Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
International news

‘আমিই সেরা’! প্রথম ট্রিপল-ট্রিপল, ইতিহাস গড়লেন উসেইন বোল্ট

তিনিই সেরা। প্রমাণ করবেন বলেছিলেন, এবং প্রমাণ করে ছেড়েছেন উসেইন বোল্ট। অলিম্পিক্সের ট্র্যাকে নিজের শেষ ইভেন্টে শুধু নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার লড়াই ছিল। সেই ৪x১০০ মিটার রিলেতেও সোনা জিতল বোল্টের জামাইকা।

রেকর্ডের লক্ষ্যে দৌড় বোল্টের। ছবি: এপি

রেকর্ডের লক্ষ্যে দৌড় বোল্টের। ছবি: এপি

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ১২:১০
Share: Save:

তিনিই সেরা। প্রমাণ করবেন বলেছিলেন, এবং প্রমাণ করে ছেড়েছেন উসেইন বোল্ট। অলিম্পিক্সের ট্র্যাকে নিজের শেষ ইভেন্টে শুধু নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার লড়াই ছিল। সেই ৪x১০০ মিটার রিলেতেও সোনা জিতল বোল্টের জামাইকা। ফলে রিওতেও ১০০ মিটার, ২০০ মিটার এবং ৪x১০০ মিটার রিলেতে সোনা জিতে আরও একটা অলিম্পিক্স ট্রিপলের মালিক হয়ে গেলেন। এর আগে ২০০৮ সালের বেজিং আর ২০১২র লন্ডন অলিম্পিক্সেও এই তিন ইভেন্টের সোনা উঠেছিল বোল্টের গলায়। গত অলিম্পিক্সেই বিশ্বের প্রথম স্প্রিন্টার হিসেবে ‘ডাবল ট্রিপল’ করে নজির গড়েছিলেন। এবার সেটাও ছাপিয়ে ‘ট্রিপল ট্রিপল’এর রেকর্ড।

শুক্রবার ৪X১০০ মিটার রিলে শেষ করতে জামাইকা সময় নেয় ৩৭.২৭ সেকেন্ড। বোল্টের সঙ্গে ছিলেন আসাফা পাওয়েল, ইয়োহান ব্লেক এবং নিকেল আশমেদে। দ্বিতীয় স্থানে থেকে রুপো জিতে নেয় জাপান। আর তিন নম্বরে শেষ করেও বেনিয়ম করায় ব্রোঞ্জ হাতছাড়া হয় আমেরিকার। মার্কিন দলের প্রথম রানার ছিলেন মাইক রজার। টেক ওভার জোনের আগেই রজারের হাত থেকে ব্যাটন নিয়ে নেন দ্বিতীয় রানার মাইক গ্যাটলিন। ফলে আমেরিকার দলকে ডিসকোয়ালিফাই করে দেয় বিচারকমণ্ডলী। চার নম্বরে শেষ করা কানাডা ব্রোঞ্জ পেয়ে যায়।


জেতার পর। ছবি: রয়টার্স।

এ দিনের রিলে শুরু থেকেই ছিল টানটান উত্তেজনায়। জামাইকা, জাপান আর আমেরিকা প্রায় ঘা ঘেঁষেই ছিল। প্রথম ৩০০ মিটারে জামাইকা কখনও পিছিয়ে পড়েছে আবার কখনও এগিয়েছে। কিন্তু ওস্তাদ বোল্টের শেষ মারটা তো তখনও বাকি। শেষের ১০০ মিটারের লাইনে তখন হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বোল্ট। তিন নম্বরে থাকা নিকেল আশমেদের হাত থেকে ব্যাটন নিয়েই সেই চেনা বিদ্যুৎ গতিতে পেরিয়ে গেলেন ফিনিশিং লাইন। ছুটে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন আসাফা-ইওহান-নিকেল। শুরু থেকেই গ্যালারি জুড়ে ওঠা ‘বোল্ট-বোল্ট’ উচ্ছ্বাস তখন তিনগুন বেড়ে গিয়েছে।

‘ট্রিপল ট্রিপল’এর পাশাপাশি এ দিন আরও একটা নজির ছুঁলেন বোল্ট। অ্যাথলেটিক্সে এতদিন সবচেয়ে বেশি ন’টা করে সোনা ছিল দুই আমেরিকানের। পাভো নুরমি এবং কার্ল লিউইস। রিওতে নিজের নবম সোনা জিতে কিংবদন্তী বোল্ট ছুঁয়ে ফেললেন ওই দুই কিংবদন্তীকেও।

বিশ্বের সর্বকালের সেরা অ্যাথলিট হিসেবে কার্ল লিউইস বা জেসি ওয়েন্সদের বোল্টের থেকে এগিয়ে রাখেন অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে এঁদের পরিধি অনেক বড়। দৌড়ের পাশাপাশি লং জাম্পেও ছিলেন দুরন্ত। তবে শুধু স্প্রিন্টের কথা যদি ধরা যায়, তবে অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে এগিয়ে গেছেন উসেইন বোল্ট। স্প্রিন্টে বোল্টের অলিম্পিক্স সোনা ৯টা। ৬টা ব্যক্তিগত এবং ৩টে রিলে। সেখানে স্প্রিন্টে লিউইসের সোনার সংখ্যা ৬। ৪টে ব্যক্তিগত ইভেন্টে, ২টো রিলেতে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও অনেক এগিয়ে বোল্ট। ১১টা সোনা বোল্টের গলায়। সেখানে স্প্রিন্টার হিসেবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে লিউইসের সোনা ৬টা। লং জাম্পে আরও ২টো সোনা আছে তাঁর।

গতিতেও তাই। লিউইসকে অনেক পিছনে ফেলেছেন বোল্ট। ১০০ মিটারে ২০০৯ সাল থেকে বোল্টের দখলে বিশ্বরেকর্ড। সময় ৯.৫৮ সেকেন্ড। সময়ের নিরিখে প্রথম তিনটে সেরা পোজিশন বোল্টের দখলে। ৯.৫৮, ৯.৬৩ এবং ৯.৬৯ সেকেন্ড। ৯.৬৯ সেকেন্ডে ১০০ মিটার দৌড়েছেন জামাইকার টাইসন গে-ও। সেরা সময়ের তালিকায় কার্ল লিউইসের সেরা ৯.৮৬ সেকেন্ডের স্থান ১০৪ নম্বরে আছে। স্প্রিন্টার হিসেবে সেরা সময়ের তালিকায় লিউইস আছেন ১৬ নম্বরে। ২০০ মিটারেও একে বোল্ট। রেকর্ড সময় ১৯.১৯ সেকেন্ড। সেরা সময়ের নামের তালিকায় লিউইস ১৫ নম্বরে।

২০১৭তে অবসর নেওয়ার কথা বোল্টের। সেক্ষেত্রে রিওই তাঁর শেষ অলিম্পিক্স। ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিক্স যখন হবে তখন বোল্টের বয়স হবে ৩৩। ফেল্পসের মতো অবসর ভেঙে আবার ফিরে আসবেন কি? আবার কি ছাপিয়ে যাবেন নিজেকে? বোল্ট বলছেন, না! ‘‘আমিই সবার সেরা। বিশ্বের কাছে সেটা প্রমাণ করার জন্যই তো রিওতে এসেছিলাম। এই জন্যই বলেছিলাম এটাই আমার শেষ অলিম্পিক্স। কারণ আর কিছু প্রমাণ করা বাকি নেই’’ এটাই জবাব বিশ্বের দ্রুততম মানবের।

আরও পড়ুন: বোঝাতে এসেছিলাম আমিই বিশ্বসেরা, বুঝিয়ে দিলাম: বোল্ট

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rio Olympics bolt
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE