অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রস্তুতিতে গুরু-শিষ্য বেকার-জোকার। ছবি: এএফপি
নোভাক জকোভিচ অস্ট্রেলিয়ান ওপেনটা দারুণ উপভোগ করে। ওকে দেখে আমার নিজের খেলোয়াড় জীবনের কথা মনে পড়ে যায়। যখন এখানে খেলার অভিজ্ঞতা মানেই ছিল একটা আরামদায়ক অনুভূতি। অস্ট্রেলিয়ানদের আলাদা একটা আকর্ষণ আর তার সঙ্গে মেলবোর্নে জকোভিচের দুরন্ত রেকর্ড বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের জন্য জায়গাটা সেরা করে তুলেছে।
আমাদের, মানে টিম জকোভিচের জন্য বছরটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেন না আমাদের নিশ্চিত করতে হবে গত বছরের সাফল্যের তোড়ে ভেসে গেলে চলবে না। মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটা টুর্নামেন্ট শুরু হয় তার প্রথম রাউন্ড থেকে। ২৮ বছর বয়সে বিশ্বের এক নম্বর এখন কেরিয়ারের সেরা সময়টা আরও ভাল করার দিকে তাকিয়ে। জকোভিচের খুব একটা পক্ষ না নিয়েই বলছি ওকে এই মুহূর্তে প্রচণ্ড শক্তিশালী দেখাচ্ছে, ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছে। জকোভিচের এই সাফল্যের পিছনে কিন্তু অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রবল পরিশ্রম, ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা না থাকার পাশাপাশি ছেলের স্পর্শ, সন্তানের আনন্দ ওকে আরও ধীর-স্থির করেছে। সঙ্গে সাপোর্ট টিমের সমর্থন তো আছেই। সেই টিমের কোর গ্রুপে থাকার অনুভূতি তাই দারুণ।
এ বার পুরুষদের সার্কিটের দিকে একটু দেখা যাক। অসাধারণ কোনও টিনেজারের উঠে আসার গল্প এখনও নেই। বরং প্রথম পাঁচে যারা রয়েছে সকলেরই বয়স তিরিশের কাছাকাছি। রজার ফেডেরার প্রায় ৩৫। এর একটা কারণ অবশ্য কুড়ির আশপাশে যারা সার্কিটে রয়েছে তাদের টানা সাফল্য খুব কম দেখা যায়। গত তিন বছরে শুধু স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কাকে উঠে আসতে দেখা গিয়েছে। তবে ওয়ারিঙ্কাও কিন্তু টিনএজার নয়। বিগ ফাইভের সঙ্গে সার্কিটের বাকি প্লেয়ারদের যেন একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। আর আগামী ১২ মাসে এটাই দেখার যে টপ ফাইভের শক্তিশালী দূর্গে নতুন কেউ চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে কি না।
টপ ফাইভ প্রসঙ্গে বলতে গেলে একটা কথা বলতেই হয়, মেলবোর্নের জন্য সবাই কিন্তু দারুণ ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। ওয়ারিঙ্কা আবার চেন্নাই ওপেন জিতেছে। ওকে প্র্যাকটিসেও দেখেছি। ওকে ভয়ঙ্কর ভাল লাগছিল। যত টুর্নামেন্ট যাচ্ছে রাফায়েল নাদালকে তত ভাল দেখাচ্ছে। ওখনও নিজের চূড়ান্ত ফর্মে ও আসেনি। তবে সেখানে দ্রুত পৌঁছনোর সম্ভাবনা কিন্তু আমি দেখতে পাচ্ছি। কয়েক বছর আগেও নাদালকে ঘিরে যে একটা অপ্রতিরোধ্য ব্যাপার ছিল, সেটা এখন কিছুটা কম। তবু খেতাবের দৌড়ে নাদাল বড় প্রতিদ্বন্দ্বী।
ডেভিস কাপ জেতার পর অ্যান্ডি মারেও লড়াইয়ে থাকবে। তবে ও কতটা ফোকাসড থাকবে সেটাই বড় প্রশ্ন। কেন না ওর প্রথম সন্তান জন্মানোর কথা ক’য়েক সপ্তাহের মধ্যেই। টুর্নামেন্ট চলাকালীনও যে কোনও সময় বাবা হতে পারে মারে। আর তারপরই লড়াইয়ে আছে এমন একজন যার খেলা সবাই দেখতে চায়, কিন্তু কেউ ওর মুখোমুখি হতে চায় না। ফেডেরার এখনও অবিশ্বাস্য ভাল খেলছে। যত দিন ও টেনিসটা উপভোগ করবে, তত দিন মনে হয় এই ফর্মটা ধরে রাখতে পারবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy