Advertisement
E-Paper

সুনীলদের জন্য আমরা তৈরি, বলছেন সেনাবাহিনীতে কাজ করা বাংলাদেশের গোলরক্ষক

এশিয়া-সেরা কাতারের বিরুদ্ধে খেলে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে রাণাদের।

কৃশানু মজুমদার

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ১০:৪৭
বাংলাদেশের শেষ প্রহরী রাণা।

বাংলাদেশের শেষ প্রহরী রাণা।

কাতারের বিরুদ্ধে ভারতের তারকা গোলকিপার গুরপ্রীত সিংহ সান্ধুর ‘চিনের প্রাচীর’ হয়ে ওঠা দেখে ফুটছেন আশরাফুল ইসলাম রাণা। গুরপ্রীতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে চান বাংলাদেশ রক্ষণের শেষ প্রহরী।

মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ। সে দিন দু’ দেশের গোলকিপারের কাছেই অগ্নিপরীক্ষা। সেই ম্যাচের বল গড়ানোর আগেই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের গোলকিপারের প্রতি প্রশংসা-শ্রদ্ধা উজাড় করে দিয়ে রাণা বলছেন, ‘‘ভারত-কাতার ম্যাচটা খুব ভাল করে দেখেছি। সে দিন গুরপ্রীত অসাধারণ খেলেছিল। দিনটা সব অর্থেই ছিল ওর। দারুণ পজিশন জ্ঞানের পরিচয় দিয়েছিল। কাতারের একের পর এক আক্রমণ গুরপ্রীতের হাতে এসে থেমে গিয়েছিল সে দিন। দুটো উইং থেকে যে বলগুলো ভাসানো হয়েছিল, সে গুলোও অসাধারণ দক্ষতায় বাঁচিয়েছিল গুরপ্রীত। বলতে পারেন গুরপ্রীতের খেলা দেখে আমি অনুপ্রাণিত।’’

পদ্মাপাড়ের ইংরেজ কোচ জেমি ডে শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিচ্ছেন। এই শহরের জলহাওয়ার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য অনেক আগেই জামাল ভুঁইয়া-রাণারা চলে এসেছেন ‘ফুটবলের মক্কা’য়। ভারতের দীঘল চেহারার গোলকিপার যেমন চিন্তা বাড়িয়েছেন বাংলাদেশের, তেমনই চিন্তা থাকছে সুনীল ছেত্রীকে নিয়েও। তাঁকে থামানোর ঘুঁটি সাজানোর কাজ শুরু করে দিয়েছেন জেমি। যুবভারতীর সবুজ গালচেতে রাণার পরীক্ষা নেবেন ভারত অধিনায়কও। পরিস্থিতির জন্য তৈরি বাংলাদেশের গোলকিপার। তিনি বলছিলেন, ‘‘সুনীল ছেত্রী দলে ফিরছে। তবে শুধু সুনীল নয়, ভারতের আরও কয়েক জন ফুটবলার রয়েছে, যাদের জন্য আমরা তৈরি হচ্ছি।’’

আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকাকে ফলো-অন করাল ভারত, দ্বিতীয় বলেই আউট মারক্রাম

২০১৫ থেকে জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত খেলছেন জিয়ানলুইগি বুফোঁর ভক্ত। জাতীয় দলের গোল আগলানোর সুযোগটাও নাটকীয় ভাবে এসে যায় তাঁর কাছে। স্মৃতিচারণ করে রাণা বলছিলেন, ‘‘আমি ২০০৩ সাল নাগাদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ফুটবল দলে ভর্তি হই। সেনাবাহিনীর কিছু ট্রেনিংও আমাকে নিতে হয়েছিল। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর হয়ে লাইবেরিয়ায় গিয়েছিলাম আমি। একজন সেনাকে যে কাজ করতে হয়, আমাকেও সেই কাজ করতে হয়েছিল লাইবেরিয়ায়। একদিন স্থির করলাম, সেনাবাহিনীর ফুটবল দলের চাকরি ছেড়ে দেব। তার পিছনে অবশ্য কারণ রয়েছে। জাতীয় দলের গোলকিপার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। কিন্তু, সেনাবাহিনীর ফুটবল দলে খেললে সেই স্বপ্নপূরণ হত না। কারণ সেনাবাহিনীর ফুটবল দল প্রিমিয়ার লিগে অংশ নেয় না, আন্তঃসেনাবাহিনী ফুটবল প্রতিযোগিতায় কেবল অংশ নেয়। প্রিমিয়ার লিগে না খেললে তো নির্বাচকদের চোখেও পড়া সম্ভব নয়। তাই ১০ বছর সেনবাহিনীর ফুটবল দলের হয়ে খেলার পরে আমি ঢাকা মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবে যোগ দিই। দুটো ম্যাচ খেলার পরেই জাতীয় দলে আমার ডাক পড়ে।’’ রাণার হাত ভরসা জোগাচ্ছে বাংলাদেশকে।

বাংলাদেশ জাতীয় দল।

এশিয়া-সেরা কাতারের বিরুদ্ধে খেলে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে রাণাদের। ইগর স্তিমাচের ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে মাণিকগঞ্জের ছেলে বলছেন, ‘‘ভারত ফুটবলে আগের থেকে অনেক উন্নতি করেছে। ২০১৫ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে গিয়েছি। তখনকার ভারত আর এই ভারতের মধ্যে অনেক পার্থক্য।’’

আরও পড়ুন: ঋদ্ধি আমাদের দলের সম্পদ, বলছেন অশ্বিন​

তা হলে কি ভারত এগিয়ে থেকেই শুরু করছে মঙ্গলবার? সতর্ক রাণা বলছেন, ‘‘ফুটবলের কথা আগাম কেউ বলতে পারে না। নির্দিষ্ট দিন যে ভাল খেলবে, তার জন্যই শেষ হাসি তোলা থাকবে।’’

হাসি মুখে নিয়েই কলকাতা থেকে দেশে ফিরতে চান বাংলাদেশের গোলকিপার। তার আগে পঞ্জাবতনয় গুরপ্রীতকে শুভেচ্ছা জানাতে চান তিনি। বিপক্ষের খেলোয়াড় হলেও সরু সুতোয় যে বাঁধা পড়ে গিয়েছেন দু’ জনে। বারের নীচে গুরপ্রীতের অসাধারণ হয়ে ওঠা তাই ছুঁয়ে যায় প্রতিবেশী দেশের গোলকিপারকেও।

Ashraful Islam Rana Bangladesh India FIFA World Cup Qualifier Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy