Advertisement
E-Paper

জোড়া গোলে ম্যাচ জিতে পাঁচে এখন মোহনবাগান

মাঝমাঠে এই সাহিল ও আক্রমণে নংদম্বা নওরেম—এই দুই জুটির সৌজন্যেই বৃহস্পতিবার কলকাতা লিগে দ্বিতীয় জয় পেল কিবু ভিকুনার মোহনবাগান।

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:২৮
উল্লাস: কল্যাণীতে গোলের পরে নওরেমের সঙ্গে সতীর্থরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

উল্লাস: কল্যাণীতে গোলের পরে নওরেমের সঙ্গে সতীর্থরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

মেহতাব হোসেনের মতো মাঝমাঠে খেলার স্বপ্ন দেখেন ছোটবেলা থেকেই। রোনাল্ডিনহোর ভক্ত মোহনবাগানের সেই শেখ সাহিল গত রবিবার বড় ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ভাল খেলেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাননি। বৃহস্পতিবার খড়দহের ছেলে মাঠ ছাড়লেন ভবানীপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচ সেরা হয়েই। মোহনবাগানের টিম বাস কল্যাণী ছাড়ার সময়ে সমর্থকরাও তাঁর নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছিলেন। মোহনবাগান কোচ কিবু ভিকুনা অবশ্য বলছেন, ‘‘বড় ম্যাচে আজকের চেয়েও ভাল খেলেছিল সাহিল।’’

মাঝমাঠে এই সাহিল ও আক্রমণে নংদম্বা নওরেম—এই দুই জুটির সৌজন্যেই বৃহস্পতিবার কলকাতা লিগে দ্বিতীয় জয় পেল কিবু ভিকুনার মোহনবাগান। ভবানীপুরের আক্রমণ রুখলেন সাহিল তাঁর কভারিং, সাহসী ট্যাকল ও দুরন্ত অনুমানক্ষমতা দিয়ে। আর শঙ্করলাল চক্রবর্তীর দলের রক্ষণ ফালাফালা করে কাটলেন নওরেম তাঁর গতির সৌজন্যে। এই দুইয়ের যুগলবন্দিতেই ভবানীপুরকে ২-০ হারিয়ে পাঁচ ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে কলকাতা লিগে পঞ্চম স্থানে উঠে এল মোহনবাগান।

এক সপ্তাহ আগে এই কল্যাণীতেই লিগের প্রথম জয় পেয়েছিল মোহনবাগান। তার পরে ফের বৃহস্পতিবার। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে ঘরের মাঠ বা সল্টলেকে তাঁর দল এখনও জিততে পারেনি। কিন্তু কলকাতা ছেড়ে কল্যাণীতে এলেই জয় আসছে মোহনবাগানে। কারণ কী? জানতে চাইলে সাংবাদিক সম্মেলনে হেসে ফেলেন মোহনবাগান কোচ কিবু। বলেন, ‘‘মোহনবাগান মাঠের চেয়ে কল্যাণীর মাঠের হাল অনেক ভাল। তা ছাড়া ছেলেরাও প্রত্যেক দিন উন্নতি করছে। এখানে খেলার সুবিধা নেওয়া যাচ্ছে বলেই দল জয় পাচ্ছে।’’

দুই অর্ধে এ দিন দু’টো গোল করল মোহনবাগান। ৩০ মিনিটে রাইট উইংয়ে খেলা ব্রিটো বল ভাসিয়ে দিয়েছিলেন বক্সে। যা সালভা চামোরোর মাথার উপর দিয়ে গিয়ে পড়ে নংদম্বা নওরেমের মাথায়। তিনি হেড করলে সেই বলের নাগাল পাননি ভবানীপুর গোলকিপার অর্ণব দাসশর্মা। সেই বল ধরে অনায়াসে গোলে ঠেলে দেন রোমারিয়ো জেসুরাজ। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৭ মিনিটে ভবানীপুরের অনুপ থেরেস রাজ মোহনবাগান বক্সে শূন্যে ভলি করতে গিয়ে ফ্রান মোরান্তের বুকে পা তুলে দিয়েছিলেন। রেফারি বিপ্লব পোদ্দার তাঁকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দিতে পারতেন অনুপকে। কিন্তু তিনি সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বার করে দেন ভবানীপুরের এই ফুটবলারটিকে। এর পরের মিনিটেই মাঝমাঠ থেকে রোমারিয়ো লম্বা বল বাড়িয়েছিলেন বিপক্ষ বক্সের ডান দিকে দাঁড়ানো চামোরোকে। তিনি সেই বল দ্রুত স্কোয়ারে ঠেলে দেন অরক্ষিত নওরেমকে। যে বল ধরে বাঁ-পায়ে ব্যবধান বাড়ান নওরেম।

ডার্বির পরে এ দিনই প্রথম খেলতে নামল মোহনবাগান। বড় ম্যাচে না খেলা কিমকিমা, সালভা চামোরো-সহ চার ফুটবলারকে এ দিন মাঠে নামিয়েছিলেন কিবু। তিনি জানতেন, বিপক্ষে কামো বায়ির মতো স্ট্রাইকার রয়েছে। ভবানীপুরের জার্সিতে যাঁর সাত গোল হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তাঁকেই রক্ষণ থেকে লম্বা বল তুলে দেবে ভবানীপুর। তাই কামোর জন্য ‘ডাবল কভারিং’ রেখেছিলেন তিনি। কামোকে বোতলবন্দি করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন কিমকিমা। আর মাঝমাঠে কামোকে ধরছিলেন সাহিল। এতেই কামো কাহিল হয়ে পড়ায় ভবানীপুরের ঝাঁঝ কমে যায়। এ দিন বেইতিয়াকেও রিজার্ভ বেঞ্চে রেখে নেমেছিল মোহনবাগান। চার ব্যাকের সামনে দুই হোল্ডিং মিডফিল্ডার শেখ সাহিল ও ফ্রান গঞ্জালেসকে ব্যবহার করেছিলেন রক্ষণকে পোক্ত করতে। আর সেই কাজে সফল হয়ে ম্যাচ সেরা শেখ সাহিল। পুরস্কার হাতে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই পুরস্কার নতুন প্রেরণা দেবে। কিবু স্যর সুযোগ না দিলে সিনিয়র দলে খেলাই হত না।’’

বিপক্ষ কোচ শঙ্করলাল ম্যাচ শেষে রেফারিকে দুষেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘দ্বিতীয়ার্ধে যখন খেলাটা শুরু করলাম, তখনই লাল কার্ড দেখানোয় লড়াইটাই শেষ হয়ে যায় আমাদের। রেফারিকে দেখে আমার ‘ধন্যি মেয়ে’ ছবিতে রেফারি হওয়া রবি ঘোষের কথা মনে পড়ছিল।’’

এ দিন জিতলেও মোহনবাগান রক্ষণে ফাঁকফোকর চোখে পড়ল। একক দক্ষতায় এ দিন কামো তিন বার গোলের দরজা প্রায় খুলে ফেলেছিলেন। লিগ ধরে রাখতে গেলে এই দুর্বলতা কাটাতে হবে কিবুকে।

মোহনবাগান: দেবজিৎ মজুমদার, লালরাম চুলোভা, লালছাওয়ান কিমা, ফ্রান মোরান্তে (শিল্টন ডি’সিলভা), গুরজিন্দর কুমার, শেখ সাহিল, ফ্রান গঞ্জালেস, ব্রিটো, নংদাম্বা নাওরেম, রোমারিয়ো জেসুরাস (শুভ ঘোষ), সালভা চামোরো (জোসেবা বেইতিয়া)।

ভবানীপুর: অর্ণব দাসশর্মা, কিংশুক দেবনাথ, শেখ মুস্তাফা আলি, এনজামুল হক, ভিক্টর কামহুকা, সুপ্রিয় পণ্ডিত (জগন্নাথ সাহা), অনুপ থেরেস রাজ, অ্যান্টো রশিত সাগায়া, মুমতাজ আখতার (সৌরভ চক্রবর্তী), জ়িকাহি ডোডোজ়, কামো স্টিফেন বায়ি।

Football CFL 2019 Mohun Bagan Bhabanipur FC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy