Advertisement
E-Paper

হেরে বাগান যেন আরও অন্ধকারে

পড়শি ক্লাব থেকে ভেসে আসছিল লিগ জেতার উচ্ছ্বাস! তাতে ১২৫ বছরের পুরনো ক্লাব তাঁবুতে যেন আরও অন্ধকার নামল বৃহস্পতিবার রাতে।

তানিয়া রায়

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৯
হতাশ বিদেমিরা। —নিজস্ব চিত্র।

হতাশ বিদেমিরা। —নিজস্ব চিত্র।

টালিগঞ্জ ১ (সানডে)

মোহনবাগান ০

পড়শি ক্লাব থেকে ভেসে আসছিল লিগ জেতার উচ্ছ্বাস! তাতে ১২৫ বছরের পুরনো ক্লাব তাঁবুতে যেন আরও অন্ধকার নামল বৃহস্পতিবার রাতে।

ডার্বি না খেলা কি বুমেরাং হয়ে ফিরল?

না কি মাঠে নামার আগেই ‘চিরশত্রু’ ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাস গড়ে ফেলার জের?

ছয় গোলে ম্যাচ জেতার পর বিশ্রী হার। কোন রসায়নে বাগানের এই অধঃপতন?

ড্যানিয়াল বিদেমি, ড্যারেল ডাফিরা যখন মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছিলেন, তখন তাঁদের দেখে মনে হচ্ছিল যেন সব হারিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়ে ফেরা কোনও মানুষ। যে ম্যাচটা নিয়ে এ বারের লিগে সবচেয়ে দড়ি টানাটানি হয়েছিল, যার জেরে ডার্বি থেকেই নাম তুলে নিয়েছিল মোহনবাগান, সেই ভেস্তে যাওয়া টালিগঞ্জ ম্যাচের রিপ্লেতেই হার!

প্রিয় দলের এই দুর্দিনেও মাঠে হাজির হয়েছিলেন হাজার পাঁচেক মোহনবাগান সমর্থক। হারের পর হতাশা, ক্ষোভ, আফসোস আর খেতাব হারানোর যন্ত্রণায় তাঁদের মুখ থেকে বেরিয়েছে অভিধান-বর্হিভূত বাছা বাছা শব্দ। তার কিছু ফুটবলারদের উদ্দেশে। বেশির ভাগটাই কর্তাদের জন্য। ‘‘জেদ করে ডার্বি না খেলার অভিশাপ। এ রকম তো হবেই।’’ আবার কারও কারও মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘ড্যাং ড্যাং করে ওরা লিগটা নিয়ে যেতে পারত না, যদি আমরা ডার্বি খেলতাম।’’

ছয় গোলের ম্যাচের পর যে বিদেমিদের মুখ দিয়ে কথার ফুলঝুরি ছুটেছিল, তাঁরা এ দিন মুখে কুলুপ এঁটেছেন। বলবেনই বা কী! জেতা তো দূরের কথা, লিগ টেবলের নীচের দিকে থাকা টিমের কাছে হার। ম্যাচের পর মাঠের মধ্যে পাওয়া গেল শুধু প্রেসিডেন্ট টুটু বসুকে। যে টুটুবাবু ভেস্তে যাওয়া ম্যাচে মাঠে চেয়ার নিয়ে বসে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। নানা অভিযোগ করেছিলেন রেফারিং নিয়ে। এ দিন তাঁকে দেখা গেল অন্য ভূমিকায়। ম্যাচের শেষে টালিগঞ্জ কোচ রঞ্জন চৌধুরির সঙ্গে সানডেরা হাততালি দিচ্ছিলেন বাগান-সমর্থকদের ‘অভিনন্দন’ জানাতে। দেখা গেল, টুটুবাবুও হাততালি দিচ্ছেন তাঁদের সঙ্গে। তাঁর মুখ থেকেও বেরিয়েছে, ‘‘ওয়েল প্লেড টালিগঞ্জ।’’ ডাফিরা যা খেলেছেন তাতে অবশ্য এ দিন অন্য কিছু বলারও ছিল না ক্লাব প্রেসিডেন্টের। বিরতির আগেই তো সানডের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল টালিগঞ্জ।

বাগান আদৌ রানার্স হতে পারবে কি না, এই সংশয়ের মধ্যে যে প্রশ্নটা এ দিন বাগান তাঁবুতে ঘোরাফেরা করছিল তা হল, ম্যাচ শুরুর আগেই যদি কেউ জেনে যায় চির প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে, তা হলে ফুটবলারদের খেলার কী মোটিভেশন থাকে? কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী মানতে না চাইলেও, ডাফি-পঙ্কজ-আজহারদের দেখে একবারও মনে হয়নি জেতার কোনও ইচ্ছে আছে। আইএফএ-ও এই ম্যাচটাকে দুয়োরানি করে রেখেছিল। সম্প্রচার তো হয়ইনি, সরকারি ভাবে কোনও টিম লিস্টও প্রকাশ করা হয়নি। দেওয়া হয়নি ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও। বাগানের মতো রাজ্য ফুটবল সংস্থারও কী দুর্দশা! কোনও ক্রমে লিগ শেষ করাই যেন এখন উদ্দেশ্য দু’পক্ষেরই।

ইস্টবেঙ্গলের সাতে সাত হওয়ার দিনেও মনে হল কলকাতা লিগ সত্যিই যেন কৌলীন্য হারাচ্ছে!

মোহনবাগান: অর্ণব, সার্থক, বিক্রমজিৎ, অসীম, চিন্তা, তপন (অজয়), শরণ, পঙ্কজ (সিমরনজিৎ), আজহার, বিদেমি, ডাফি (আমিরি)।

mohun bagan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy