করমর্দন বিতর্ক কি চলবে এশিয়া কাপে? গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। রবিবার সুপার ফোরে কি তাঁদের দেখা যাবে হাত মেলাতে? জানা গিয়েছে, হাত মেলানো নিয়ে পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের নির্দেশ দিয়েছে আইসিসি।
‘ক্রিকবাজ়’ জানিয়েছে, আইসিসি-র সিইও সংযোগ গুপ্তের সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান মহসিন নকভির বৈঠক হয়েছে। তার পর পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সলমন আলি আঘা ও কোচ মাইক হেসনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন নকভি। সেখানে পাকিস্তানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সুপার ফোরের ম্যাচে যেন পাক ক্রিকেটারেরা ভারতের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাতে না যান। আইসিসি-র এই নির্দেশ মেনে নিয়েছে পাকিস্তান। অর্থাৎ, রবিবারও দু’দলের ক্রিকেটারদের হাত মেলাতে দেখা যাবে না।
বুধবার জানা গিয়েছিল, পাকিস্তানের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ভারত-পাক ম্যাচের রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্ট। লাহোরে রামিজ রাজা এবং নাজম শেট্টির সঙ্গে বৈঠকের পর পিসিবি চেয়ারম্যান নকভি বলেছিলেন, “ক্রিকেট এবং রাজনীতি একসঙ্গে চলতে পারে না। ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ থেকেই এই সঙ্কট চলছে। পাইক্রফ্টের আচরণ নিয়ে আমাদের সমস্যা ছিল। তবে পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়েছে।”
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড প্রথমে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে। দেখা গিয়েছে, পাকিস্তানের অধিনায়ক সলমন, ম্যানেজার নাভিদ আক্রম চিমা, কোচ মাইক হেসন এবং আরও দু’-একজন কর্তার সঙ্গে দুবাই স্টেডিয়ামে নিজের ঘরে কথা বলছেন পাইক্রফ্ট। সেখানেই জ়িম্বাবোয়ের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা ম্যাচ রেফারি ক্ষমা চান বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। তবে সেই ভিডিয়োয় কোনও আওয়াজ নেই। ফলে কে কী বলছেন, ওই ভিডিয়ো থেকে তা জানার কোনও উপায় নেই। অর্থাৎ পাইক্রফ্ট ক্ষমা চেয়েছেন না ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। পাইক্রফ্টের আচরণেও ক্ষমা চাওয়ার কোনও ভঙ্গিমা লক্ষ করা যায়নি।
আরও পড়ুন:
পাইক্রফ্টের ক্ষমা চাওয়া নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’ সংবাদপত্র এবং ‘ক্রিকবাজ়’ ওয়েব সাইট জানাচ্ছে, পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাননি। তাদের দাবি, যে বৈঠকের কথা বলা হয়েছে, সেখানে ম্যাচ রেফারি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন মাত্র। মূলত ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’কে আইসিসি-র এক সূত্র বলেছেন, “ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। বিশেষ করে এমন একজনের থেকে যার কোনও দোষই নেই।”
আইসিসি-র বক্তব্য, তাদের কাজই হল ম্যাচ পরিচালকদের পাশে থাকা। পাকিস্তানের চাপে পাইক্রফ্টকে সরিয়ে দেওয়া হলে আইসিসি-র স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। পাশাপাশি এটাও প্রমাণিত হবে, আইসিসি পাকিস্তানকে ভয় পায়! খুব খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে। আইসিসি স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ম্যাচ রেফারি ঠিক করা পুরোপুরি আইসিসি-র দায়িত্ব। কোনও দেশের চাপের কাছে নতিস্বীকার করা হবে না।
শুধু ম্যাচ পরিচালকের পাশেই দাঁড়ায়নি আইসিসি। তারা তদন্ত করার পরেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, পাইক্রফ্ট কোনও দোষ করেননি। পিসিবিকে ইমেল করে জানিয়েও দেওয়া হয়, তাঁকে বদলে দেওয়ার কোনও কারণ নেই। পিসিবি প্রস্তাব দেয় অন্তত বুধবারের ম্যাচে পাইক্রফ্টের জায়গায় আর এক ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসনকে দেওয়ার। সেই প্রস্তাবও খারিজ হয়ে যায়। এই আবহে আবার মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান। তবে সেই ম্যাচে আর হাত মেলাতে দেখা যাবে না দু’দলের ক্রিকেটারদের।