Advertisement
০৪ মে ২০২৪
আই লিগ

ইস্টবেঙ্গল স্টেশনেও থামল না চেন্নাই এক্সপ্রেস

এ দিনের পর লিগ টেবলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা চার্চিল ব্রাদার্সের চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে গেল আকবর নওয়াজের চেন্নাই। শুধু তা-ই নয়, ইস্টবেঙ্গলকে ছয় নম্বরে রেখেই তাঁরা আট পয়েন্টের ব্যবধান তৈরি করল জনি আকোস্তাদের সঙ্গে। ১১ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে খেতাবের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল মশালবাহিনী।

উল্লাস: জয়ের গোল এল জেসুরাজের পা থেকে। উচ্ছ্বাস চেন্নাই দলের ফুটবলারদের। সোমবার। এআইএফএফ

উল্লাস: জয়ের গোল এল জেসুরাজের পা থেকে। উচ্ছ্বাস চেন্নাই দলের ফুটবলারদের। সোমবার। এআইএফএফ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৪
Share: Save:

চেন্নাই সিটি ২ • ইস্টবেঙ্গল ১

চেন্নাই এক্সপ্রেসকে থামানো যাচ্ছে না। অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো এগোচ্ছেন পেদ্রো মেনজিরা। বিরতি পর্যন্ত পিছিয়ে থেকেও সোমবারের ম্যাচ জিতে খেতাবের দিকে আরও কয়েক পা এগিয়ে গেল চেন্নাই। ১২ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে ক্রমশ ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে দক্ষিণের ক্লাব।

এ দিনের পর লিগ টেবলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা চার্চিল ব্রাদার্সের চেয়ে পাঁচ পয়েন্ট এগিয়ে গেল আকবর নওয়াজের চেন্নাই। শুধু তা-ই নয়, ইস্টবেঙ্গলকে ছয় নম্বরে রেখেই তাঁরা আট পয়েন্টের ব্যবধান তৈরি করল জনি আকোস্তাদের সঙ্গে। ১১ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে খেতাবের দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল মশালবাহিনী।

কোয়েম্বত্তূরের ম্যাচটি থেকে আশা করা গিয়েছিল দেখা যাবে স্প্যানিশ ফুটবলের ঝলকানি। কারণ দু’দল মিলিয়ে আট জন স্পেনের ফুটবলার ছিলেন মাঠে। কিন্তু কার্যত সেটা তো দেখা গেলই না, উল্টে ধাক্কাধাক্কি ও বিশ্রী ফাউলের প্রদর্শনীতে বারবার উত্তপ্ত হল ম্যাচ। সাতটি হলুদ কার্ড হল। মাঝেমধ্যে যে বোরখা পিরেজ বা পেদ্রো মেনজিরা জ্বলে ওঠেননি তা নয়, তবে সেটা ক্ষণিকের আলো হয়ে। ইস্টবেঙ্গলের লালদামুইয়া রালতে যে গোলটা করলেন, সেই বল হেড করে তাঁর পায়ে নামিয়ে দিয়েছিলেন বোরখা। আর এডউইন ভানসোপলের জোরালো শট দিক বদল করিয়ে লাল-হলুদের গোলকিপার রক্ষিত দাগারকে বোকা বানালেন পেদ্রো মেনজি। মেনজি (১১ গোল) এ দিন ফের ছুঁয়ে ফেললেন আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা চার্চিলের উইলিস প্লাজাকে।

যুবভারতীতে চেন্নাইয়ের কাছে হেরেছিল ইস্টবেঙ্গল। তা সত্ত্বেও শেষ পাঁচ ম্যাচ অপরাজিত আলেসান্দ্রোর দলকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। সেটা এতটাই ছিল যে, বেশ কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থক কলকাতা থেকে সুদূর দক্ষিণের রাজ্যের স্টেডিয়ামে পৌঁছে গিয়েছিলেন পতাকা এবং ব্যানার নিয়ে। শুরুতেই ছোট রালতের গোলের পর তাঁদের দেখা গেল উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে। ১-০ এগিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে একের বিরুদ্ধে এক অবস্থায় বল পেয়েও গোল করতে পারেননি জবি জাস্টিন। শুরুতে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের লাগাম হাতে নিলেও বল পজেসনে এগিয়ে ছিল মেনজিরা। বিরতির পরেই চেন্নাই সমতায় ফিরল। ১-১ হয়ে যাওয়ার পর মেনজি, সান্দ্রো রদ্রিগেজ এবং নেস্টর গার্দিলো তাঁদের স্বমূর্তি ধরলেন। স্প্যানিশ ত্রয়ী সক্রিয় হতেই জয়ের রাস্তায় উঠে পড়ল চেন্নাই। তবে সেটা দুই ভারতীয়ের যুগলবন্দিতে। প্রভিত রাজুর বাড়ানো বল ধরে প্লেসিং শটে গোল করলেন আলেকজান্দ্রা জেসুরাজ। তিনিই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের সেরা।

চেন্নাইয়ের স্প্যানিশ আর্মাডাকে থামাতে ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ সঠিক টোটকাই ব্যবহার করেছিলেন। সামনে জবিকে রেখে পিছন থেকে দুই স্প্যানিশ টোনি দোভাল এবং খাইমে কোলাদোকে ব্যবহার করলেন আলেসান্দ্রো। তাঁর লক্ষ্যই ছিল চেন্নাইয়ের মাঝমাঠে সব সময় অন্তত ছয় জন নিজের ফুটবলার রেখে দেওয়া। সেই অঙ্ক বিরতি পর্যন্ত কাজে লাগলেও পরের দিকে তা লাগেনি। দুটি গোলের জন্যই ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ দায়ী। রক্ষণ-পর্দা হিসাবে থাকা কাশিম আইদারা বা লালরিন্দিকা রালতেরা তাদের নিজের কাজ করতে পারেননি। ফলে যা হবার তাই হয়েছে।

পনেরো বছর ধরে আই লিগ না জেতা ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্যে এ বারও মনে হচ্ছে শিকে ছিঁড়বে না।

ইস্টবেঙ্গল: রক্ষিত দাগার, সামাদ আলি মল্লিক, জনি আকোস্তা, বোরখা পিরেজ, মনোজ মহম্মদ, লালদামুইয়া রালতে (ব্র্যান্ডন ভ্যানলালরেমডিকা), কাশিম আইদারা, লালরিন্দিকা রালতে, টোনি ডোভাল (বালি গগনদীপ), খাইমে কোলাদো এবং জবি জাস্টিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE