ডার্বির প্রস্তুতি কাতসুমি, প্রীতমদের। নিজস্ব চিত্র
ডার্বিতে বল গড়ানোর এক দিন আগে হঠাৎ-ই নিজেদের অবস্থান বদলে ফেললেন দুই কোচ।
ইস্টবেঙ্গলের ট্রেভর জেমস মর্গ্যান বলছেন, ‘‘এই ম্যাচটা জিততে না পারলে আমাদের খেতাব জয়ের রাস্তা আরও ছোট হয়ে যাবে। হয়তো ছিটকে যেতে হবে। আমার হট সিট আরও হট হবে।’’ আবার মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেনের মন্তব্য, ‘‘এই ম্যাচটা ড্র হলেও আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না। আমি জীবিত থাকব।’’
কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি আসার আগে থেকেই দু’দলের ফুটবলারদের মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন দুই কোচ। সেটা না হয় টিমের মধ্যে বিতর্ক এড়াতে। তা বলে এই ভাবনার বদল কেন? আসলে একটা ম্যাচের কম-বেশি খেলার ফারাক বদলে দিয়েছে অনেক অঙ্ক। লিগ টেবলের সাপ লুডোর অঙ্ক দেখাচ্ছে, ম্যাচটা ড্র করলেও সনি নর্দে-দের খেতাব জেতার সুযোগ থাকছে। এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে ইস্টবেঙ্গলের সে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
সে জন্যই এ দিন তীব্র চাপে থাকা মর্গ্যানের গলা থেকে আর্তনাদের মতো বেরিয়েছে, ‘‘ডার্বি জিততে না পারলে অন্যরা কে কী করল তার উপরেই আমাদের নির্ভর করতে হবে।’’ যা শুনে তাঁর পাশে বসে থাকা মেহতাব হোসেনও একমত হন।
এই পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গল যে বেশি চাপে সেটা অবশ্য মানতে চাননি সঞ্জয়। আবার তাঁরা যে এগিয়ে, সেটাও মানতে চাইছেন না মোহনবাগান কোচ। বলে দিলেন, ‘‘ডার্বির চাপ কার উপর আছে কার উপর নেই সেটা বলতে পারব না। আর ডার্বিতে কেউ ফেভারিট হয় না। মাঠে নামলেই বোঝা যাবে কে এগিয়ে কে পিছিয়ে।’’ আর সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর পাশে বসে থাকা অধিনায়ক কাতসুমি অবশ্য অত সতর্কতার রাস্তায় হাঁটেননি। সে জন্যই মিডিয়ার প্রশ্নের তোড়ে চমকপ্রদ মন্তব্যও বেরিয়ে এসেছে তাঁর মুখ থেকে, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠে একটা ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছে সেটা আমরা দেখেছি। ম্যাচটা জিততে হলে ইস্টবেঙ্গলের দুর্বল জায়গাগুলো তো আমাদের খুঁজতেই হবে।’’ জাপানি মিডিও ঘরের কথা প্রকাশ্যে এনে ফেলছেন দেখে মোহনবাগান কোচকে বেশ বিব্রত মনে হল। সেটা সামাল দেওয়ার জন্যই সম্ভবত সঞ্জয়কে বলতে হল, ‘‘দু’দলই প্রতিপক্ষের খুঁত খুজে বের করবে সেটাই স্বাভাবিক। যেমন ওয়েডসন আগের ম্যাচে মাঝমাঠে আমাদের সমস্যায় ফেলেছিল। এ বার যাতে তা না হয় সেটা দেখতে হবে। ওরাও নিশ্চয়ই আমাদের কাউকে নিয়ে অঙ্ক করবে।’’
মর্গ্যান অবশ্য সঞ্জয়ের মতো এত খোলামেলা কথা বলেননি। বরং বেশ কুশলী মন্তব্য করেছেন তিনি। ‘‘ওরা দু’টো পরপর ভাল ম্যাচ জিতেছে। আমরা খুব খারাপ ভাবে দু’টো ম্যাচ হেরেছি। এটা থেকেই যা বোঝার বুঝে নিন। আমাদের ছেলেদেরই ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাদেরই মাঠে সেরাটা উজাড় করে দিতে হবে।’’
পরপর দু’টো ম্যাচ জিতেছেন বলে প্রতিপক্ষ কোচ যে তাঁদের ঘুরিয়ে এগিয়ে রাখছেন এবং সেটা আসলে ব্রিটিশ কোচের বিপক্ষকে আত্মতুষ্ট করার কৌশল, তা বুঝতে পেরে সঞ্জয়ের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আমাদের টিমেরও ধারাবাহিকতার অভাব আছে। ডার্বি জিতে ছেলেদেরই প্রমাণ করতে হবে ওরা ধারাবাহিক।’’
ডার্বির আগের সন্ধ্যায় বিদেশি বনাম স্বদেশি কোচের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধেই স্পষ্ট মগজাস্ত্রে শান দেওয়ার কাজটা কী ভাবে শুরু হয়ে গিয়েছে ময়দানের দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy