Advertisement
E-Paper

কমিশনের নতুন বাউন্সারে ফের যন্ত্রণার পিচে বোর্ড

বিশাখাপত্তনমে বিরাট কোহালিদের টেস্ট জয়ের পর ঘণ্টা তিনেকও কাটল না, নতুন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল ভারতের মাটিতে। যে যুদ্ধে দু’টো টিমের নাম মোটেও ভারত এবং ইংল্যান্ড নয়। ভারতীয় বোর্ড এবং লোঢা কমিশন। যেখানে প্রতিপক্ষ অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ডের চেয়ে অনেক, অনেক কঠিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৬
বোর্ড সচিব আর প্রেসিডেন্ট। কী আছে ভাগ্যে?

বোর্ড সচিব আর প্রেসিডেন্ট। কী আছে ভাগ্যে?

বিশাখাপত্তনমে বিরাট কোহালিদের টেস্ট জয়ের পর ঘণ্টা তিনেকও কাটল না, নতুন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল ভারতের মাটিতে।

যে যুদ্ধে দু’টো টিমের নাম মোটেও ভারত এবং ইংল্যান্ড নয়। ভারতীয় বোর্ড এবং লোঢা কমিশন। যেখানে প্রতিপক্ষ অ্যালিস্টার কুকের ইংল্যান্ডের চেয়ে অনেক, অনেক কঠিন। আর খেলাটাও ভারতীয় বোর্ডের পছন্দের সারফেসে নয়।

এক কথায়, ভয়াবহ সিমিং উইকেটে সোমবার বোর্ডকে ছুঁড়ে ফেলল লোঢা কমিশন!

দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে কমিশন পরিষ্কার বলে দিল, অনেক হয়েছে, আর নয়। ভারতীয় বোর্ড পদাধিকারীদের সময় বা সুযোগের বদলে এ বার সরাসরি হঠিয়ে দেওয়া হোক। বোর্ড প্রেসিডেন্ট থেকে সচিব, কোষাধ্যক্ষ— সবাইকে সরানো হোক একযোগে! শুধু তাই নয়, যে সব রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা লোঢা সংস্কার মানার কোনও ইচ্ছে দেখায়নি, ছুঁড়ে ফেলা হোক তাদের শীর্ষকর্তাদেরও। বোর্ড প্রশাসনের কাজকর্ম দেখার জন্য নিয়ে আসা হোক প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব জিকে পিল্লাইকে। যিনি বোর্ডের আর্থিক ব্যাপারস্যাপারের পুরোটা দেখবেন। দেখবেন, অবজার্ভার হিসেবে।

এমনিতে আগামী ৫ ডিসেম্বর লোঢা মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু গত ১৮ নভেম্বর পেশ করা স্ট্যাটাস রিপোর্টে বীতশ্রদ্ধ কমিশন বলে দেয় যে, পরিষ্কার সময়সীমা দেওয়া সত্বেও কোনও লাভ হয়নি। সংস্কার আমদানি নিয়ে বোর্ড একই রকম একগুঁয়ে থেকে গিয়েছে। যা ঠিক। কমিশন বলেছিল, ক্রিকেট প্রশাসনে সত্তর বছরের বেশি কেউ থাকতে পারবে না। বোর্ড মানেনি। কমিশন বলেছিল, ন’বছরের বেশি কেউ প্রশাসনে থাকতে পারবে না। বোর্ড মানেনি। কমিশন বলেছিল, কুলিং অফ পিরিয়ড। বোর্ড উপেক্ষা করেছে। কমিশন বলেছিল, এক রাজ্য এক ভোট। বোর্ড পাত্তাই দেয়নি। শেষ আদালত শুনানিতে বোর্ড আইনজীবী বলে এসেছিলেন যে, সদস্যদের বোঝানোর জন্য বোর্ডকে সময় দেওয়া হোক। রাজ্য সংস্থারা যাতে লোঢা সংস্কার মেনে নেয়, তার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে বোর্ড। নভেম্বরের গোড়ায় কমিশনের কাছে সংস্কার মানা নিয়ে হলফনামা পেশ করতে বলা হয়েছিল বোর্ডকে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর এবং সচিব অজয় শিরকে কমিশনের সঙ্গে দেখা করেন ঠিকই, কিন্তু দেখা করে একই কথা বলে আসেন। যে, রাজ্য সংস্থারা কেউ পূর্ণ সংস্কার মানতে ইচ্ছুক নয়।

যার পর এমন চরম রিপোর্ট। যেখানে বলে দেওয়া হয়, বোর্ড এবং রাজ্য সংস্থায় এমন প্রচুর পদাধিকারী আছেন, সুপ্রিম কোর্টের সংস্কার শর্ত অনুযায়ী যাঁদের থাকা উচিত নয়। তাঁদের পদ কেড়ে নেওয়া হোক। এটাও বলা হয় যে, আজ পর্যন্ত বিদর্ভ, ত্রিপুরা, রাজস্থান এবং হায়দরাবাদ জানিয়েছে তারা সংস্কার মানতে ইচ্ছুক। বাকিরা নয়। কমিশন পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, বোর্ড প্রশাসনের দৈনন্দিন খুঁটিনাটিতে তারা ঢুকতে চায় না। সে সব বোর্ড সিইও রাহুল জোহরি ও তাঁর ম্যানেজাররাই সামলাবেন। শুধু তাঁদের পথপ্রদর্শক হবেন প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রসচিব। বোর্ড সিইও কোনও পদাধিকারীর নির্দেশ শুনবেন না, চলবেন অবজার্ভারের কথামতো।

শোনা গেল, আগামী ৫ ডিসেম্বর নয়। নতুন পরিস্থিতিতে তার আগেই শুনানি হয়ে যেতে পারে। মামলার পিটিশনার আদিত্য বর্মা এ দিন ফোনে বললেন যে, এ সপ্তাহেরই শেষ দিকে তিনি যাবেন সুপ্রিম কোর্ট। ‘‘আমি আবেদন জানাব, কমিশনের স্ট্যাটাস রিপোর্ট মেনে নেওয়া হোক। আদালত যদি সে দিনই মেনে নেয়, তা হলে মিটে গেল। নইলে ৫ ডিসেম্বর আশা করছি নিষ্পত্তি হয়ে যাবে।’’ আদিত্যর মতে, লোঢার এই রিপোর্টের একটাই অর্থ। আইসিসিইউয়ে পড়ে থাকা বোর্ডের অক্সিজেন মাস্কটা খুলে নেওয়া! বোর্ড— লোঢা কমিশনের নতুন রিপোর্টের পর পরিস্থিতি যে এতটা খারাপ, মানছে না। বরং কোনও কোনও কর্তা বললেন, অতীতে এ রকম আবেদন আদালতে করেছে লোঢা কমিশন। বোর্ডের আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে টেস্ট সিরিজকে বিশ বাঁও জলে ঠেলে দিতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে টেস্ট আয়োজনের টাকা পেয়েছে বোর্ড। বোর্ডের বিশ্বাস, এ বারও তাদের দিকটা শুনবে আদালত।

শেষ যুদ্ধে কে জিতবে, কে হারবে, উত্তর ভবিষ্যৎ দেবে। কিন্তু একটা ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে, আতঙ্কের মেঘে এ দিনের পর ফের ঢাকা পড়ল বোর্ড। এবং মোক্ষম প্রশ্নটাও উঠতে পারে অনায়াসে।

ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অনুরাগ ঠাকুরদের দেখা যাবে তো?

Anurag Thakur Lodha Commission BCCI
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy