Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

প্রায় সব অধিকারই কেড়ে নেওয়া হল বোর্ড পদাধিকারীদের

এই মুহূর্তে বোর্ডের ক্ষমতায় এক দিকে রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত সিওএ। যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রাক্তন সিএজি বিনোদ রাই। অন্য দিকে সক্রিয় ছিলেন তিন পদাধিকারী।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

ভারতীয় বোর্ডের বিবদমান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই তুঙ্গে। সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত দুই সদস্যের কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্‌স (সিওএ) এ বার বোর্ডের পদাধিকারীদের হাত থেকে কার্যত সমস্ত ক্ষমতাই কেড়ে নিল।

এই মুহূর্তে বোর্ডের ক্ষমতায় এক দিকে রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত সিওএ। যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রাক্তন সিএজি বিনোদ রাই। অন্য দিকে সক্রিয় ছিলেন তিন পদাধিকারী। কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট সি কে খন্না, সচিব অমিতাভ চৌধুরি এবং কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ চৌধুরি। এঁদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ অনিরুদ্ধ-কে অনেক দিন ধরেই কার্যত নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছিল সিওএ। সচিব নানা ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছিলেন কিন্তু মনে করা হচ্ছে, এর পর তাঁর ক্ষমতা বলেও আর কিছু পড়ে থাকল না।

সিওএ ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে তাদের যে ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ জমা দিয়েছে, তাতে পদাধিকারীদের সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে। কারণ, লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তিন জনেই তাঁদের তিন বছরের মেয়াদ শেষ করে ফেলেছেন। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত পর্যবেক্ষকদের কমিটি বলে দিয়েছে, কোনও সিদ্ধান্তই তাঁরা কমিটির সঙ্গে আলোচনা না করে নিজেরা নিতে পারবেন না।

তিন পদাধিকারীর বোর্ডের অর্থ খরচ করার উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছে সিওএ। দেখা গিয়েছে, বোর্ডের পয়সায় তাঁরা যত্রতত্র ঘোরাঘুরি করছিলেন। কেউ কেউ পাঁচ তারা হোটেলে দিনের পর দিন বিলাসবহুল ঘরে থাকছেন। বিজনেস ক্লাস উড়ানের টিকিটে ইচ্ছা মতো ভ্রমণ করছেন। সেগুলো সবই বন্ধ করতে চাইছে সিওএ। বলে দেওয়া হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটির আগাম অনুমোদন ছাড়া কেউ এ ভাবে আর ভ্রমণ করতে পারবেন না, হোটেলেও থাকতে পারবেন না।

আরও তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে, পদাধিকারীদের বলে দেওয়া হয়েছে, বোর্ডের অর্থ ইচ্ছা মতো আইনি লড়াইয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। তার জন্যও সিওএ-র অনুমোদন দরকার হবে। শোনা যাচ্ছে, ক্রিকেটারদের চুক্তি ‘করছি, করব’ বলে ফেলে রাখাটাই বিনোদ রাই-দের অসন্তুষ্ট করে তুলেছে। ক্রিকেটারেরা বিমার আওতার বাইরে চলে যেতে পারতেন। সেটা আবিষ্কার করেই তাড়াতাড়ি করে সিওএ সেই চুক্তি তৈরি করে ঘোষণা করে দেয়।

আবার বোর্ডের দিক থেকেও পাল্টা অভিযোগ রয়েছে। বিনোদন জগতের এক প্রাক্তন সাংবাদিককে অন্যতম জেনারেল ম্যানেজার করে আনা নিয়ে তীব্র বাদানুবাদ চলছে। বোর্ডের সদস্যদের দাবি, বিশাল অঙ্কের অর্থ দিয়ে এমন এক ব্যক্তিকে আনার কোনও যুক্তিই নেই। বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিওএ। অথচ, বোর্ডের সংবিধান বলছে, যে কোনও নিয়োগ চুড়ান্ত করার আগে বোর্ডের কমিটিতে তা নিয়ে কথা হওয়া উচিত।

সিওএ যদিও খুব একটা বোর্ড সদস্যদের অভিযোগ-অনুযোগকে পাত্তা দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। পদাধিকারী এবং রাজ্য সংস্থার প্রধানদের কাছে পাঠানো চিঠিতে এমনও বলা হয়েছে যে, সিওএ-কে প্রতিলিপি না পাঠিয়ে কেউ কোনও নির্দেশ দিলে, সেটা গ্রাহ্য হবে না। তৎক্ষণাৎ সেই নির্দেশের কথা জানাতে হবে সিওএ-কে। ক্রিকেটারদের চুক্তি কে সই করবে, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রথা অনুযায়ী, তাতে সই করার কথা সচিব অমিতাভের। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, সই করবেন না। কারণ, সিওএ তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করে ক্রিকেটারদের চুক্তিপত্র তৈরি করেছে। সিওএ নতুন নির্দেশ দিয়েছে যে, পাঁচ দিনের মধ্যে সচিব যদি চুক্তিপত্র সই না করেন, তা হলে চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সেই চুক্তি সই করে দেবেন।

চিঠি নিয়ে বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে স্বভাবতই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জনে বলেছেন, ‘‘সিওএ বোর্ড প্রশাসনের নিয়ম-নীতি বিসর্জন দিয়ে নিজেদের মতো সব কিছু চালাতে চাইছে। বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে কি এক বারও কথা বলা হয়েছে চুক্তিপত্র চূড়ান্ত করার সময়? আমাদের কি চোখ বুজে সমস্ত কিছুতে সই করে দিতে হবে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BCCI officials CoA Cricket Vinod Rai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE