Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
বৈঠক উপেক্ষা করার পরামর্শ বোর্ডকে

লোঢা সংস্কারকে বেআইনি বলে যুদ্ধে নামলেন কাটজু

এত দিন যুদ্ধটা চলছিল রেখেঢেকে, আড়ালে-আবডালে। রবিবারের পর যুদ্ধটা একদম খুল্লমখুল্লা হয়ে গেল। মার্কণ্ডেয় কাটজু বনাম রাজেন্দ্র মাল লোঢা! সহজ করে বললে, ভারতীয় বোর্ড বনাম লোঢা কমিশন। বোর্ড যে আগামীতে কমিশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের রাস্তায় যেতে চাইছে, তা দিন দু’য়েক আগের নয়াদিল্লির বিশেষ সাধারণ সভার নির্যাস থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৫৫
Share: Save:

এত দিন যুদ্ধটা চলছিল রেখেঢেকে, আড়ালে-আবডালে। রবিবারের পর যুদ্ধটা একদম খুল্লমখুল্লা হয়ে গেল।

মার্কণ্ডেয় কাটজু বনাম রাজেন্দ্র মাল লোঢা! সহজ করে বললে, ভারতীয় বোর্ড বনাম লোঢা কমিশন।

বোর্ড যে আগামীতে কমিশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের রাস্তায় যেতে চাইছে, তা দিন দু’য়েক আগের নয়াদিল্লির বিশেষ সাধারণ সভার নির্যাস থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই যুদ্ধ যে এত তাড়াতাড়ি শুরু হয়ে যাবে, রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বোর্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট রায়কে আক্রমণ করে বসবেন বোর্ডের আইনি সেনাপতি কাটজু— বোঝা যায়নি। বোঝা যায়নি, লোঢা নির্দেশিত সংস্কারকে সোজা ‘অসাংবিধানিক এবং বেআইনি’ বলে দেবেন তিনি! শুধু তাই নয়, বোর্ডকে পরামর্শও দেবেন মঙ্গলবারের লোঢা কমিশনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকে না যেতে! বলবেন, সবার আগে সুপ্রিম কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে রিভিউ পিটিশন দাখিল করতে!

নয়াদিল্লিতে রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বোর্ড কর্তাদের হাতে নিজের তৈরি অন্তর্বর্তিকালীন রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি কাটজুর। কে জানত, সেখানে তিনি ঝাঁঝালো সাংবাদিক সম্মেলনও করে বসবেন। কাটজু এ দিন হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট যা করেছে, তা অসাংবিধানিক। বেআইনি। সংবিধানে আইন সভা, প্রশাসন আর বিচারব্যবস্থা বলে আলাদা তিনটে ব্যাপার আছে। একটার কাজ আর একটার চেয়ে অনেক আলাদা। আইন তৈরি করে দেশের আইন সভা। এখন যদি দেশের বিচারব্যবস্থা আইন তৈরি করতে বসে যায়, তা হলে তো ভয়াবহ দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হচ্ছে।’’ এবং এখানে না থেমে তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমি বোর্ডকে পরামর্শ দিয়েছি, বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে রিভিউ পিটিশন দাখিল করতে। এখানে তো দেখছি, সুপ্রিম কোর্ট বাইরের একটা কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছে বোর্ডের শাস্তি ঠিক করতে।’’

কাটজু বলে দিচ্ছেন, বোর্ডের কাজকর্মে কোথায় কোথায় গলদ থাকছে তা বার করতে লোঢা কমিটিকে নিযুক্ত করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেটা ঠিক আছে। কিন্তু সেই কমিটি যখন তার রিপোর্ট জমা করল, তখন সেটা সংসদ আর বিভিন্ন বিধানসভায় পাঠানো হল না কেন? ‘‘আইনসভার উপর তখন ছাড়া উচিত ছিল যে, সুপারিশ মানা হবে, নাকি হবে না?’’

বোর্ড এ দিন রাত পর্যন্ত সরকারি ভাবে জানায়নি তারা কী করবে। জানায়নি, কাটজুর পরামর্শ মেনে তারা লোঢা কমিশনের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করে আগে রিভিউ পিটিশনের রাস্তায় হাঁটবে কি না। বোর্ড সচিব অজয় শিরকে এ দিন শুধু বলে দেন, ‘‘আগে রিপোর্ট পড়ি। তার পর ঠিক করব।’’ লোঢা কমিশন— তারাও কাটজুর চরম বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে কোনও সরকারি বক্তব্য পেশ করেনি। কিন্তু কমিশনের সঙ্গে যুক্ত কেউ কেউ ফোনে বললেন যে, কাটজুর কথা শুনে যদি বৈঠক বাতিল করে বোর্ড, তা হলে আদালত অবমাননা অপেক্ষা করে থাকতে পারে। যদি না সোমবার সুপ্রিম কোর্ট রায়ের উপর স্থগিতাদেশ নিয়ে আসতে পারে বোর্ড।

বলা হচ্ছে, রায় অনুযায়ী লোঢা কমিশনের নির্দেশ মানতে হবে বোর্ডকে। বোর্ড প্রেসিডেন্ট এবং সচিবের সঙ্গে বৈঠক ঠিক করেছিল কমিশন। বোর্ড নয়। অতএব, যদি স্থগিতাদেশ ছাড়াই বৈঠক বাতিল করা হয়, তা হলে আদালত অবমাননা হয়ে যেতে পারে। মার্কণ্ডেয় কাটজু— তিনি ও তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য পাত্তা পাচ্ছে না। পরিষ্কার বলে দেওয়া হচ্ছে যে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত কমিশনকে দায়িত্ব দিয়েছে রায় কার্যকর করার। সেখানে কাটজু কেন, যে কারও বক্তব্যই অপ্রাসঙ্গিক। এটাও বলা হচ্ছে যে, রিভিউ পিটিশন সোজা বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে দাখিল করা যায় না। সেটা আগে বর্তমান বেঞ্চের কাছেই পাঠাতে হবে, যে বেঞ্চ রায় দিয়েছে। মানে, দেশের প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুরের বেঞ্চ। যদি নিজের প্রদেয় রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন তিনি গ্রাহ্য করেন, তবেই বৃহত্তর বেঞ্চের আবেদনে যাওয়া সম্ভব!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajendra Lodha Markandey Katju BCCI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE