অভিনব: বাঁশের পোল দিয়েই রাজেশের পোলভল্ট। নিজস্ব চিত্র
ফাইবারগ্লাস বা কার্বনের তৈরি আধুনিক ‘পোল’ নয়। পোলভল্ট দিতে রাজ্যের প্রতিশ্রুতিমান অ্যাথলিটদের ভরসা এখনও সেই জুরাসিক যুগের বাঁশ দিয়ে তৈরি ‘পোল’! যার ফলে মাঝমধ্যেই ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা। স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা নিয়ে ট্র্যাক ছাড়ছেন অ্যাথলিটরা।
শুক্রবার দুপুরে সল্টলেকের সাই ক্যাম্পাসে ৬৭তম রাজ্য অ্যাথলেটিক্সের দ্বিতীয় দিনে যেমন ঘটল মহমেডানের রাজেশ কুণ্ডুর ক্ষেত্রে। ডেকাথলনে অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগে পোলভল্ট চলছিল। হঠাৎই দেখা গেল উড়ে গিয়ে ম্যাট্রেসের বাইরে পড়েছে রাজেশ। যন্ত্রণায় উঠে দাঁড়ানোর মতো ক্ষমতাও তার ছিল না। দুই সতীর্থ পাজাকোলা করে তাকে তুলে আনে। শুশ্রূষার পরে জোর করেই রাজেশ নেমেছিল ১৫০০ মিটার দৌড়ে। কিন্তু প্রথম হওয়ার স্বপ্ন তার অধরাই থেকে গেল। তবে চোট নিয়েও তৃতীয় হয়ে চমকে দিয়েছে রাজেশ।
কী ভাবে চোট লাগল? ‘‘প্রথম কয়েকটা লাফ বাঁশের তৈরি পোল দিয়েই দিয়েছিলাম। ফল যাতে ভাল হয়, তার জন্য শেষ ভল্টটা দেওয়ার আগে আর একজনের কাছ থেকে ফাইবারগ্লাসের পোল ধার করেছিলাম। কিন্তু সেটা অনেক পুরনো। বহু দিন ব্যবহার হয়নি। নমনীয়তা কমে গিয়েছিল। পোল ভেঙে গিয়ে ম্যাট্রেসের বাইরে পড়ায় চোট লেগেছে লিগামেন্টে,’’ বলছিল রাজেশ।
আরও পড়ুন: রাফা-রজার ফাইনালের দরজা খোলা
এখনও বাঁশের তৈরি ‘পোল’ কেন? রাজেশের কথায়, ‘‘আমার বাবা অন্যের দোকানে কাজ করে সংসার চালান। আমাদের পক্ষে ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ করে ফাইবারগ্লাস বা কার্বনের তৈরি পোল কেনা সম্ভব নয়। তাই বাঁশের তৈরি পোল-ই ভরসা। এমনকী, ৮০০ টাকা দিয়ে সেটা কেনারও ক্ষমতা নেই আমাদের।’’
তা হলে? আশ্চর্য কাহিনি শোনা গেল ক্লাস নাইনে পড়া বনগাঁর রাজেশের মুখে, ‘‘কোচ অভিজিৎ বিশ্বাসের বাড়ির কাছেই বাঁশঝাড় রয়েছে। সেখান থেকে বাঁশ কেটে এনে রোদে পুড়িয়ে, রং করে পোল বানাই।’’ সঙ্গে যোগ করল, ‘‘আধুনিক পোল ব্যবহার করার অভ্যেস থাকলে কিন্তু চোট পেতাম না।’’
রাজ্য অ্যাথলেটিক্স সংস্থা কেন অ্যাথলিটদের আধুনিক ‘পোল’ দিচ্ছে না? সচিব কমল মৈত্র বললেন, ‘‘আমাদের সেই আর্থিক সামর্থ নেই।’’
শুক্রবার রাজ্য অ্যাথলেটিক্সের দ্বিতীয় দিনে দু’টি রেকর্ড হয়। অনূর্ধ্ব-১৪ ট্রায়াথলনে সোনা জিতে রেকর্ড গড়ল জলপাইগুড়ির ডালিয়া রায়। অনূর্ধ্ব-১৪ শটপাটে রেকর্ড করল হাওড়ার রূপক ভদ্রক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy