দ্বিতীয় গোলের পর ডুডুর সঙ্গে উৎসব কেনের। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
পুলিশ এসি-১ (এরিক)
মোহনবাগান-৪ (লালকমল, কেন-২, ডুডু)
ইস্টবেঙ্গলের পথেই ছুটছে সবুজ-মেরুন নৌকা।
থুরি, মেহতাব-অবিনাশদের ছবি দেখিয়েই বাগানের স্বদেশি-ব্রিগেডকে তাতাচ্ছেন সঞ্জয় সেন!
বৃহস্পতিবার ডার্বির ‘ড্রেস রিহার্সাল’ ম্যাচে পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার জন্য প্রথমবার ‘লাল-হলুদ টোটকা’ ব্যবহার করেছিলেন বাগান কোচ। নিটফল, এ বারের লিগে টিমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়। ডার্বির বাহাত্তর ঘণ্টা আগে নতুন উদ্যম টিমে।
লাল-হলুদ টোটকাটা কী? সঞ্জয়ের ব্যাখ্যা, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের স্বদেশিরা গোল করতে পারলে, আমরা পারব না কেন? দলের ছেলেদের এই বলেই তাতিয়েছি। ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের ভিডিও দেখিয়েছি।’’
মেহতাবদের প্রভাবে মোহনবাগান ফুটবলাররা কতটা উজ্জীবিত হয়েছেন জানা নেই। তবে বারাসত স্টেডিয়ামে ইদানীং বিশ্বমানের গোলের ছড়াছড়ি। মেহতাব-অবিনাশের পরে এ দিন বাগানের চারটের মধ্যে তিনটে গোলই দূরপাল্লার শটে। চোখ ধাঁধানো গতির।
তবে সে সব ভেবে বোধহয় বাগান কোচের আর কোনও লাভ নেই। কেন না স্থানীয় লিগের ট্রফি প্রায় হাতছাড়া তাঁর। তাই ডার্বির আগে পুলিশ ম্যাচ থেকে বাগানের কী কী প্রাপ্তি হল, সেটা একবার দেখে নেওয়া যাক—
• লালকমলের পুনর্জীবন: মাঝমাঠ থেকে লালকমলের নেতৃত্বেই গোটা টিম জাগছে। গোলের ঠিকানার খোঁজেও লালের অবদান কম নয়। বল যেমন তৈরি করছেন, গোলও করছেন। গতির দুর্বলতাকে অভিজ্ঞতা দিয়ে ঢাকছেন।
• আজহারউদ্দিনের খিদে: এ বারের লিগে বড় টিমের কোন স্ট্রাইকার সবচেয়ে বেশি গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন? দশ জনের মধ্যে ন’জনের উত্তর হবে আজহারউদ্দিন! বাগানের তরুণ স্ট্রাইকারের পরিশ্রমে কোনও ঘাটতি নেই। দারুণ গতি, বক্সের মধ্যে নড়াচড়ার ক্ষমতা এবং জায়গা বদলের ধারণা— একটা প্রকৃত স্ট্রাইকারের সব গুণ আছে আজহারের মধ্যে। শুধু গোলটাই পাচ্ছেন না। বাগান কোচের বিশ্বাস, ডার্বির জন্যই হয়তো গোলটা তুলে রেখেছেন তিনি।
• কেন-বিপ্লব: তাঁর মতো প্রতিভাকে অযথা সমালোচনার আগুনে ফেললে কী ভয়ঙ্কর হতে পারে, সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেল পুলিশ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, কাতসুমিহীন মোহনবাগান মাঝমাঠকে একবারের জন্যও কাঁপতে দেননি। ডার্বিতে যদি এই খেলাটাই ধরে রাখতে পারেন, তা হলে বিশ্বজিতের কপালে কিন্তু চিন্তার ভাঁজ পড়তেই পারে!
এত প্রাপ্তির মধ্যে অবশ্য অন্ধকার সেই রক্ষণ। আগের দিন গুস্তাভো, এ বার জুদেলিন আভেস্কা— বাগান রক্ষণে কোনও বিদেশি স্টপারই নজর কাড়তে পারছেন না। আভেস্কার অবস্থা যেন আরও শোচনীয়। সনি নর্দির দেশের ডিফেন্ডার না ঠিক ভাবে ট্যাকল করতে পারছেন, না করতে পারছেন ঠিকঠাক ব্লকারের কাজ। তাঁকে দেখে মনে হল, যতটা পারছেন নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে খেলছেন। নিটফল, বাড়তি চাপ পড়ছে দুই স্বদেশি ডিফেন্ডার সফর-সঞ্জয় বালমুচুদের উপর। বাগান কোচ নিজেও বিরক্ত, ‘‘আভেস্কা যে জাতীয় দলে খেলেছে, সেটা ওর খেলায় বোঝা গেল না। তবে এক দিনে অবশ্য কোনও ফুটবলারকে বিচার করা সম্ভব নয়।’’
বিচার যে করতে হবেই সঞ্জয়বাবু! তাও মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে। না হলে কলকাতা লিগ তো ফস্কেছেই। এ বার মর্যাদার ডার্বিও না ফস্কে যায়!
মোহনবাগান: শিল্টন, সুমন, সঞ্জয়, জুদেলিন, সফর, তীর্থঙ্কর (প্রকাশ), কেন, লালকমল, আসিফ, আজহার (পঙ্কজ), ডুডু (কাতসুমি)।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy