Advertisement
E-Paper

‘এই ইডেনে মার্শাল, হোল্ডিংরা থাকলে ব্যস্ত থাকত অ্যাম্বুল্যান্স’

ক্যারিবিয়ান দ্বীপপূঞ্জে ম্যালকম মার্শালদের আগুন সামলে সেঞ্চুরি করা এক প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারকে এই প্রশ্ন করা গেল। তিনি— রবি শাস্ত্রী, পাঁচ দিন ধরে ইডেনের ড্রেসিংরুমে বসে ইডেনের পিচে পেসারদের ধ্বংসলীলা দেখেছেন।

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:২২
বিদায়: কলকাতা থেকে নাগপুর চললেন শাস্ত্রী। ছবি: সৌভিক দে

বিদায়: কলকাতা থেকে নাগপুর চললেন শাস্ত্রী। ছবি: সৌভিক দে

ইডেনের সদ্য সমাপ্ত টেস্টের সবুজ উইকেটে যদি অগ্নিযুগের চার ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলার বল করতেন, কী হতে পারত? সেই চার ফাস্ট বোলার, যাঁদের কথা মনে করে এখনও শিউরে ওঠেন অনেকে। সেই ফাস্ট বোলার, যাঁদের নিয়ে সারা বিশ্ব শাসন করেছিলেন ক্লাইভ লয়েড।

ক্যারিবিয়ান দ্বীপপূঞ্জে ম্যালকম মার্শালদের আগুন সামলে সেঞ্চুরি করা এক প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারকে এই প্রশ্ন করা গেল। তিনি— রবি শাস্ত্রী, পাঁচ দিন ধরে ইডেনের ড্রেসিংরুমে বসে ইডেনের পিচে পেসারদের ধ্বংসলীলা দেখেছেন। মঙ্গলবার সকালে কলকাতা ছাড়ার আগে বিরাট কোহালিদের হেডস্যার এই প্রশ্ন শুনে বলে ফেললেন, ‘‘দু’টো অ্যাম্বুল্যান্স সব সময়ের জন্য রেডি রাখতে হতো। আর কাছাকাছি একটা ভাল হাসপাতাল। অ্যাম্বুল্যান্সটা যে সারা দিন ধরেই বেশ ব্যস্ত থাকত, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই আমার।’’

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটের অগ্নিযুগ প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখার অভিজ্ঞতা রয়েছে শাস্ত্রীর। টেলএন্ডার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবন শুরু করে ওপেনার হিসেবে শেষ করা তিনি এগারোটি টেস্ট সেঞ্চুরির দু’টি করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে। ১৯৮৩-তে সেন্ট জন্‌স অ্যান্টিগায় ১০২ করেন ম্যালকম মার্শাল, অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং, উইনস্টন ডেভিস-কে খেলে। এই সিরিজ খেলেই পরেই ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলতে যায় ভারত এবং কপিল দেবের দৈত্যরা ইতিহাস সৃষ্টি করেন।

ছয় বছর পরে ১৯৮৯-এ ব্রিজটাউন বার্বেডোজে চার পেসার ছিলেন মার্শাল, অ্যামব্রোজ, বিশপ, ওয়ালশ। ভারত আট উইকেটে হারলেও শাস্ত্রী দ্বিতীয় ইনিংসে একা প্রতিরোধ গড়ে তুলে ১০৭ করেন। দল অলআউট হয়ে যায় ২৫১ রানে।

চারমূর্তি: অগ্নিযুগের সেই ক্যারিবিয়ান পেস ব্যাটারি। (বাঁ দিক থেকে) অ্যান্ডি রবার্টস, ম্যালকম মার্শাল, মাইকেল হোল্ডিং, জোয়েল গার্নার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে করা বলেই এই দুই টেস্ট সেঞ্চুরি শাস্ত্রীর কাছে মেলবোর্নে সেই অডি জেতার মতোই প্রিয়। মার্শাল, রবার্টস, হোল্ডিং, গার্নার— চার ফাস্ট বোলার নিয়ে দুনিয়া শাসন করেছে ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শাস্ত্রী বলছেন, ইডেনের এই সবুজ পিচে মার্শাল, হোল্ডিংদের খেলতে নামার আগে বিমা করিয়ে নেওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ হতো। ‘‘আমি নিশ্চিত অ্যাম্বুল্যান্সটা সারাক্ষণই কাউকে না কাউকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটত।’’ বলেই জানতে চান, ‘‘ইডেনের কাছাকাছি ভাল হাসপাতাল আছে তো অন্তত গোটা দুয়েক?’’ বলা গেল, দশ-পনেরো মিনিটের দূরত্বে দু’তিনটে পাওয়া যাবে। শাস্ত্রীর জবাব, ‘‘গুড। বেডগুলো ফাঁকা রাখতে বলে দিয়ে মাঠে খেলা শুরু করে দেওয়া যেত।’’

ইডেনের সবুজ পিচ নিয়ে অভিযোগ করার কোনও জায়গাতেই নেই শাস্ত্রী। এমনও বলছেন যে, তাঁরা চাইছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সেরা প্রস্তুতি সেরে নিতে। ‘‘আমরা চাই শক্ত, ফাস্ট উইকেটে খেলে তৈরি হতে। এই ভারতীয় দল সমস্ত পরিবেশে, সব ধরনের পিচে ভাল খেলতে চায়।’’ ইডেনে কোহালির সেঞ্চুরি নিয়েও উচ্ছ্বসিত শাস্ত্রী। কোচের সঙ্গে অধিনায়কের সম্পর্কের রসায়নও দেখেছে ইডেন। সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া কোহালি যখন মাঠ থেকেই ড্রেসিংরুমের বারান্দায় বসে থাকা শাস্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে জানতে চান, ডিক্লেয়ার করে দেবেন কি না? কোহালি তখন আশির ঘরে পৌঁছেছেন। শাস্ত্রী আঙুল দিয়ে দেখান, আরও ২০ রান যোগ করে ছাড়ো। এর পর নব্বইয়ের ঘরে ফের শাস্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে জানতে চান কোহালি যে, ছেড়ে দেবেন কি না। হেড কোচ এ বার জানান, আরও এক ওভার খেলে রানটা বাড়িয়ে নাও। কোহালি সেই ওভারের চতুর্থ বলেই ৫০তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি পূর্ণ করে তক্ষুনি ডিক্লেয়ার করে দেন।

ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলারদের নিয়ে শুরু করলেও শাস্ত্রী শেষ করলেন নিজের দলের পেসারদের নিয়ে। ‘‘শামি, উমেশ, ভুবি— অসাধারণ বল করল। ওরা বুঝিয়ে দিল সবুজ, প্রাণবন্ত পিচে আমাদের পেস ব্যাটারিও তৈরি,’’ বলে দিচ্ছেন শাস্ত্রী।

Ravi Shastri Cricket Caribbean pacers Eden Gardens
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy