কোহালিদের প্রশংসায় মুখর অজি মিডিয়াও। ছবি: এএফপি।
ইতিহাস! হ্যাঁ, ইতিহাস তো বটেই কেউ কেউ ঘটনাটিকে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন লোকগাথাও বলছেন। এমনকি, স্বচ্ছন্দে রূপকথা বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। বিরাট কোহালিদের অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে গিয়ে টেস্ট সিরিজ ছিনিয়ে আনাটা গোটা ক্রিকেট দুনিয়ায় প্রবলভাবে বন্দিতও হচ্ছে।
এই প্রথম কোনও এশীয় দেশ অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জিতে দেশে ফিরছে। সুতরাং, ক্রিকেট বিশ্বে একটা ঝাঁকুনি যে লাগবেই এতে আর আশ্চর্য কী! বিরাট কোহালিদের এই পুরুষকারের জয় নিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমই শুধু উদ্বেল তা কিন্তু নয়। অজি মুলুকেও টিম ইন্ডিয়ার অস্ট্রেলীয় বধ নিয়ে রীতিমতো সাড়া পড়ে গিয়েছে।
স্যর ডন ব্র্যাডম্যানের দেশের প্রায় সমস্ত প্রথম সারির দৈনিকেই কোহালিদের বীরগাথা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছে। ‘ফক্স স্পোর্টস’ তাদের ওয়েবপেজে লিখেছে, “৭১ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান! অবশেষে অস্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরছে ভারত। সিডনি টেস্টের যবনিকা পড়ার আগেই নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল কারা সিরিজে শেষ হাসি হাসবে।’’ এর সঙ্গেই অজি অধিনায়ক টিম পেনকে উদ্ধৃত করে তারা লিখেছে, “ক্রিকেটের সমস্ত বিভাগেই সদ্য শেষ হওয়া সিরিজে অস্ট্রেলিয়াকে টেক্কা দিয়ে গিয়েছে ভারত।’’
আরও পড়ুন: কোথায় সমস্যা অস্ট্রেলিয়ার? টুইটারে তর্কে মাতলেন ভন-ওয়ার্ন-মার্ক ও
আরও পড়ুন: বিদেশের মাটিতে ভারতের সর্বকালের সেরা টেস্ট একাদশে কারা ঠাঁই পেলেন
‘এবিসি’ (অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন) পেনদের এই পরাজয়ের জন্য কাঠগড়ায় তুলেছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংকে। চার টেস্টের সিরিজে মাত্র দু’বার অজিরা তিনশো রনের গণ্ডি পেরোতে পেরেছে। তাদের প্রতিবেদনে এই দুর্বলতার কথাই আলাদা করে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান’ দৈনিকের আবার আক্ষেপ, এ বারের বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে টিম পেনদের দলে স্টিভ স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের না থাকা নিয়ে। তাঁদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “অজি দলে এই শূণ্যতার পাশাপাশিই ভারতীয় দলের হয়ে ব্যাটিংয়ে চেতেশ্বর পূজারা ও বোলিংয়ে যশপ্রীত বুমরা অনবদ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন।’’. অস্ট্রেলীয় বোলিংয়ে যে গভীরতা প্রত্যাশিত ছিল তারও অভাব ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।
‘দ্য ক্যানবেরা টাইমসে’ আবার অস্ট্রেলিয়ার এই বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দলের ব্যাটিং ব্যর্থতাকেই দায়ী করা হয়েছে। “গোটা সিরিজে একজনও অজি ব্যাটসম্যান শতরান করতে পারেননি। টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস না খেলতে পারাটা যে দলকে কতটা ডোবাতে পারে এই সিরিজ যেন তারই প্রমাণ।’’
‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’ পত্রিকাতেও কোহালিদে
এরই সঙ্গে কাগজটি তাদের নিজস্ব প্রতিবেদনে লিখেছে, “কোহালি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই দাবি করে রেখেছেন যে, আগামী দিনে ভারতই বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করবে। এই ঐতিহাসিক জয় যে আসলে ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন ভিত্তিপ্রস্তর রচনা করে দিল সেটাও বলতে ভোলেননি। আসলে বিরাট কোহালির দল এবার অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিল একটা লক্ষ্য নিয়ে। শুধুমাত্র অজি মুলুক থেকে অধরা টেস্ট সিরিজ জয়ই নয়, সার্বিকভাবে টেস্ট ক্রিকেটকে লুপ্তপ্রায় অবস্থা থেকে উদ্ধার করাও ছিল তাদের উদ্দেশ্য। কিন্তু, এটা করতে গেলে ওদের সবার আগে যেটা করতে হত সেটাই করে দেখিয়েছে কোহালিরা। ডাউন আন্ডারে গিয়ে ড্রাগন-বধ!’’
(আইসিসি বিশ্বকাপ হোক বা আইপিএল ,টেস্ট ক্রিকেট, ওয়ান ডে কিংবা টি-টোয়েন্টি। ক্রিকেট খেলার সব আপডেট আমাদের খেলা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy