ফেলতে পছন্দ করি। এই কারণেই আবার কিরিয়সের বিরুদ্ধে খেলতে চাই।’’

অভিনব এই ম্যাচ হয়েছে তিন সেটের। টাইব্রেকার ছিল ১০ পয়েন্টের। তবে সাবালেঙ্কা ও কিরিয়সের কোর্টের আয়তন অবশ্য এক ছিল না। আয়োজকেরা জানিয়ে ছিলেন, পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে মহিলা খেলোয়াড়েরা কোর্টে নড়াচড়ার গতি পুরুষদের চেয়ে ৯ শতাংশ কম থাকে। এই কারণেই সাবালেঙ্কার কোর্টের আয়তন ছিল কিরিয়সের চেয়ে ৯ শতাংশ ছোট। দুই তারকার কোর্টের আয়তন সমান না হওয়া নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কেন বাড়তি সুবিধে দেওয়া হল সাবালেঙ্কাকে?

১৯৭৩ সালের রিগস-বিলি জিন কিং দ্বৈরথ নিয়ে আবার বিতর্কও কম হয়নি। অভিনব এই ম্যাচের আগে মার্গারেট কোর্টকে ৬-২, ৬-১ হারিয়েছিলেন রিগস। এর পরেই বিলি জিন কিংয়ের কাছে তাঁর হারকে অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখেন। রিগসের প্রয়াণের অনেক বছর পরে ২০১৩ সালে ইএসপিএনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিলি জিন কিংয়ের বিরুদ্ধে ইচ্ছে করেই হেরেছিলেন রিগস। ব্রিটিশ টেনিস তারকার এক ঘনিষ্ঠ দাবি করেছিলেন, একটি মাফিয়া গোষ্ঠীর কাছ থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না রিগস। এই কারণেই নাকি বিলি জিন কিংকে ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। যদিও এই অভিযোগ সত্যি কি না কখনওই প্রমাণ হবে না। মরুশহরে রবিবার সাবালেঙ্কা জিতলেও হয়তো নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হত!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tennis Aryna Sabalenka nick kyrgios

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy