Advertisement
E-Paper

ডার্বির আকাশে প্লাজা-ফানুস

ফানুসটা শেষ পর্যন্ত কোন দিকে উড়ে গেল বলা কঠিন। কিন্তু উইলিস প্লাজা নামক ইস্টবেঙ্গলের আশার ফানুস মঙ্গলবার বিকেল থেকেই যে শিলিগুড়ির আকাশে উড়তে শুরু করল, তা বলে দেওয়া যায়। সেখানেই তো রবিবার লিগ খেতাবের যুদ্ধ।

রতন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:০১
নায়ক: টালিগঞ্জের বিরুদ্ধে গোল করে প্লাজার লাফ। হ্যাটট্রিক করলেন ইস্টবেঙ্গল তারকা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

নায়ক: টালিগঞ্জের বিরুদ্ধে গোল করে প্লাজার লাফ। হ্যাটট্রিক করলেন ইস্টবেঙ্গল তারকা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

ইস্টবেঙ্গল ৫ টালিগঞ্জ অগ্রগামী ০

ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যেও লাল-হলুদ ফানুসটা দিব্যি তরতর করে উঠে যাচ্ছিল আকাশের দিকে।

ফানুসটা শেষ পর্যন্ত কোন দিকে উড়ে গেল বলা কঠিন। কিন্তু উইলিস প্লাজা নামক ইস্টবেঙ্গলের আশার ফানুস মঙ্গলবার বিকেল থেকেই যে শিলিগুড়ির আকাশে উড়তে শুরু করল, তা বলে দেওয়া যায়। সেখানেই তো রবিবার লিগ খেতাবের যুদ্ধ।

প্রায় ফুট খানেক লাফিয়ে হেডে প্রথম গোলটা করার পর দিয়েগো মারাদোনার স্টাইলে বুকে চাপড় মারলেন ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকার। তারপর দৌড় লাগালেন সর্তীর্থদের দিকে। মনে হল প্লাজা বলতে চাইলেন ‘‘আমিই পারি, দ্যাখো আমিই।’’

গ্যালারিতে তখন গান আর স্লোগান শুরু হয়ে গিয়েছে। হ্যান্ড মাইকে একজন আওয়াজ তুলছেন, ‘‘লা-ল হ-লু-দ’’, হাততালি দিতে দিতে কয়েক হাজার কন্ঠস্বর তাতে সাথ দিচ্ছিল, ‘‘বু-কে, বা-রু-দ’। মনে হচ্ছিল, প্লাজার এ দিনের পারফরম্যান্সের সঙ্গে সেই গানটার কী অদ্ভুত সমাপতন! ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো স্ট্রাইকারের হ্যাটট্রিকের বারুদে সত্যিই যেন ডার্বি-আগুন জ্বলে উঠল মহালয়ার বিকেলেই। এবং সেটা মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলতে নামার পাঁচ দিন আগেই।

কিন্তু তাই বলে দেশের অন্যতম সফল কোচ সুভাষ ভৌমিকের টিমকে গুনে গুনে পাঁচ গোল! ডার্বির আগে এ রকম কখনও হয়েছে? মনে করা যাচ্ছে না। সেটাই কিন্তু হল। হল সেই ফুটবলারের সৌজন্যে যাঁকে ছাঁটাই করার জন্য দিস্তা দিস্তা কাগজ ইতিমধ্যেই খরচ করেছে সংবাদমাধ্যম। আগের মহমেডান ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল করে প্লাজা হার বাঁচিয়েছিলেন খালিদ জামিলের। আর এ দিন তো তিনিই শাহেনশা। ওস্তাদো কা ওস্তাদ। প্লাজার খেলার মধ্যে ময়দানের প্রাক্তন তারকা স্ট্রাইকার সাবির আলির ছায়া আছে। চুটকি ফুটবল খেলতে ভালবাসেন। টোকা দিয়ে ভিড়ের মধ্য থেকে বল বের করে নেন। চোরা একটা গতিও আছে। এমনিতে বোঝা যায় না মাঠে আছেন। কিন্তু পায়ে বল পড়লেই রাজধানী এক্সপ্রেস। গোলের গন্ধ পেলেই তাঁকে রোখা দায়। অবশ্য ফিট থাকলে।

এ দিন যেমন হল। আসিয়ানজয়ী কোচ সুভাষের মগজাস্ত্রের শক্তি নিয়ে নামা টালিগঞ্জ আগ্রগামীর প্রতিরোধের স্পৃহা একাই দুমড়ে মুচড়ে দিলেন প্লাজা। নিজে তিনটে গোল তো করলেনই, তাঁর গোল-তর্পণের সঙ্গী হলেন নিখিল পুজারি আর লালডানমাইয়া রালতের মতো নতুনরাও। রালতেও তো হ্যাটট্রিক করতে পারতেন। কী সব গোল নষ্ট করলেন পাহাড়ি ছেলেটি। বিরতি পর্যন্ত এত লড়াই চালিয়েও টালিগঞ্জের কেন এই অধঃপতন? প্লাজার দিকে আঙুল তুললেন সুভাষ ভৌমিক। ব্যাখ্যা দিলেন, ‘‘প্লাজার দ্বিতীয় গোলটাই সব শেষ করে দিল। বিরতিতে বলেছিলাম, অন্তত দশ মিনিট আটকাও ওদের। পারল না।’’ প্লাজার ওই গোলটাই দিনের সেরা। চার টোকা মেরে বিপক্ষের তিন জনকে ড্রিবল করে অসাধারণ প্লেসিং-এ গোল।

টালিগঞ্জ খুব খারাপ টিম নয়। বিদেশি-সহ বেশির ভাগ ময়দানের পোড় খাওয়া, চেনা মুখ। তাদেরই ইস্টবেঙ্গল নাস্তানাবুদ করে ছাড়ল দু’টো কারণে। এক) মাঝমাঠ সংগঠিত ফুটবল খেলছে। দুই) রিজার্ভ বেঞ্চ যথেষ্ট শক্তিশালী। জ্বর হওয়ায় কার্লাইল মিচেলকে খেলাননি খালিদ। আস্থা রেখেছেন গুরবিন্দর-অর্ণবের উপর। আমনা বা প্লাজাকে বসিয়ে নামিয়েছেন জোবি জাস্টিন বা সুরাবুদ্দিনকে। শেষ দশ মিনিট ইস্টবেঙ্গলে তাই কোনও বিদেশিই ছিল না। বোঝাই গেল ডার্বির মহড়া দিয়ে রাখলেন খালিদ। আর মুখে বললেন, ‘‘রবিবার কেউ এগিয়ে নেই।’’ বোঝাই যায় চতুর লাল-হলুদ কোচ টিমে কোনও আত্মতুষ্টি ঢুকতে দিতে নারাজ।

Football Calcutta Football League CFL 2017 East Bengal F.C. Tollygunge Agragami F.C. ইস্টবেঙ্গল টালিগঞ্জ অগ্রগামী Willis Plaza উইলিস প্লাজা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy