মঙ্গলবার সারাদিন বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদের সঙ্গে কলকাতার ফুটবল নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে নানা মতামত পেলাম তাদের কাছ থেকে। কেউ বলছেন, কলকাতা ফুটবলে বিদেশি কোচের দিন শেষ। স্বদেশী কোচের হাত ধরেই সাফল্য আসবে দুই প্রধানে। যেমন মোহনবাগানে ট্রফি খরা কাটিয়ে সাফল্য পাচ্ছে আমার ভ্রাতৃসম সঞ্জয় সেন।
কেউ কেউ আবার এখনও জোরালো সওয়াল করে যাচ্ছেন ট্রেভর মর্গ্যান, করিম বেনশরিফা-র মতো বিদেশি কোচদের জন্য।
ভারতীয় ফুটবল-কে দীর্ঘ সাত দশক খুব কাছ থেকে দেখার সুবাদে আমি এই তর্কে ঢুকব না। কারণ আমি মনে করি, কোচ স্বদেশি হোক বা বিদেশি—এ দেশের ফুটবলে টিকতে গেলে তাকে ট্রফি দিতে হবে। সঙ্গে তুলে আনতে হবে নতুন প্রতিভা। এই দু’টো কাজ যে কোচ দক্ষতার সঙ্গে করতে পারে, সে-ই সফল হয়।
মর্গ্যান বা করিম যখন কলকাতা ফুটবলে সাফল্য পেয়েছে, তখন কিন্তু সবাই বিদেশি কোচ নিয়েই ধন্য ধন্য করেছেন। কিন্তু এখন সবাই উল্টো গাইছেন মর্গ্যান ট্রফি না পেতেই। মৃদুলকে তাই মাথায় রাখতে হবে ইস্টবেঙ্গলের মতো সমর্থক ভিত্তিক বড় ক্লাবে টিকে থাকতে গেলে ট্রফি দিতেই হবে।
মৃদুল অতীতে আই লিগে মোহনবাগানে ভাল কাজ করেছে। তবে সেটা ‘স্টপগ্যাপ কোচ’ হিসেবে। সদ্য অনামী ফুটবলারদের নিয়ে বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি চ্যাম্পিয়নও করেছে। এ বার লড়াইটা কিন্তু আলাদা। মর্গ্যানের ছেড়ে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল কোচের জোব্বাটা গায়ে চড়াতে গেলে ওকে কিন্তু আই লিগ, ফেডারেশন কাপ জিততে হবে।
বড় দলের কোচের পদে স্বদেশিদের সরিয়ে বিদেশিরা জায়গা করে নিচ্ছে গত দশ-বারো বছরে। অনেকে বলে থাকেন, ভাষা সমস্যায় নাকি বিদেশি কোচের কথা বুঝতে পারে না ফুটবলাররা। আমি এটা মানি না। ফুটবলের একটা নিজস্ব ভাষা রয়েছে। সেটা সব ফুটবলার বোঝে।
কাজেই স্বদেশি, বিদেশি নয়। বড় ক্লাবে টিকতে গেলে মোদ্দা কথা ট্রফি চাই। মৃদুল যদি ইস্টবেঙ্গলে ফেডারেশন কাপটা এনে দেয়, তা হলে ময়দানে ফের স্বদেশি কোচদের রমরমা শুরু হতেই পারে। সেটা ও পারবে না আমি বলছি না। পারলে আরও এক জন বঙ্গসন্তান কোচের সাফল্যে আমি আনন্দিত হব। কিন্তু যদি সেটা না হয়, তা হলে অদূর ভবিষ্যতেই ফের কোচের ব্যাটন বিদেশিদের হাতে ফিরে গেলে অবাক হব না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy