Advertisement
E-Paper

‘বিশ্বকাপের টিকিটটা এখনই নিশ্চিত করে ফেললেন কেদার!’

ভারতীয় বোলিংয়ে আমার বিশেষ ভাবে ভাল লাগল কেদার যাদবকে। এই ছেলেটাকে ছোট থেকেই আমি চিনি। আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ক্রিকেটার শ্রীকান্ত কল্যাণী।

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০০
সফল: কেদারের তিন উইকেট। কুলদীপ তুললেন বাবর আজমকে। স্পিনের জোড়া ফলায় বিদ্ধ পাক। ছবি: এএফপি।

সফল: কেদারের তিন উইকেট। কুলদীপ তুললেন বাবর আজমকে। স্পিনের জোড়া ফলায় বিদ্ধ পাক। ছবি: এএফপি।

হংকংয়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রোহিত শর্মার ভারত ৩৫ ওভারের আগে কোনও উইকেট পায়নি। তাই বুধবারের পাকিস্তান ম্যাচের আগে অনেকেই আশঙ্কায় ভুগছিলেন।

আমার মন বলছিল, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অন্য ক্রিকেট খেলবেন রোহিত শর্মারা। কারণ হংকংয়ের বিরুদ্ধে পুরো শক্তি না প্রয়োগ করে তা পাকিস্তানের জন্য বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তাঁরা। যে হংকংয়ের বিরুদ্ধে প্রথম উইকেট নিতে ভারতকে ১৭৪ রান খরচ করতে হয়েছে, সেখানে পাকিস্তান অলআউট ১৬২ রানে। আর এত কম রানে পাকিস্তানকে বেঁধে রেখেই ম্যাচের অর্ধেক পকেটে পুরে নিয়েছিল ভারত।

ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মা শিখর ধওয়নের দাপটে পাকিস্তানকে আট উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির হারের বদলা নিল ভারত। গত বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তানের পেসার মহম্মদ আমির ভারতকে শেষ করে দিয়েছিলেন। এ দিন কিন্তু সেই আমির বা নবাগত পেসার উসমান খান কাউকেই মাথায় চড়তে দেননি রোহিত শর্মা বা শিখর ধওয়ন। এর একটাই কারণ, ভারতীয় বোলারদের দাপটে স্কোর বোর্ডে বড় রান যোগ করতে পারেননি পাক ব্যাটসম্যানরা। তাই চিন্তুমুক্ত হয়েই খেলতে পেরেছেন ভারতের ওপেনিং জুটি।

সেরা: ৩ উইকেট ভুবির। ছবি: এপি।

এই পাকিস্তান দলটার বড় কোনও ব্যাটিং চরিত্র নেই। ব্যতিক্রম বাবর আজম (৪৭)। তিন রানে দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে যে ভাবে তিনি শোয়েব মালিককে নিয়ে পাল্টা লড়াই শুরু করেছিলেন তা সমীহ করার মতো। ভারতীয় বোলিংয়ে আমার বিশেষ ভাবে ভাল লাগল কেদার যাদবকে। এই ছেলেটাকে ছোট থেকেই আমি চিনি। আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ক্রিকেটার শ্রীকান্ত কল্যাণী। যিনি আমার নেতৃত্বে রঞ্জি ট্রফিতে খেলেছেন। কেদার এ দিন নয় ওভার বল করে ২৩ রানে তিন উইকেট পেলেন। বুঝলাম আইপিএলের পরে নেটে নিজের বোলিং নিয়ে খেটেছেন কেদার। তার ফল পাচ্ছেন এখন।

ওঁর বোলিংটা লাসিথ মালিঙ্গার মতোই সাইডআর্মের স্পিনিং রূপ। সব সময় স্টাম্প টু স্টাম্প বল করেন। ফলে ব্যাটসম্যান ওঁকে চাইলেই মারতে পারবেন না। একটা বল কেদার অফস্টাম্পের বাইরে করে ব্যাটসম্যানকে ড্রাইভ বা স্কোয়ার কাট মারতে প্রলুব্ধ করেন। আর সেটা করতে গিয়েই ব্যাটসম্যান আউট হন। এ দিন সে ভাবেই আউট হলেন পাকিস্তানের মারকুটে ব্যাটসম্যান আসিফ আলি। এই পারফরম্যান্সের পরে বলতেই হচ্ছে, বিশ্বকাপের টিকিট নিজের পকেটে ভরে নিলেন কেদার।

আগেও বলেছি, এখনও বলব ভুবনেশ্বর কুমার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে খেলতে নামলে অনেক তাবড় প্রতিপক্ষই চাপে পড়ে যাবে। এ দিন যেমন বল করলেন ভুবি। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে সাত ওভারে ১৫ রান দিয়ে নিয়ে গেলেন তিন উইকেট। পাকিস্তানকে শুরুতেই ধাক্কাটা দিয়েছিলেন তিনিই। প্রায় এক বছর আগে ভারতের বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাক ওপেনার ফখর জ়ামান শতরান করে ম্যাচ নিয়ে গিয়েছিলেন ভারতের কাছ থেকে। কিন্তু আমি এখনও মনে করি, এই সে দিন যশপ্রীত বুমরা ‘নো বল’ না করলে ফখর বড় রান পেতেন না। তা ছাড়া ফখরকে শরীর লক্ষ্য করে বল করলে তিনি খেলতে পারেন না। এ দিন শুরু থেকেই সেই কাজটা করে যাচ্ছিলেন ভুবনেশ্বর এবং বুমরা। যে নয় বল খেলেছেন ফখর, তার মধ্যে সাতটিই এসেছিল শরীর লক্ষ্য করে। হতাশায় ব্যাট চালিয়ে কোনও রান না করেই ক্যাচ তুলে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি। সব শেষে একটাই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। দীনেশ কার্তিক খেলছেন। কিন্তু কে এল রাহুল কোথায়?

স্কোরকার্ড

পাকিস্তান ১৬২ (৪৩.১)
ভারত ১৬৪-২ (২৯)


পাকিস্তান রান বল
ইমাম-উল ক ধোনি বো ভুবনেশ্বর ২ • ৭
ফখর ক চহাল বো ভুবনেশ্বর ০ • ৯
বাবর আজ়ম বো কুলদীপ ৪৭ • ৬২
শোয়েব মালিক রান আউট রায়ডু ৪৩ •৬৭
সরফরাজ ক মণীষ বো কেদার ৬ • ১২
আসিফ ক ধোনি বো কেদার ৯ • ১০
শাদাব খান স্টা ধোনি বো কেদার ৮ • ১৯
ফাহিম ক ধওয়ন বো বুমরা ২১ • ৪৪
মহম্মদ আমির ন. আ. ১৮ • ২৬
হাসান ক কার্তিক বো ভুবনেশ্বর ১ • ৩
উসমান খান বো বুমরা ০ • ১
অতিরিক্ত ৭
মোট ১৬২ (৪৩.১)
পতন: ১-২ (ইমাম-উল-হক, ২.১), ২-৩ (ফখর, ৪.১), ৩-৮৫ (বাবর, ২১.২), ৪-৯৬ (সরফরাজ, ২৪.৫), ৫-১০০ (শোয়েব, ২৬.৬), ৬-১১০ (আসিফ, ২৮.১), ৭-১২১ (শাদাব, ৩২.৬), ৮-১৫৮ (ফাহিম, ৪১.১), ৯-১৬০ (হাসান, ৪২.১), ১০-১৬২ (উসমান, ৪৩.১)।
বোলিং: ভুবনেশ্বর কুমার ৭-১-১৫-৩, যশপ্রীত ৭.১-২-২৩-২, হার্দিক পাণ্ড্য ৪.৫-০-২৪-০, যুজবেন্দ্র চহাল ৭-০-৩৪-০, কুলদীপ যাদব ৮-০-৩৭-১, অম্বাতি রায়ডু ০.১-০-০-০, কেদার যাদব ৯-১-২৩-৩।

ভারত রান বল
রোহিত শর্মা বো শাদাব ৫২ • ৩৯
ধওয়ন ক বাবর বো ফাহিম ৪৬ •৫৪
অম্বাতি রায়ডু ন. আ. ৩১ •৪৬
দীনেশ কার্তিক ন. আ. ৩১ •৩৭
অতিরিক্ত ৪
মোট ১৬৪-২ (২৯)
পতন: ১-৮৬ (রোহিত, ১৩.১), ২-১০৪ (ধওয়ন, ১৬.৩)।
বোলিং: মহম্মদ আমির ৬-১-২৩-০, উসমান খান ৪-০-২৭-০, হাসান আলি ৪-০-৩৩-০, ফাহিম আশরফ ৫-০-৩১-১, শাদাব খান ১.৩-০-৬-১, ফখর জ়ামন ৬.৩-০-২৫-০, শোয়েব মালিক ২-০-১৯-০।

৮ উইকেটে জয়ী ভারত
ম্যাচের সেরা ভুবনেশ্বর কুমার

Cricket Kuldeep Yadav Kedar Jadhav Asia Cup 2018 কেদার যাদব কুলদীপ যাদব
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy