দীর্ঘ দিন পরে বিদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ খেলতে গিয়েছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক কালে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের যে পারফরমেন্স, তাতে সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল সমানে সমানে লড়াইটা অন্তত হবে। কিন্তু তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ, সবগুলো ম্যাচে হেরে হোয়াইটওয়াশের বিস্বাদ নিয়েই শেষ করতে হল। আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ হারল ৮ উইকেটে। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৪ সালের আগস্টে সর্বশেষ হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। মুশফিকের নেতৃত্বে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে অনুষ্ঠিত ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ হেরেছিল ০-৩ ব্যবধানে। এর পর মাশরাফির নেতৃত্বে ৭টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ, যার ৬টিতেই জয়ী লাল-সবুজের জার্সিধারীরা।
নেলসনের স্যাক্সটন ওভালেটসে টস জিতে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ।
২৩৬ রান করে ৯ উইকেটে।দুই ওপেনার তামিম-ইমরুল মিলে বড় জুটি গড়ন। কিন্তু কিছু পরই দেখা গেল দ্বিতীয় ম্যাচের পুনরাবৃত্তি! ১ উইকেটে ১০২ রান থেকে শেষ পর্যন্ত ২৩৬ রান করতে সক্ষম হলো সফরকারীরা! ৭৭ রানের মধ্যেই নেই ৭ উইকেট!
ইমরুল কায়েসকে দিয়েই দলীয় ১২৫ রানে শুরু হলো উইকেট পতন। স্যান্টনারের বলে নেইল ব্রুমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ৬২ বলে ৫ বাউন্ডারি এবং ১ ওভার বাউন্ডারিতে ৪৪ রান করা ইমরুল। এরপর সাব্বির রহমানকে সঙ্গী করে জুটি গড়ার চেষ্টা করছিলেন তামিম। কিন্তু একে একে বিদায় নিলেন সাব্বির, মাহমুদ উল্লাহ। দলের এমন অবস্থায় দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হলেন তামিম। ৮৮ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫৯ রান করে নিশামের বল নেইল ব্রুমের হাতে ধরা পড়লেন এই ড্যাশিং ওপেনার। এককথায় ধস নামল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে!
আরও পড়ুন: মেলবোর্নে নাটকীয় জয় ছিনিয়ে আনলেন স্টার্ক
১০২ রানের উদ্বোধনী জুটি থেকে হঠাৎ করেই দেখা গেল ৭ উইকেটে ১৭৯! স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সাব্বির (১৯), সাকিব (১৮), মোসাদ্দেক (১১) রান করলেন। আবারও ব্যর্থ হলেন মাহমুদ উল্লাহ রিয়াদ (৩)। আগের ম্যাচে ২ রান করা অভিষিক্ত তানভীর হায়দার আবারও সুযোগ পেয়েছেন একাদশে। কিন্তু করতে পারলেন মাত্র ৩ রান! রানের গতি বাড়াতে গিয়ে আউট হলেন অধিনায়ক মাশরাফি (১৪)। কিন্তু ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান নিজের কাঁধে দায়িত্বটা নিলেন। দারুণ চাপের সময় খেললেন ৪৪ রানের অসাধারণ এক ইনিংস!
গত ম্যাচে এই অভিষিক্ত তরুণের কল্যাণে শেষ পর্যন্ত ২৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। ম্যাট হেনরির বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফেরেন নুরুল হাসান। ৩৯ বলের ইনিংসটিতে তিনি ৩টি চার এবং ১টি ছক্কা মারেন তিনি।
আরও পড়ুন: কোহালির পাল্টার দিনে হাজির ‘সমর্থক’ ধোনি
হেসেখেলেই সে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ আশা খুঁজেছিল মুস্তাফিজুর রহমানের দিকে তাকিয়ে। নিজের প্রথম ওভারে একটি উইকেট তুলে নিয়ে সেই আশা জোরদারও করেছিলেন বাঁহাতি পেসার। নিজের পরের ওভারেও পেয়ে যেতে পারতেন আরেকটি উইকেট। কিন্তু প্রথম স্লিপে নেইল ব্রুমের সহজ একটি ক্যাচ মিস করেছেন ইমরুল কায়েস।
এর পর যেন বোলিং করতে ভুলে গেলেন বাংলাদেশের বোলাররা। অপর ওপেনার মার্টিন গাপটিল রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর দুর্দান্ত জুটি গড়েন নেইল ব্রুম এবং অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ১৭৯ রানের পার্টনারশিপ।
শেষ পর্যন্ত ব্রুমকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজই। কিন্তু শূন্য রানে জীবন পেয়ে ৯৭ রানের ইনিংস খেলে নিউজিল্যান্ডের জয়টা ততক্ষণে নিশ্চিতই করে ফেলেছিলেন ব্রুম। ব্যাটিং বিপর্যয় আর ক্যাচ মিসের খেসারত দিয়ে তৃতীয় ওয়ানডে বাংলাদেশ হেরে গেল ৮ উইকেটে। এড়াতে পারল না হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। গত দুটি সফরের মতো এবারও নিউজিল্যান্ডে গিয়ে সবকটি ওয়ানডে হারের হতাশায় ডুবতে হল বাংলাদেশকে।