Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন নাইট স্পিনার

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে শহর কলকাতার কাছে তাঁর বাড়তি একটা আবেদন রয়েছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ‘স্মাইলিং অ্যাসাসিন’ তিনি। মাঝ-চল্লিশেও যাঁর প্রাণশক্তি মাতিয়ে দেয় ইডেনের গ্যালারি, যাঁর স্পিন কাত করে দেয় বিপক্ষ ব্যাটিং।

হাসিখুশি এই ব্র্যাড হগকেই চেনে কলকাতা।

হাসিখুশি এই ব্র্যাড হগকেই চেনে কলকাতা।

সিডনি
শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:২০
Share: Save:

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে শহর কলকাতার কাছে তাঁর বাড়তি একটা আবেদন রয়েছে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ‘স্মাইলিং অ্যাসাসিন’ তিনি। মাঝ-চল্লিশেও যাঁর প্রাণশক্তি মাতিয়ে দেয় ইডেনের গ্যালারি, যাঁর স্পিন কাত করে দেয় বিপক্ষ ব্যাটিং। এ সবের বাইরে নাইট সংসারে তিনি বিখ্যাত এবং প্রিয় ‘জোকার’ হিসেবে।

সেই ব্র্যাড হগ কি না একটা সময় আত্মহত্যার চিন্তায় ডুবে ছিলেন!

নতুন বইয়ে এমন চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান টেস্ট স্পিনারের। তিনি লিখেছেন, ক্রিকেট থেকে অবসর এবং বিয়ে ভেঙে যাওয়া— দুইয়ের ধাক্কায় তাঁর এমন বিপর্যস্ত অবস্থা হয়েছিল যে জীবনটাই শেষ করে দেবে ভেবেছিলেন।

সাতটা টেস্ট খেলেছিলেন দেশের হয়ে। তার পর ২০০৩ এবং ২০০৭, অস্ট্রেলিয়ার দুটো সফল বিশ্বকাপ দলের সদস্যও ছিলেন। কিন্তু তার পর তাঁর বৈবাহিক সম্পর্ক এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে হয় হগকে। যদি তাতে বিয়েটা বাঁচানো যায়, সেই আশায়। ২০০৭-’০৮ সালে অবসর নেওয়ার পরেও অবশ্য তৎকালীন স্ত্রী অ্যান্ড্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কটা বাঁচাতে পারেননি।

তার পরের তিনটে বছর শুধুই অবসাদ। দশটা-পাঁচটার চাকরি করতেন এবং সেই চাকরিতে এতটাই অতৃপ্ত ছিলেন যে, মদ্যপানের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি খুঁজতেন বারবার। এবং এই অন্ধকার সময়টাতেই আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় ঘোরাফেরা করার শুরু।

‘পোর্ট বিচে সমুদ্রের ধারে একদিন গাড়িটা পার্ক করে হাঁটতে বেরোলাম। সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ মনে হল, জলে ঝাঁপিয়ে পড়ি। সাঁতরে দূরের একটা পাথরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করি। যদি ফিরে আসতে পারি, তা হলে ভাল। যদি না পারি, যদি ডুবে যাই, তা হলে ভাবব ভাগ্যটাই খারাপ,’ নিজের জীবনী ‘দ্য রং আন’-এ লিখেছেন ব্র্যাড হগ।

সে সময় তাঁর অবস্থা যে কতটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল, বোঝা যায় তাঁর লেখায়। হগ লিখেছেন, ‘আমি তৈরি ছিলাম সব কিছু ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দিতে। মানসিক ভাবে খুব অন্ধকার জায়গায় চলে গিয়েছিলাম। চার বার গাড়ি চালিয়ে সমুদ্রের ধারে গিয়েছিলাম। আর প্রত্যেক বার মনে হয়েছিল, আজই সব শেষ করে দেব। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে, ভাবা আর করা সম্পূর্ণ আলাদা দুটো ব্যাপার।’

অন্ধকার কাটিয়ে উঠে প্রত্যাবর্তন এবং প্রত্যাবর্তনে সাফল্যও। নিজের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ান ডে দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন হগ। ১২৩ ম্যাচ খেলে ১৫৬ উইকেট নেন, রান করেন কুড়ির আশেপাশে গড় রেখে। গত বার ৪৪ বছর বয়সে কেকেআরের জার্সিতে আইপিএল খেলতে নামেন সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার হিসেবে। পঁয়তাল্লিশ বছরের অফস্পিনার এখন চুটিয়ে বিগ ব্যাশও খেলছেন। ব্যক্তিগত জীবনও নতুন ভাবে শুরু করেছেন। চেরিল ব্রেসল্যান্ডের সঙ্গে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে আইপিএলের সময় কলকাতাতেও ছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Brad Hogg Suicide The Wrong
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE