অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে এ বার আসল চ্যালেঞ্জের সামনে শারাপোভা। -এএফপি
টুর্নামেন্টের মাঝপথে পৌঁছে তিন ঘটনায় সরগরম থাকল রবিবারের মেলবোর্ন পার্ক।
এক, নোভাক জকোভিচের ‘সেঞ্চুরি’।
দুই, বার্নার্ড টমিচের রজার-নিন্দা।
তিন, শেষ আটে সেরিনা বনাম শারাপোভা।
তিন নম্বরটা নিয়ে টেনিস মহলে প্রত্যাশা ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী। প্রথমটা নিয়ে আবার কাটাছেঁড়া চলল সবচেয়ে বেশি।
বিশ্বের এক নম্বর এবং গত বারের চ্যাম্পিয়ন জকোভিচ এ দিন যে সেঞ্চুরিটা করলেন, তা নিয়ে গর্ব করা যায় না। চব্বিশ ঘণ্টা আগে নিজের কলামে জকোভিচের কোচ বরিস বেকার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ফরাসি জিলে সিমঁর বিরুদ্ধে ম্যাচটা সার্ব মহাতারকার কঠিন পরীক্ষা হবে। কোচকে ঠিক প্রমাণ করতেই কি না কে যানে, এ দিন বিস্ময়কর একশো আনফোর্সড এরর এল বিশ্বের এক নম্বরের র্যাকেট থেকে!
অস্ট্রেলিয়ার এক নম্বর, তেইশ বছরের টমিচের এ দিনের ফেডেরার আক্রমণে সবচেয়ে তীক্ষ্ণ শব্দবাণটা ছিল, ‘‘ও নোভাকের ধারেকাছেও নেই।’’ সিমঁ কিন্তু শুধু ধারেকাছেই গেলেন না, জোকার সমর্থকদের মুখ শুকিয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়নকে চ্যালেঞ্জ করলেন পুরো পাঁচ সেট। রড লেভার এরিনায় চার ঘণ্টা বত্রিশ মিনিট লড়াইয়ের শেষে জকোভিচ জিতলেন ৬-৩, ৬-৭ (১-৭), ৬-৪, ৪-৬, ৬-৩। টানা সাতাশতম গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে স্বীকার করলেন ‘‘যা খেললাম তার চেয়ে বেশি খারাপ আর খেলা যায় না ভেবে আনন্দ হচ্ছে! ম্যাচটা ভুলতে চাই। কোনও রকমে জিতেছি। জিল দুর্দান্ত ছিল।’’ জকোভিচ যখন এক নাগাড়ে বলে চলেছেন, গ্যালারি থেকে উড়ে আসে, ‘‘ড্রপ শট আর নয়!’’ সাক্ষাৎকার থামিয়ে জোকার সেই দর্শককে আবার কথাটা বলতে বলেন। তিনি চেঁচান ‘‘ড্রপ শট আর নয়!’’ জকোভিচের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মেনে নিতে খুব খারাপ লাগছে, কিন্তু একদম ঠিক কথাটা বলেছেন।’’ তার পর ম্যাচে বারবার ড্রপ শট খেলতে গিয়ে ভুল করা নিয়ে বলেন, ‘‘কখনও কখনও বুদ্ধিটা জমে যায়!’’
কোয়ার্টার ফাইনালে জকোভিচের সামনে কেই নিশিকোরি। সপ্তম বাছাই জাপানি ৬-৪, ৬-২, ৬-৪ হারান ফরাসি জো উইলফ্রেড সঙ্গাকে।
ফেডেরার অন্য দিকে, রাজকীয় দাপটে পঁচিশ বছরের বেলজিয়ান ডেভিড গফিঁকে ৬-২, ৬-১, ৬-৪ চূর্ণ করে শেষ আটে টমাস বের্ডিচের সামনে। তবে সতেরো গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিককে বিশ্বের সতেরো নম্বরের সমালোচনা হজম করতে হল এ দিন!
ক’দিন আগে ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনালের আসরে ফেডেরার বলেছিলেন, ‘‘সেরা দশে ঢুকতে হলে টমিচকে সারা বছর আরও অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে। গত ক’মরসুম ধরেই শুনছি সেরা দশ ওর লক্ষ্য। কিন্তু তার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি।’’ পাল্টায় টমিচ বলেছেন, ‘‘ও যদি মনে করে আমি সেরা দশের ধারেকাছে নেই তা হলে রজারও এই মুহূর্তে নোভাকের টেনিসের ধারেকাছে আসে না।’’ শেষ আটে অ্যান্ডি মারের সামনে পড়া টমিচের আরও দাবি, ফর্মে খেললে তিনি সেরা আটের উপযুক্ত! মারে আবার শ্বশুর নাইজেল সিয়ার্সের সুস্থ হওয়ার খবর পেয়ে নতুন উদ্যমে প্র্যাকটিসে ফিরেছেন।
তবে শেষ আটের যে লড়াইয়ের বাজারদর চড়চড়িয়ে উঠছে, তাতে সেরিনা উইলিয়ামসের সামনে মারিয়া শারাপোভা। পাওয়ার এবং গ্ল্যামারে টেনিসের এই দুই সেরার যুদ্ধে ২০০৪ থেকে একচেটিয়া জিতছেন সেরিনা। শেষ সতেরো ম্যাচে যা হয়নি, সেটা মারিয়া এ বার করে দেখাবেন কি না, তা নিয়েই জল্পনা তুঙ্গে। এ দিন সুইস টিনএজার বেলিন্ডা বেনচিচকে ৭-৫, ৭-৫ হারাতে একুশটা এস মারেন পঞ্চম বাছাই রুশ সুন্দরী। যিনি চোট সারিয়ে দারুণ ফর্মে। সেরিনা আবার মার্গারিটা গাসপারিয়ানকে ৬-২, ৬-১ ঝেড়ে ফেলে কোর্টেই শোনেন পরের ম্যাচে সামনে মাশা। বিশ্বের এক নম্বর মেয়ের মন্তব্য, ‘‘তাই নাকি! কোনও ধারণা ছিল না। আমার হারানোর কিছু নেই। আমরা দু’জনেই নিজেদের সেরাটা দিচ্ছি। সব মিলিয়ে বেশ মজা হবে বলেই মনে হচ্ছে!’’
‘হারানোর কিছু নেই’ বললেও স্টেফি গ্রাফের ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম ছুঁতে সেরিনা যে মরিয়া, গোপন তথ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে সেরিনা পারেননি। অস্ট্রেলীয় ওপেনে মারিয়া তাঁর কাঁটা হন কি না, জানতে উদ্গ্রীব টেনিস বিশ্ব।
এরই মাঝে মিক্সড ডাবলসে লিয়েন্ডার পেজ-মার্টিনা হিঙ্গিস জিতলেন ৬-৩, ৭-৫। রোহন বোপান্না-ইয়ুং জান চ্যানও ৭-৫, ৬-১ জিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে। তবে পুরুষদের ডাবলসে রোপান্না-ফ্লোরিন মার্জিয়া তৃতীয় রাউন্ডে ছিটকে গেলেন ট্রিট হুই-ম্যাক্স মির্নির কাছে ৪-৬, ৩-৬ হেরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy