Advertisement
০৩ মে ২০২৪
দাবার বিশ্বযুদ্ধ

কার্লসেনের ভুলের চেয়েও চমক ভুলটা ভিশির ধরতে না পারা

ষষ্ঠ গেমে একেবারে জোড়া ঝটকা। ২৬ নম্বর চাল। কার্লসেনের ওই রাজার চালেই অবাক হয়ে গেল দাবা বিশ্ব। এই পর‌্যায়ের দাবায় কী ভাবে এত বড় ভুলটা করতে পারল ওর মতো ‘প্রায় দুর্বলতাহীন’ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন! ভুলের মাশুলে আনন্দ তো একটা বোড়ে পেয়ে যাবে আর উল্টে চাপে ফেলে দেবে কার্লসেনকেই। কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্বিতীয় ঝটকাটা লাগল। যখন পাঁচ বারের ভারতীয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারল না।

দিব্যেন্দু বড়ুয়া
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১৬
Share: Save:

ষষ্ঠ গেমে একেবারে জোড়া ঝটকা।

২৬ নম্বর চাল। কার্লসেনের ওই রাজার চালেই অবাক হয়ে গেল দাবা বিশ্ব। এই পর‌্যায়ের দাবায় কী ভাবে এত বড় ভুলটা করতে পারল ওর মতো ‘প্রায় দুর্বলতাহীন’ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন! ভুলের মাশুলে আনন্দ তো একটা বোড়ে পেয়ে যাবে আর উল্টে চাপে ফেলে দেবে কার্লসেনকেই।

কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্বিতীয় ঝটকাটা লাগল। যখন পাঁচ বারের ভারতীয় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারল না। এমন নয় যে, টাইম প্রেশার ছিল ভিশির উপর। তবু ও ভুলটা করল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পরের চালটা দিয়ে আনন্দ বিপর্যয়টা বুঝতেও পারল। টিভির পর্দায় ওর মাথা ঝাঁকানো আর চোখ মুখ ছলছল করাতেই যেটা বোঝা যাচ্ছিল।

কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। কার্লসেন প্রতিপক্ষকে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার বান্দা নয়। বরং নিজের ভুলের খেসারত দিয়ে পরের ১২ চালের মধ্যেই হার স্বীকার করে নিল আনন্দ। যার পুরো সুযোগ তুলে নিয়ে এক পয়েন্টে এগিয়ে গেল নরওয়ের বিশ্বজয়ী। ৩.৫-২.৫।

সাংবাদিক বৈঠকে আনন্দ পরে বলল, “উপহারের আশা না থাকলে অনেক সময় সেটা পেয়েও নজর এড়িয়ে যায়।” আনন্দের জন্য এটা কিন্তু খুব খারাপ ইঙ্গিত। আগের দিনই লিখেছিলাম, পরের দুটো গেমেই বোঝা যাবে দাবার বিশ্বযুদ্ধে পাল্লা কার দিকে ভারী। কার্লসেন মরিয়া হয়ে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করবে। এ দিনের গেমে বোঝাও যাচ্ছিল কতটা চাপে ছিল ও। যে জন্য হয়তো এত বড় ভুলটা হয়ে যায় ওর মতো তুখোড় প্রতিভারও।

তবে আনন্দ ওর প্রথম চ্যালেঞ্জটা রুখতে না পারায় এ বার কিন্তু অনেকটা চাপমুক্ত হয়ে গেল কার্লসেন। সাংবাদিক বৈঠকে কার্লসেন বলেও দিল, “চাপে পড়ে ভুল হয়। কিন্তু অনেক সময় ভাগ্যক্রমে তার ফলটা ভুগতে হয় না।”

চ্যালেঞ্জটা বরং আরও কঠিন হয়ে গেল আনন্দের জন্য। কেননা এর পরের গেমেও ভিশিকে কালো ঘুঁটিতে খেলতে হবে। আর এ রকম একটা ভুল করার পর তার রেশ কাটানোটাও সহজ নয়। পরের গেমগুলোতে এটা তাড়া করে বেড়ায়। অতিরিক্ত সাবধান হওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যেতেই পারে।

একটাই বাঁচোয়া। রবিবার তৃতীয় রেস্ট ডে। আগের বিশ্রামের দিনটার পর আনন্দ দুরন্ত ভাবে ফিরে এসে হারিয়েছিল কার্লসেনকে। বিশ্রামের পুরো ফায়দা তুলে সোমবার তরতাজা ভিশির সপ্তম গেমে একই ভাবে ছন্দ দেখাতে পারার উপর এ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফল অনেকটা নির্ভর করবে। আমাদের ভিশি সহজে হার মানার ছেলে নয়। লড়াইটা তাই আরও জমে ওঠার অপেক্ষায় আছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE