Advertisement
১৭ মে ২০২৪

পায়ে ফুটবল, কিন্তু অর্ণবদের মন পড়ে অষ্টমীর অঞ্জলিতে

কোচিতে বসে পুজোর ঢাকের আওয়াজ বড় মিস করছেন শৌভিক চক্রবর্তী। অর্ণব মণ্ডল, কিংশুক দেবনাথরা এই মুহূর্তে কলকাতাতে থাকলেও প্র্যাকটিস করে করে এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন যে, দুর্গা ঠাকুর দেখতে যাওয়ার ইচ্ছেটাই থাকছে না।

অ্যাটলেটিকো কলকাতা। ছবি: সংগৃহিত।

অ্যাটলেটিকো কলকাতা। ছবি: সংগৃহিত।

তানিয়া রায়
শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪৮
Share: Save:

কোচিতে বসে পুজোর ঢাকের আওয়াজ বড় মিস করছেন শৌভিক চক্রবর্তী।

অর্ণব মণ্ডল, কিংশুক দেবনাথরা এই মুহূর্তে কলকাতাতে থাকলেও প্র্যাকটিস করে করে এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন যে, দুর্গা ঠাকুর দেখতে যাওয়ার ইচ্ছেটাই থাকছে না।

শৌভিক ঘোষ গুয়াহাটিতে কিছুটা হলেও পুজোর আমেজটা পাচ্ছেন বটে! কিন্তু ওইটুকুই। আগের মতো হইহই করে পাড়ার পুজোয় ঢাক বাজাতে পারছেন না। প্র্যাকটিস আর হোটেল— এই করেই পুজোর দিনগুলো কেটে যাচ্ছে।

আসলে পুজোর চারটে দিন বাঙালিরা যে যেখানেই থাকুন না কেন, মন পড়ে থাকে এই বাংলাতেই। ঢাক, শিউলি-কাশফুল, নতুন জামা পরে ঠাকুর দেখা, অষ্টমী পুজোর অঞ্জলি দেওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা, সঙ্গে ডায়েট ভুলে কব্জি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়া— এ সব যে শুধুমাত্র বাংলাতেই পাওয়া যায়। আইএসএল শুরু হওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন দলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন বহু বাঙালি ফুটবলার। আটলেটিকো দে কলকাতায় অর্ণব-কিংশুক-প্রীতম কোটালরা রয়েছেন। দিল্লি ডায়নামোসে আবার শৌভিক চক্রবর্তী, কেরল ব্লাস্টার্সে সন্দীপ নন্দী, পুণে সিটি এফসিতে নারায়ণ দাস, অরিন্দম ভট্টাচার্য, নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডে শৌভিক ঘোষ, সুব্রত পাল, এফসি গোয়ায় শুভাশিস রায়চৌধুরি, দেবব্রত রায়রা। এঁদের প্রত্যেকেরই রোজনামচা এখন প্র্যাকটিস করা আর ম্যাচে নিজের সেরাটা উজাড় করে দেওয়া। টিমকে জেতানোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রত্যেকেই লড়াই করছেন। কিন্তু ফাঁকা সময়ে মনটা বড় উদাস হয়ে যায় এই পুজোর চার দিন। শৌভিক ঘোষ বলছিলেন, ‘‘খেলতে তো হবে, কিছুই করার নেই। কিন্তু পরিবারের থেকে দূরে আছি বলে মনটা মাঝেমাঝে খারাপ লাগে। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। মণ্ডপে মণ্ডপে বন্ধুরা মিলে ঠাকুর দেখতে যেতাম। কত কিছু খেতাম। এগুলো মিস করি।’’

কলকাতাতেই রয়েছেন আটলেটিকোর বাঙালি ফুটবলাররা। তবে দশমীর দিন মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ রয়েছে কলকাতার। নবমীর দিন সকালে বেরিয়ে যেতে হবে মলিনার টিমকে। অর্ণব বলছিলেন, ‘‘বহু সময়ই পুজোর সময় বাইরে থাকতে হয়েছে। এটাই অভ্যেস হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন জানি না মনটা খারাপ লাগে। আরও বেশি খারাপ লাগে যখন কলকাতাতে বসে ঢাকের শব্দ শুনি অথচ ঠাকুর দেখতে যাওয়া বা পুজোর আনন্দ করার সুযোগ পাই না। আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে আছে। কিন্তু অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে যাবে ও একাই। আমি যেতে পারব না।’’ দিল্লি ডায়ানামোসের শৌভিকের আবার আজ অষ্টমীর দিন কেরল ব্লাস্টার্সের সঙ্গে ম্যাচ রয়েছে। তবু প্র্যাকটিসের ফাঁকেই মাঝে মাঝেই মনে পড়ে যাচ্ছে পাড়ার কথা। ভাইবোনদের কথা। বলছিলেন, ‘‘আসলে ছোটবেলায় ভাইবোনদের সঙ্গে মজা করতাম। পাড়ায় বড় পুজো হয়। ওখানেই অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি দিতাম। আর এখন ম্যাচ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। তবে মনে মনে আমি অঞ্জলি দেব আর ঠাকুরের কাছে চাইব, আমরা যেন কেরল ম্যাচটা জিতি।’’

সুব্রত, দেবব্রত— এঁরা খেলার সূত্রে বহুদিনই কলকাতার বাইরে। তবু বাংলার দুর্গা পুজোকে এখনও খুব মিস করেন ওঁরা। দেবব্রত বলছিলেন, ‘‘আমি তো প্রায় টানা আট-ন’বছর বাংলার বাইরে রয়েছি। কিন্তু দুর্গা পুজো আসলে মনটা খারাপ লাগে। ঠিক করে রেখেছি, খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর চুটিয়ে পুজোয় মজা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ISL2016 Bengali Footballers Durga Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE