সনিই দলের ওজন। তাঁর কাঁধেও ওজন। বুধবার প্র্যাকটিসে ডাফির সঙ্গে। -উৎপল সরকার
তিনি থাকা মানেই বাড়তি অনুপ্রেরণা! আরও আত্মবিশ্বাস পাওয়া।
তাঁকে ঘিরেই এখন মোহনবাগান ড্রেসিংরুমে পারদ ওঠানামা করে।
খাতায়কলমে কাতসুমি অধিনায়ক হলেও তাঁকেই আসল ‘নেতা’ মনে করছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড! যেমন এক সময় ছিলেন চিমা, ব্যারেটোরা।
পাঁচ ফুট সাড়ে আট ইঞ্চির বিদেশি এখন কার্যত মোহনবাগান ফুটবলারদের অভিভাবক হয়ে উঠেছেন।
তিনি সনি নর্ডি। এ বার আই লিগ জেতার লড়াইয়ে এই মুহূর্তে বাগানের প্রাণভোমরা। কোচের পাশে দাঁড়িয়ে ড্রেসিংরুমে ফুটবলারদের পেপ-টক দিচ্ছেন তিনি-ই। হাইতি স্ট্রাইকার বুধবার বিকেলে স্বীকারও করে নিলেন ম্যাচের আগে সতীর্থদের নানা ভাবে উদ্বুদ্ধ করছেন। প্র্যাকটিসের পর বাগান তাঁবু ছাড়ার আগে সনি বললেন, ‘‘আমি ম্যাচের আগে সবাইকে সব সময় বলি, ক্লাব কর্তা থেকে শুরু করে সদস্য-সমর্থক— আমাদের ঘিরে সবার অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। একমাত্র ম্যাচ জিতলে, আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলেই আমরা সবাইকে খুশি করতে পারব। তাই আমাদের সব ম্যাচ জিততে হবে।’’
বৃহস্পতিবারই চেন্নাই উড়ে যাচ্ছে মোহনবাগান। ২১ জানুয়ারি আই লিগের নতুন আর একটা টিম চেন্নাই সিটির বিরুদ্ধে ম্যাচ সনিদের। তার পরের ডিএসকে শিবাজিয়ান্স ম্যাচও অ্যাওয়ে। পরপর দুটো অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকেও ছয় পয়েন্ট টার্গেট রাখছেন সনিরা। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচ জয়। ডাফি থেকে জেজে, প্রীতম থেকে শৌভিক সবার মধ্যে তাই ইতিমধ্যে ঢুকে পড়েছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন। সনি তো বলেই দিলেন, ‘‘গোল করলে সবারই ভাল লাগে। তবে আমাদের মূল লক্ষ্য যে কোনও মূল্যে ম্যাচ জেতা। কে গোল করল সেটা বড় কথা নয়। আমি পাঁচ গোল করলাম আর টিম হেরে গেল, তাতে লাভ নেই! একটা টিম চ্যাম্পিয়ন হতে পারে তখনই, যখন টিমগেম খেলে।’’
আসলে সঞ্জয় সেনের বাগানে এখন সবার মুখে টিমগেমের কথা। নায়ক বাছতে চাইছেন না কেউ। স্বদেশি থেকে বিদেশি—সব ফুটবলারের মনে বাগান-কোচ গত তিন বছরে অন্তত এক হয়ে লড়াই করার ভাবনাটা পুরোপুরি ঢুকিয়ে দিতে পেরেছেন। সেটা সনি থেকে ডাফি সবার সঙ্গে কথা বললেই বোঝা যায়। শেষ দু ম্যাচে চার গোল করা ড্যারেল ডাফি নতুন এসেছেন এ বার। সেই স্কটিশ স্ট্রাইকারও বললেন, ‘‘আমাদের প্লাস পয়েন্ট হল, আমরা টিম হিসেবে খেলি। আমাদের জয়ে কারও একার কৃতিত্ব নেই।’’ নতুন বাগানে যোগ দেওয়া বিদেশি এডুয়ার্ডোর সবেমাত্র অভিষেক হয়েছে। তাঁর গলাতেও তো একই কথার প্রতিধ্বনি। ‘‘আমাদের ফরোয়ার্ড লাইন যেমন ভাল, তেমনই মাঝমাঠ। সনি খেলাটা তৈরি করছে। ডাফি-জেজেরা গোল পাচ্ছে। আর আমরা ডিফেন্স সামলাচ্ছি।’’
বেঙ্গালুরু, ইস্টবেঙ্গল ছাড়া সে অর্থে মোহনবাগানকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলার মতো টিম এ বার আই লিগে প্রায় নেই। বিপক্ষে নেই র্যান্টি-ওডাফাদের মতো বড় মাপের স্ট্রাইকার, যাঁরা একাই ম্যাচের রং বদলে দিতে পারতেন। যদিও একেবারেই এ কথা মানতে চান না ডাফি। স্কটিশ স্ট্রাইকার বরং বলছেন, ‘‘আই লিগের লড়াই সব সময় কঠিন। কোনও টিমকে হালকা ভাবে নেওয়ার প্রশ্ন নেই। আমাদের কাজটা সহজ হয়ে গিয়েছে বলে আমি মনে করি না।’’ তবে আই লিগে মোহনবাগান এবং তাঁর নিজের এ পর্যন্ত সাফল্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ডাফির ব্যাখ্যা, ‘‘আমাদের আই লিগের টিমে অনেক ভাল মানের ফুটবলার রয়েছে। স্বভাবতই খেলাটা সহজ হয়ে যাচ্ছে আমাদের। দল যেমন সাফল্য পাচ্ছে তেমনই আমি গোল পাচ্ছি। যে ব্যাপারটা কলকাতা লিগে ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy