Advertisement
১১ মে ২০২৪
Barcelona

গতিতেই বাজিমাত বায়ার্নের

শুক্রবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনার বিরুদ্ধে থোমাস মুলারদের দেখে ছ’বছর আগে বিশ্বকাপের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল।

ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

সুব্রত ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৪
Share: Save:

বিধ্বংসী বায়ার্ন মিউনিখ।

শুক্রবার রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনার বিরুদ্ধে থোমাস মুলারদের দেখে ছ’বছর আগে বিশ্বকাপের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। ব্রাজিলকে ৭-১ গুঁড়িয়ে দিয়েছিল জার্মানি। শুক্রবার রাতের নির্মমতা সব কিছু ছাপিয়ে গিয়েছে। গতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করল ব্যক্তিগত দক্ষতা।

বার্সেলোনার খেলার ধরন হচ্ছে লিয়োনেল মেসির নেতৃত্বে নিজেদের মধ্যে প্রচুর পাস খেলে আক্রমণে ওঠা। শুক্রবার ম্যাচের শুরু থেকেই তিকিতাকার ছন্দ নষ্ট করে দিয়েছিল বায়ার্নের ফুটবলারেরা। প্রচণ্ড গতিতে পুরো দলটাই আক্রমণে উঠে আসছিল। ফলশ্রুতি চার মিনিটেই রবার্ট লেয়নডস্কির সঙ্গে ওয়ান টাচ খেলে মুলার গোল করে ১-০ এগিয়ে দেয় বায়ার্নকে। গোল খেয়ে কিছুটা জ্বলে উঠেছিল মেসি-বাহিনী। জর্দি আলবার ক্রস বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজের গোলেই ঢুকিয়ে দেয় বায়ার্নের ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবা। মিনিট তিনেক পরে মেসির সেন্টার বায়ার্নের পোস্টে ধাক্কা খায়। এই জোড়া ধাক্কা যেন মুলার-লেয়নডস্কিদের আত্মসম্মানে আঘাত করে। এর পরে যা শুরু হল, তা ভয়ঙ্কর। ২১ মিনিটে ২-১ করল ইভান পেরিসিচ। ২৭ মিনিটে গোল সেয়াস ন্যাব্রি। ৩১ মিনিটে ফের গোল মুলারের। প্রথমার্ধেই ৪-১ এগিয়ে গেল বায়ার্ন।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় দ্বিতীয় পর্বের নাপোলির বিরুদ্ধে দুরন্ত খেলা বার্সেলোনার হঠাৎ কী হল? মেসিকেই বা কেন চেনা মেজাজে পাওয়া যায়নি? কারণ বায়ার্ন ম্যানেজার হান্স ফ্লিকের রণনীতি।

ম্যাচের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই গতিতে খেলল বায়ার্নের ফুটবলারেরা। আমার সব চেয়ে আকর্ষণীয় লেগেছে মেসিকে আটকানোর পরিকল্পনা। আগের ম্যাচে দেখেছিলাম, সর্বক্ষণ নাপোলির অন্তত দু’জন ফুটবলার বার্সা তারকার সঙ্গে ছায়ার মতো লেগে রয়েছে। বায়ার্ন কিন্তু তা করেনি। প্রথম থেকেই ওদের লক্ষ্য ছিল মেসির পাস লুইস সুয়ারেস, আর্তুরো ভিদাল, সের্খিয়ো বুস্কেৎসদের কাছে পৌঁছতে না দেওয়া একেবারে যুদ্ধের মতো। শত্রুপক্ষের সৈন্যদের কাছে গোলা-বারুদ পৌঁছনোর রাস্তা বন্ধ করে দাও, তা হলেই জয় নিশ্চিত। মেসি যখন দু’-তিন জনকে কাটিয়ে দেখবে, বল দেওয়ার কেউ নেই, তখন মানসিক ভাবে চাপে পড়ে যাবে। শুক্রবার রাতে এই চালেই বাজিমাৎ করল বায়ার্ন।

অবশ্য বার্সেলোনার রক্ষণের যা হাল, তাতে মেসিকে স্বাভাবিক খেলা খেলতে দিলেও কোনও সমস্যা হত না। বায়ার্নের আটটি গোলের জন্যই দায়ী বার্সার ডিফেন্ডারেরা।

বায়ার্নের কাছে পরে জেরার পিকে দেখলাম সরে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। আমার মতে, এই সিদ্ধান্তটা যদি ও আরও আগে নিত, তা হলে বার্সার এই দুর্ভোগ হত না। বায়ার্নের দ্বিতীয় গোলটার কথা মনে করুন। পেরিসিচকে বার্সার বক্সের মধ্যে পাস দেয় ন্যাব্রি। অথচ পিকে আটকানোর কোনও চেষ্টাই করল না। আধুনিক ফুটবলের প্রাথমিক শর্তই হল, রক্ষণ মজবুত করে আক্রমণে ওঠা। বিশেষ করে বিপক্ষ দলে যদি লেয়নডস্কি, মুলারদের মতো ফুটবলার থাকে। রক্ষণের উপরে যাতে চাপ না পড়ে তার জন্য মাঝমাঠের ফুটবলারদের দায়িত্ব নিতে হয়। বার্সার খেলায় কোনও পরিকল্পনারই ছাপ ছিল না। দল গঠনও অবাক করার মতো। নাপোলির বিরুদ্ধে কিকে সেতিয়েন মেসি, সুয়ারেসের সঙ্গে শুরু থেকেই রেখেছিলেন আতোয়াঁ গ্রিজ়ম্যানকে। অথচ শুক্রবার প্রথম একাদশে জায়গাই হল না ফরাসি স্ট্রাইকারের। বোতলবন্দি মেসি এবং সুয়ারেসকে আটকাতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়নি বায়ার্ন ডিফেন্ডারদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Champions League Barcelona Bayern Munich
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE