একটি ম্যাচের উপর নির্ভর করছিল তিন দলের ভাগ্য। আফগানিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচে শ্রীলঙ্কার পাশে ছিল বাংলাদেশ। কারণ, শ্রীলঙ্কা জিতলে তবেই তারা সুপার ফোরে উঠত। বাংলাদেশের মুখে হাসি ফোটালেন শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারেরা। আফগানিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে উঠল শ্রীলঙ্কা। নিজেদের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও সুপার ফোরে তুলে দিল তারা। বিদায় নিল আফগানিস্তান। কাজে এল না আফগানিস্তানের ৪০ বছরের মহম্মদ নবির পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা।
আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে সমস্যা হওয়ায় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। কিন্তু পিচ বুঝতে ভুল করেন তিনি। এই ম্যাচের উইকেট শুরুতে ব্যাটারদের জন্য কঠিন ছিল। যত সময় গড়াল তত সহজ হল খেলা। নইলে আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণের সামনে যে ভাবে শ্রীলঙ্কার ব্যাটারেরা অবলীলায় রান করলেন তা সাধারণত দেখা যায় না।
আফগানিস্তানের ব্যাটিং শুরু থেকেই সমস্যায় পড়ে। পর পর উইকেট পড়তে থাকে। শ্রীলঙ্কার পেসার নুয়ান তুষারা আরও একটি ম্যাচে নতুন বলে নজর কাড়লেন। প্রথম স্পেলেই ৩ উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ড ভেঙে দেন তিনি। ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তুষারা। ৭৯ রানে ৬ উইকেট পড়ে গিয়েছিল আফগানিস্তানের। এই ম্যাচে নজর কেড়েছে শ্রীলঙ্কার ফিল্ডিং। কুশল পেরেরা ও দাসুন শনাকার দু’টি ক্যাচ বহু দিন মনে থেকে যাবে। দেখে মনে হচ্ছিল, কোনও রকমে ১১০-১২০ রান করবে তারা।
শেষ দুই ওভারে আফগানিস্তানকে খেলায় ফেরান নবি। প্রথমে দুষ্মন্ত চামিরা ও তার পর দুনিথ ওয়েল্লালাগের বলে একের পর এক বড় শট মারেন তিনি। নবি স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভাল খেলেন। তিনি জানতেন, শেষ ওভারে বাঁহাতি স্পিনার ওয়েল্লালাগে বল করবেন। অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। সেই ওভারের প্রথম পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা মারেন নবি। শেষ বলে ছক্কা মারলে নজির হত। সেটা পারেননি তিনি। ২২ বলে ৬০ রান করেন ৪০ বছর বয়সি নবি। তাঁকে সঙ্গ দেন রশিদ। দু’জনের ব্যাটে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করে আফগানিস্তান।
আরও পড়ুন:
দেখে মনে হচ্ছিল, আফগান স্পিনারদের সামনে সমস্যা হবে শ্রীলঙ্কার। বিশেষ করে ফর্মে থাকা পাথুম নিসঙ্ক আউট হওয়ার পর মনে হচ্ছিল, প্রথম বার হারতে হবে তাদের। কিন্তু অপর ওপেনার কুশল মেন্ডিস শ্রীলঙ্কাকে জেতালেন। শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলেন তিনি। কুশল পেরেরা, চারিথ আসালঙ্ক, কামিন্দু মেন্ডিসেরা তাঁকে সঙ্গ দিলেন।
আফগানিস্তানকে সমস্যায় ফেলল দলের স্পিন আক্রমণ। মুজিব উর রহমানকে এই ম্যাচে খেলানো হয়েছিল। ১ উইকেট নিলেও ৩.৪ ওভারে ৪২ রান দিলেন তিনি। নবি, রশিদ, নুর আহমেদরাও উইকেট তুলতে পারলেন না। দেখে মনে হচ্ছিল, বলের গতি তাঁদের একটু বেশি ছিল। সেই গতি কাজে লাগালেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটারেরা। ফিল্ডিংও খারাপ হল আফগানিস্তানের। তার খেসারত দিতে হল। আট বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে জিতল শ্রীলঙ্কা। ৫২ বলে ৭৪ রান করে অপরাজিত থাকলেন মেন্ডিস।
আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ হলেও গ্যালারিতে ছিলেন বাংলাদেশের অনেক সমর্থক। নবির ছক্কা দেখে মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিল তাঁদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা জেতায় উল্লাস শুরু করলেন তাঁরাও। মাঠে না নেমেই সুপার ফোরে জায়গা করে নিল বাংলাদেশ।